দাউদাউ: জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে জেসিবি মেশিন। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
লরির ধাক্কায় এক গাড়িচালকের মৃত্যু ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠল বজবজ থানার জামালপুরের ভাসা মনসাতলা এলাকা। বৃহস্পতিবার বিকেলের ঘটনা। উত্তেজিত জনতা দু’টি জেসিবি মেশিন, একটি ডাম্পার এবং কয়েকটি ছোট মালবাহী গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। বেশ কিছু ক্ষণ পথ অবরোধ হয়। অবরোধ তুলতে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের রোষের মুখে পড়ে পুলিশও। শেষে বিশাল পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত চালকের নাম মহম্মদ রফিক (৪২)। তাঁর বাড়ি বজবজের কালীপুর এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে ওই এলাকায় মাটি ফেলে জমি ভরাট করার কাজ চলছে। তার জন্য প্রায়ই যাতায়াত করছে ডাম্পার ও ভারী গাড়ি। রফিকের বাড়ির লোকের অভিযোগ, তিনি গত কয়েক মাস ধরে বেতন পাচ্ছিলেন না। এ দিন মালিককে ফোন করে বেতনের টাকা চান তিনি। মালিক রফিককে আশ্বাস দেন, কাজে যোগ দেওয়ার পরে তিনি বকেয়া বেতনের কিছুটা মিটিয়ে দেবেন।
আত্মীয়দের অভিযোগ, মালিকের প্রতিশ্রুতি মতো এ দিন দুপুরে কাজে গিয়েছিলেন রফিক। বিকেলে খবর আসে, তিনি দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিজনেরা দেখেন, রফিকের মাথার উপর দিয়ে লরির চাকা চলে গিয়েছে। তাঁরা স্থানীয় মানুষজনকে পুরো ঘটনাটি জানান। এর পরেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে জনতা। রফিকের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর বাড়ির এলাকা থেকেও বহু লোক চলে আসেন। রফিকের মালিকের অফিস ভাঙচুরের পাশাপাশি পথ অবরোধ করা হয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় কয়েকটি লরি, ডাম্পার এবং জেসিবি মেশিনে। তবে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই ঘটনায় রফিকের বাড়ির লোক তাঁকে খুনের অভিযোগ তুলেছেন। এ দিন গোলমালের খবর পেয়ে বজবজ থানার পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। কিন্তু জনতার রোষ তাতে কমেনি। তারা পুলিশের দিকে পাল্টা ধেয়ে আসে। সংখ্যায় কম থাকায় প্রথমে পিছু হটে পুলিশ। পরে আশপাশের থানা থেকে বিশাল বাহিনী পৌঁছে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। ইতিমধ্যে দমকলের তিনটি ইঞ্জিন পৌঁছলে ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা সেগুলি আটকে প্রতিবাদ শুরু করেন। কোনও রকমে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। তার পরে ডাম্পার ও অন্য গাড়ির আগুন নেভায় দমকল।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই এলাকায় বেআইনি ভাবে মাটি ফেলে নিচু জমি ভরাট করা হচ্ছে। দিন-রাত মাটি বোঝাই লরি ও ডাম্পার চলাচল করে। ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। অথচ পুলিশ নির্বিকার। যদিও বজবজ থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, রফিকের মৃত্যু খুন না দুর্ঘটনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার আধিকারিকেরা জানান, ওই এলাকায় কী ভাবে মাটি ফেলে জমি ভরাট করা হচ্ছে তা তদন্ত করে দেখা হবে। এই কাজের পিছনে শাসক দলের এক স্থানীয় নেতার নাম উঠে এসেছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই নেতার মদতেই কয়েক জন জমি ব্যবসায়ী অবৈধ ভাবে মাটি ফেলে নিচু জমি ভরাট করছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার আধিকারিকেরা জানান, সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy