নতুন টালা সেতু। ফাইল চিত্র।
আড়াই বছরেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পরে গত বৃহস্পতিবার নবনির্মিত টালা সেতুর উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে এই পরিপ্রেক্ষিতেই প্রশ্ন উঠছে, সংস্কার করে অথবা ভেঙে ফেলে নতুন করে তৈরির তালিকায় থাকা শহরের বাকি সেতু এবং উড়ালপুলগুলির কী হবে? টালা সেতুর পরে কোন উড়ালপুল বা সেতুর কাজে হাত দেওয়া হবে, কত দিনে সেই কাজ শেষ হবে— এই বিষয়গুলি নিয়ে শহরবাসীর মধ্যে আগ্রহ রয়েছে যথেষ্ট। কারণ প্রশাসন সূত্রেই খবর, তালিকায় থাকা সেতুগুলির কোনওটি নিজের ভারবহন ক্ষমতার চেয়ে বেশি ভার নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে, কোনওটির খালের মধ্যে থাকা স্তম্ভে ক্ষয় ধরেছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, টালা সেতুর উদ্বোধন হয়ে গেলেও এর কাজ পুরোপুরি শেষ হতে আরও কয়েক মাস লাগতে পারে। এর পরে হাত দেওয়া হতে পারে চিৎপুর সেতু সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলে নির্মাণের কাজে। তালিকায় দু’নম্বরে রয়েছে আর জি কর হাসপাতালের সামনে বেলগাছিয়া সেতু। ওই সেতুটি রেলের অধীনে থাকলেও বর্তমানে সেটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। আর জি কর সেতুও সম্পূর্ণ ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করার কথা। এ নিয়ে ইতিমধ্যে দরপত্রও ডাকা হয়ে গিয়েছে বলে খবর। দেড় বছরের মধ্যে সেতুর কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
২০১৮ সালে মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পরে শহরের সমস্ত সেতু এবং উড়ালপুলগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার। তাতেই ধরা পড়ে, শহরের সব উড়ালপুল এবং সেতুরই সংস্কার প্রয়োজন। ঠিক হয়, কেএমডিএ-র নিজস্ব সেতু এবং উড়ালপুল ছাড়া শহরের মধ্যে থাকা সেচ দফতরের তৈরি সেতুগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করবে কেএমডিএ। অন্য দিকে, পূর্ত দফতরের নিজস্ব উড়ালপুল বা সেতু ছাড়া শহরের বাইরে সেচ দফতরের সেতুগুলি দেখাশোনার ভার থাকবে পূর্ত দফতরের উপরে।
সংস্কারের সেই তালিকাতেই রয়েছে শিয়ালদহ উড়ালপুল এবং অরবিন্দ সেতু। উল্টোডাঙা মেন রোডের উপরে অরবিন্দ সেতুর বেয়ারিং পাল্টানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। শিয়ালদহ উড়ালপুলের ক্ষেত্রে সেটির ক্ষত সংস্কারের পাশাপাশি ভার বহন ক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়ে বিশেষ কাজ হওয়ার কথা। দক্ষিণ কলকাতায় তেমনই কাজ হওয়ার কথা জীবনানন্দ সেতুতে। যাদবপুর থানা থেকে ইএম বাইপাসের দিকে যাওয়ার জন্য ওই সেতুটিই অন্যতম ভরসা। এমনই আর একটি সেতু হল বিজন সেতু। এই সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়ে গেলেও কবে কাজ শুরু করা যাবে, সে বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকারি সেতু বিশেষজ্ঞ কমিটির এক সদস্যের কথায়, ‘‘চেতলা লকগেটের কাজ চলছে। সম্ভবত জানুয়ারির মধ্যে তা শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু ঢাকুরিয়া সেতুর অ্যাপ্রোচ রোডেরও কাজ হওয়ার কথা। ওই কাজ শুরুই করা যাচ্ছে না।’’
কিন্তু কেন? পূর্ত দফতরের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘আপাতত সরকারি কোষাগারে টানাটানি রয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে এখনই কাজ সারতে হবে নিশ্চিত হলে তবেই এগোনোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy