নিরাপদ স্থানে সরে যাচ্ছেন স্থানীয়রা। নিজস্ব চিত্র।
ফের ফাটল আতঙ্ক বৌবাজারে। দুর্গা পিতুরি লেনের পাশের গলি মদন দত্ত লেনের একাধিক বাড়িতে ভোরবেলায় দেখা দিল ফাটল। আতঙ্কে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে। এলাকা খালি করে দিতে আবেদন জানাচ্ছেন উপস্থিত পুলিশকর্মীরা।
শুক্রবার ভোরবেলায় মদন দত্ত লেনের বেশ কয়েকটি বাড়িতে বড় বড় ফাটল দেখা দেয় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন বাসিন্দারা। তারপরই তাঁরা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এলাকায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ঘটনাস্থলে মেট্রো আধিকারিকরা এসে পৌঁছন। তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। তাঁদের এলাকায় ঢুকতে বাধাও দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে মোতায়ান করা রয়েছে পুলিশবাহিনী।
কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে মেট্রো কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, ‘‘ভোররাতে ফাটল ধরলেও মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কারও দেখা পাওয়া যায়নি ঘটনাস্থলে। পরে যাঁরা এসেছেন তাঁরাও বিশেষজ্ঞ নন, আধিকারিক।”
কেএমআরসিএলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সি এন ঝা আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, “শিয়ালদহের দিকে মেট্রোর লাইনে ক্রস প্যাসেজে কাজ চলাকালীন রাত ৩টে নাগাদ সেখান থেকে জল বার হতে দেখেনে কর্মীরা। ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন কেএমআরসিলের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। এখনও পর্যন্ত মোট ৫-৬টি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়নের পর সঠিক সংখ্যাটা জানা যাবে।”
গত ১১ মে বুধবার মেট্রোর কাজ চলাকালীন বৌবাজারে দুর্গা পিতুরি লেনের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ফাটল দেখা গিয়েছিল। সেই সময়ও আতঙ্কে ঘর ছেড়েছিলেন অনেক পরিবার।
২০১৯ সালে ৩১ অগস্ট রাতে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ খুঁড়তে গিয়ে বৌবাজারের দুর্গা পিতুরি লেন এবং সেকরাপাড়া লেনের একাধিক বাড়ি ভেঙে পড়েছিল। বিপজ্জনকভাবে ভেঙেচুরে যায় আরও একাধিক বাড়ি। ঘরছাড়া হন এলাকার বাসিন্দারা। কেউ পেয়েছেন ক্ষতিপূরণ কেউ বা এখনও রয়েছেন মেট্রোর ঠিক করে দেওয়া ভাড়াবাড়িতে। যাঁদের দোকানঘর ও গুদাম ভাঙা পড়েছিল, তাঁদেরও বিকল্প জায়গা করে দিয়েছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
২০১৯-এর অভিশপ্ত রাত, তার পর ২০২২-এর ১১ মে এবং ১৪ অক্টোবর। বৌবজারের বাসিন্দাদের দিন কাটছে আতঙ্কেই। সমাধান কোন পথে, জানা নেই কারওরই।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলছিলেন, “তিন পুরুষ ধরে এখানে থাকি। হঠাৎ রাতারাতি সরে যেতে বলা হলে আমরা কী করব? বিপদ মাথায় করেই বা এখানে থাকব কী করে?" আর এক বাসিন্দা বললেন, "ওরা যা-ই বলুক, আমি আমার বাড়ি ছাড়ব না। দুর্গা পিতুরি লেনে যারা বাড়ি ছেড়েছিল, তাদের কী হয়েছে? সব জানা আছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy