আলিপুর আদালত।—ফাইল চিত্র।
স্ত্রীকে গুলি করে খুনে অভিযুক্ত স্বামীকে দোষী সাব্যস্ত করল আলিপুরের ফাস্ট ট্র্যাক আদালত। বৃহস্পতিবার তরুণ সাঁতরা নামে ওই ব্যক্তিকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক অসীমা পাল। আজ, শুক্রবার তার সাজা ঘোষণা করবেন বিচারক।
আদালত সূত্রের খবর, ২০১২ সালের নভেম্বরে বজবজ থানা এলাকার বাসিন্দা রেবা সাঁতরা নামে এক গৃহবধূ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওই গৃহবধূর দেহ শ্মশান থেকে উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠায় পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, তরুণ নানা অসামাজিক কাজে লিপ্ত ছিল। ঘটনার রাতে বাড়ির বাইরে যাচ্ছিল সে। তাঁকে যেতে নিষেধ করেছিলেন স্ত্রী রেবা। তখনই স্ত্রীকে ‘পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ’ থেকে গুলি করে বসে তরুণ। গুলি রেবার পেট এফোঁড়-ওফোঁড় করে বেরিয়ে যায়। গুরুতর জখম স্ত্রীকে তরুণ স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
এর পরে কয়েক জন সঙ্গীকে নিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে মহেশতলার আক্রার এক শ্মশানে সৎকারের জন্য দেহ নিয়ে যায় সে। বজবজ থানার পুলিশের কাছে সে খবর পৌঁছয়। পুলিশ শ্মশান থেকে রেবার দেহ উদ্ধার করে। কিন্তু ফেরার হয়ে যায় তরুণ। ঘটনার কয়েক দিন পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। রেবার পরিবারের তরফে তরুণ ও তার বাবা অজিত সাঁতরা এবং মা পূর্ণিমা সাঁতরার বিরুদ্ধে খুন ও বধূ নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রেবার মৃত্যুর ঘটনা বিপথে চালিত করার চেষ্টা করেছিলেন অজিত। পথ দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে পুত্রবধূ জখম হয়েছেন বলে পরদিন সকালে রেবার পরিজনদের জানিয়েছিলেন তিনি। রেবার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে অজিত ও পূর্ণিমাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরে গ্রেফতার হয় তরুণও। স্ত্রীকে খুন করার পরে নিজের পিস্তলটি বাড়ির পাশে একটি মুরগির খামারে লুকিয়ে রেখেছিল সে। গ্রেফতার হওয়ার পরে তরুণকে নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে পিস্তলটি উদ্ধার করে পুলিশ। এমনকি, তরুণের ঘর থেকে গুলির খোলও উদ্ধার করা হয়েছিল।
মামলার সরকারি আইনজীবী অলোক দত্তচৌধুরী বলেন, ‘‘বিচার প্রক্রিয়ায় ২২ সাক্ষীর বয়ান লিপিবদ্ধ হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জন অস্ত্র বিশারদও রয়েছেন। মুরগির খামার থেকে উদ্ধার হওয়া গুলিটি ওই পিস্তল থেকেই চালানো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন ওই ব্যক্তি।’’ আদালত সূত্রের খবর, মামলায় তরুণ ও তার বাবা-মা পরে জামিন পেয়ে যান। বৃহস্পতিবার মামলার শুনানিতে ছেলের সঙ্গে তাঁরাও হাজির ছিলেন। সাক্ষ্য প্রমাণের অভাবে খুনের মামলা থেকে অজিত ও পূর্ণিমাকে বেকসুর খালাস করেছেন বিচারক। তরুণকে হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। আদালত কক্ষের বাইরে আসার পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy