প্রতীকী ছবি
বেহালার সরশুনার একটি বেসরকারি হোমে পাঁচ নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে সেখানকারই এক কর্মীর বিরুদ্ধে। সপ্তাহ দুয়েক আগের ওই ঘটনায় নির্যাতিতাদের অভিভাবকদের অভিযোগ, হোম কর্তৃপক্ষ সব কিছু জেনেও ব্যবস্থা নেননি। তখন বাধ্য হয়েই তাঁরা সরশুনা থানায় যান। সেখানে পুলিশ অভিযোগ না নিয়ে বিষয়টি আপসে মিটিয়ে নিতে পরামর্শ দেয় বলে অভিযোগ। যদিও পুলিশ অভিযোগ মানতে চায়নি। ওই ঘটনার পর থেকেই পাঁচ নাবালিকা আতঙ্কে হোমে ফেরেনি।
সরশুনার সরকারহাটের ওই হোমের কর্মী হরিপদ বিশ্বাস মেয়েদের তাঁত বোনা শেখাত। অভিযোগ, গত ১৭ তারিখ বিকেলে হোমের পাঁচটি মেয়ে হরিপদর কাছে তাঁতের কাজ শিখতে গেলে সে তাদের হেনস্থা করে। সে দিনই ওই মেয়েদের অভিভাবকেরা হোমে এসে ঘটনাটির কথা জানতে পারেন।
ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দা এক মহিলার স্বামী মারা গিয়েছেন আগেই। তাঁর শিশুকন্যা গত পাঁচ বছর ধরে ওই হোমের আবাসিক। মহিলার অভিযোগ, ‘‘১৭ নভেম্বর বিকেলে মেয়ের কাছে জানতে পারি, হরিপদ ওর শরীরের একাধিক জায়গায় হাত দিয়েছে। কাঁদতে কাঁদতে মেয়ে পুরো ঘটনাটি বলতেই আমি হরিপদকে খুঁজে বার করে মারধর করি। কিন্তু হোম কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে আমল দেননি।’’ মহিলার আরও অভিযোগ, ‘‘এর পরে সরশুনা থানায় গেলে পুলিশ আমাদের জানায়, অভিযোগ করলে মেয়েকে চার মাস অন্য হোমে রাখতে হবে। পুলিশ এমন ভাবে আমাদের বোঝায়, যেন অভিযোগ করলে আমাদেরই বেশি সমস্যা। সেই কারণে বাধ্য হয়েই মুচলেকা দিয়ে আমরা মেয়েদের হোম থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসি।’’ হোমেরই এক মহিলা কর্মীর অভিযোগ, ‘‘ওই দিন আমার মেয়েকেও হেনস্থা করা হয়। আমি ঘটনার প্রতিবাদ করায় আমাকেই হোম থেকে বরখাস্ত করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে।’’
অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই বুধবার সরশুনার ওই হোম পরিদর্শনে যান রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘জুভেনাইল জাস্টিস আইন অনুযায়ী হোমে পুরুষ কর্মী রাখা বেআইনি। ওই হোম নিয়মভঙ্গ করেছে। হোমের তরফে ঘটনাটি চেপে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।’’ পাশাপাশি অনন্যাদেবীর অভিযোগ, ‘‘পুলিশও তার দায়িত্ব পালন করেনি। পুরো ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।’’
হোমের সাধারণ সম্পাদক পূর্ণা চৌধুরী বলেন, ‘‘হরিপদ মাস চারেক আগে কাজে যোগ দিয়েছিল। ঘটনার পরেই তাকে বরখাস্ত করা হয়। মেয়েদের মায়েরাই চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, তাঁদের কোনও অভিযোগ নেই। হোমকে কালিমালিপ্ত করার অপচেষ্টা চলছে।’’
এ বিষয়ে লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। ঘটনার দিনই জনা পাঁচেক অভিভাবক চিঠি লিখে থানায় জানিয়েছিলেন, হোমের বিরুদ্ধে তাঁদের কোনও অভিযোগ নেই।’’ ওই পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘অভিযুক্ত যুবককে প্রথমে আটক করা হয়েছিল। কিন্তু কোনও অভিযোগ না হওয়ায় পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy