প্রকাশ্যেই দোকান খুলে বিক্রি হচ্ছে মাদক। রাত নামলে দুষ্কৃতী ও মাদকাসক্তদের তাণ্ডবে অতিষ্ঠ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। দাবি মতো টাকা না দিলেই চলছে মারধর, ভাঙচুর। আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় অভিযুক্তেরা প্রকাশ্যেই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ। হাওড়ার শালিমার স্টেশন চত্বর ঘিরে এমনই অভিযোগ উঠছে।
শালিমার স্টেশনের ৫ নম্বর গেটে পার্কিং থেকে বেপরোয়া তোলাবাজি, গোলমাল নিয়ে খবরে তোলপাড় হয়েছে গোটা এলাকা। রেলের আরপিএফ বা হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তারা দফায় দফায় বৈঠক করে পুলিশি নজরদারি বাড়ানোর ঘোষণা করলেও কাজ হয়নি। কারণ, ৫ নম্বর গেটের উল্টো দিকে, শালিমারের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় এ বার শুরু হয়েছে দুষ্কৃতীদের এই তাণ্ডব। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, রাতে ওই এলাকা দিয়ে লোক চলাচল করা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আতঙ্কিত দোকানিরা তাড়াতাড়ি দোকান বন্ধ করে দিচ্ছেন। সম্প্রতি কয়েকটি চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটেছে বলে অভিযোগ।
এলাকার এক দোকানদার বলেন, ‘‘৩১ জানুয়ারি আমার দোকানে ১৫-২০ জন ছেলে এসে বাবাকে মারধর করে। ভয় দেখিয়ে যায়, দোকান না বন্ধ করলে ফল ভাল হবে না। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অভিযুক্তেরা কেউ গ্রেফতার হয়নি। উল্টে তারা শাসাচ্ছে।’’ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, স্থানীয় একটি স্কুলের সামনে থেকে স্টেশনের ২ নম্বর গেট পর্যন্ত প্রায় আধ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে নানা অসামাজিক কাজকর্ম চলছে। প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি হলেও পুলিশ কেন কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না, সেই প্রশ্নও উঠছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দিনেদুপুরে স্টেশনের ২ নম্বর গেটের সামনে বিক্রি হয় গাঁজা, মদ। এলাকার একটি পেট্রোল পাম্পের পাশের দোকানে মিলছে নেশা করার ট্যাবলেটও। স্থানীয় কয়েকজন দুষ্কৃতীর পাশাপাশি চুনাভাটি, বকুলতলা এলাকা থেকে আসা দুষ্কৃতীরাও সন্ধ্যা হলেই এলাকায় জড়ো হচ্ছে। তারাই ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের উত্ত্যক্ত করছে বলে অভিযোগ।এলাকার এক বাসিন্দা বসুন্ধরা রাও বলেন, ‘‘১৫-২০ জন দুষ্কৃতী এলাকা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। পুলিশকে বার বার বলেও সুরাহা হয়নি। এ বার আমাদের বাড়িঘর বিক্রি করে চলে যেতে হবে।’’
হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তার যদিও দাবি, ‘‘২ নম্বর গেট এলাকার অধিকাংশই রেলের জায়গা। সেখানে প্রচুর দখলদার আছে। সেখানে কী হচ্ছে, বলতে পারব না। তবে আমাদের এলাকায় একটি ঘটনার অভিযোগ এসেছিল, তা তদন্ত করে দেখা হয়েছে। ঘটনার পরেই অভিযুক্তেরা পালিয়ে যাওয়ায় তাদের ধরা যায়নি।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)