অক্ষয় তৃতীয়ার আগে চলছে দোকান সাফসুতরো করার কাজ। সোমবার, গিরিশ পার্কে। নিজস্ব চিত্র
অনেকটাই কেটেছে কোভিডের আতঙ্ক। তাই এ বার অক্ষয় তৃতীয়ায় পুজো থেকে শুরু করে ক্রেতাদের মিষ্টিমুখ করানো, কর্মীদের খাওয়ানোয় কোনও খামতি রাখবেন না বলে ভেবেছিলেন অনেক ব্যবসায়ীই। কিন্তু কিছুটা হলেও বাদ সেধেছে মূল্যবৃদ্ধি। তবে যাঁরা আজ, মঙ্গলবার গুপ্ত প্রেস পঞ্জিকা অনুযায়ী অক্ষয় তৃতীয়ায় হালখাতার পুজো করছেন, তাঁরা জানালেন মূল্যবৃদ্ধির মধ্যেও গত দু’বছরের তুলনায় এ বার পরিস্থিতি কিছুটা হলেও ভাল। অনেকেই সোমবার কুমোরটুলি গিয়ে লক্ষ্মী-গণেশের মূর্তি কিনলেন। জানালেন, মঙ্গলবার খুব ভোরে পুজো দিতে যাবেন কালীঘাট বা দক্ষিণেশ্বরে। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুযায়ী অবশ্য অক্ষয় তৃতীয়া পড়েছে বুধবার।
হাওড়ার সালকিয়ার একটি মিষ্টির দোকানের মালিক সৌভিক ঘোষ সোমবার কুমোরটুলিতে মূর্তি কেনার ফাঁকে জানালেন, করোনার জন্য গত দু’বছরে কুমোরটুলিতে আসতেই পারেননি। পুজোও হয়েছে নমো-নমো করে। এ বার অনেকটাই আগের পরিস্থিতি ফিরে এসেছে। সৌভিকবাবু জানান, হিসাব রাখার জন্য কম্পিউটার এলেও তাঁরা হালখাতা ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। তিনি বলেন, ‘‘নববর্ষে নয়, আমরা প্রতি বারই হালখাতা পুজো করি অক্ষয় তৃতীয়ায়। দোকানে কিছু নতুন মিষ্টি রাখা হয়। ক্রেতাদের মিষ্টির প্যাকেট দেওয়া হয়। তবে এ বার জিনিসপত্রের যা দাম বেড়েছে, তাতে পুজো থেকে শুরু করে ক্রেতাদের খাওয়ানো— সব দিকেই বাজেট বেশ আঁটোসাঁটো রাখতে হয়েছে।’’
ডোমজুড়ের দীপমালা ঘোষ এসেছিলেন কুমোরটুলিতে মূর্তি কিনতে। ডোমজুড়ে তাঁর রাসায়নিকের কারখানা রয়েছে। দীপমালা জানান, কর্মীদের পাত পেড়ে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে জিনিসের দাম বেড়েছে, তাতে অনুষ্ঠানে কাটছাঁট করতে হয়েছে। গত বছর এই সময়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছিল। রাজ্যেই কত মানুষ মারা যাচ্ছিলেন। তাই দক্ষিণেশ্বরে গিয়ে পুজো দেওয়ার কথা ভাবতেই পারিনি। এ বার সকাল সকাল যাব।’’
ব্রেবোর্ন রোডে রাবার স্ট্যাম্প, নেমপ্লেটের দোকান রয়েছে সৌপর্ণা নাগচৌধুরীর। তিনি জানালেন, ২০২০ সালে লকডাউনের জন্য অক্ষয় তৃতীয়ার পুজোই করতে পারেননি। ২০২১ সালে নমো-নমো করে পুজো করেন। এ বার মূল্যবৃদ্ধির জন্য বাজেট কমেছে। তবে পুজো করতে পারছেন, এটা ভেবেই ভাল লাগছে। তিনি বলেন, ‘‘শুধু তো আলু, পেঁয়াজ, তেল, ডালই নয়, ফুলের দামও চড়া। তবে দোকানের কর্মীদের এ বার খাওয়ানোর ব্যবস্থা করছি। গত দু’বছর সেটা করতে পারিনি।’’
কলেজ স্ট্রিট বইপাড়ায় প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত কেউ কেউ যেমন অক্ষয় তৃতীয়া পালন করবেন, আবার কারও কাছে আজ খুশির ইদের দিনও। বইপাড়ার কয়েক জনের মতে, মঙ্গলবার সম্প্রীতির বার্তাও দেবে বইপাড়া। বেশির ভাগ প্রকাশক নববর্ষে করলেও কিছু প্রকাশক অক্ষয় তৃতীয়ার দিনও হালখাতা করেন। আনন্দ মণ্ডল নামে এক প্রকাশক বললেন, ‘‘পুজোর দুপুরে খাওয়াদাওয়া, লেখকদের সঙ্গে বিকেলের আড্ডা— সবই ফিরছে। লেখকদের আমন্ত্রণ জানানোও হয়ে গিয়েছে। পুজো হবে দোকানেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy