ছবি : সংগৃহীত
ইতিমধ্যেই বাজারে দেদার বিক্রি হওয়া বিভিন্ন সংস্থার অক্সিমিটারের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, এরই মধ্যে সুযোগ বুঝে বাজারে এসে গিয়েছে বেশ কিছু অক্সিমিটার অ্যাপ্লিকেশন, যার অধিকাংশই ভুয়ো। যা নিয়ে আপাতত জেরবার কলকাতা পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত এক মাসে সাইবার শাখায় জমা পড়া একাধিক অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা মাপা হচ্ছে ভেবে সেই সব অ্যাপে আঙুল ছুঁইয়ে কেউ খুইয়েছেন ব্যাঙ্ক থেকে টাকা। কারও আবার ব্যক্তিগত ছবি, নথি, বেহাত হয়েছে বলে অভিযোগ।
আলিপুর রোডের এক বাসিন্দার দাবি, অক্সিমিটার যন্ত্রের খোঁজ করতে গিয়ে জানতে পারেন, মোবাইল অ্যাপেই অক্সিজেন মাপা যায়। দেবাংশু ঘোষ নামে ওই ব্যক্তি বুধবার বলেন, “ওই অ্যাপ নামিয়ে ব্যবহার শুরু করতেই কল-লগ, ছবির ফোল্ডার-সহ বেশ কিছু জিনিস ব্যবহারের অনুমতি চাওয়া হয়। মনে হয়েছিল, এটা রুটিন। এর পরে অ্যাপের নির্দেশ মতো ফোনের সেটিং বদল করে ক্যামেরায় আঙুল ছোঁয়াতেই ফোন বন্ধ হয়ে যায়। সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে ফোন খোলানোর পরে মেসেজ পেলাম, আমার অ্যাকাউন্ট থেকে ৬০ হাজার টাকা তোলা হয়েছে!”
আরও পড়ুন: এলাকায় সেফ হোম নয়, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
পুলিশে দায়ের করা অভিযোগে এক তরুণীর দাবি, এই রকম অ্যাপ ব্যবহার করে তাঁর ব্যক্তিগত ছবি বেহাত হয়েছে। ওই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে তাঁকে। এক স্কুলশিক্ষিকার আবার অভিযোগ, তাঁর স্বামী সেক্টর ফাইভের বেসরকারি সংস্থার কর্মী। সংস্থার কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি স্বামীর মোবাইলে ছিল। অক্সিমিটার অ্যাপ ব্যবহার করতে গিয়ে সে সব তথ্য বেরিয়ে গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, মোবাইল অ্যাপ স্টোরে চোখ রাখলেই এখন অসংখ্য অক্সিমিটার অ্যাপ দেখা যাচ্ছে। সেগুলির অধিকাংশই তৈরি হয়েছে গত তিন মাসে। যাদের বেশির ভাগই বলছে, অ্যাপ নামানোর পরে ক্যামেরায় বুড়ো আঙুল ছোঁয়ালেই জানা যাবে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কত। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার বলছেন, “বাজারে বিক্রি হওয়া অক্সিমিটার যন্ত্র নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। তবে এই অ্যাপ নিয়ে আমার ধারণা নেই। বুড়ো আঙুল এবং তর্জনীতে রক্ত সঞ্চালন হয় রেডিয়াল আর্টারি দিয়ে। অনামিকা এবং মধ্যমার পাশের আঙুলে রক্ত যায় আলনা আর্টারির মাধ্যমে। কিন্তু মধ্যমায় রক্ত সঞ্চালিত হয় ওই দুই আর্টারির মাধ্যমেই। অক্সিমিটারের ক্ষেত্রে তাই মধ্যমা ব্যবহার করা উচিত।”
মোবাইল অ্যাপে বুড়ো আঙুল ব্যবহার করতে বলছে কেন? ইন্ডিয়ান স্কুল অব অ্যান্টি হ্যাকিংয়ের অধিকর্তা সন্দীপ সেনগুপ্ত বলছেন, “গোটাটাই তো ভুয়ো। ভুয়ো অ্যাপ বলেই বুড়ো আঙুল চাওয়া হচ্ছে। মোবাইল লক করার ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীরা বুড়ো আঙুলই বেশি ব্যবহার করেন। ফলে অক্সিজেন মাপানোর অছিলায় ওই আঙুলের ছবি ক্যামেরায় তুলিয়ে নিলেই কাজ সহজ হয়ে যাবে।”
লালবাজারের সাইবার শাখার এক আধিকারিক বলছেন, “এই অ্যাপ প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে ব্যবহারকারীরা মোবাইল লক করার ক্ষেত্রে আঙুল ছোঁয়ানোর বদলে পিন নম্বর ব্যবহার করুন। যে যন্ত্রের যা কাজ, সেটা দিয়ে ততটুকুই করুন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy