Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Madhyamik

Madhyamik: হাসপাতালে ধাতস্থ হয়েই ফের পরীক্ষা কেন্দ্রে

পরীক্ষা চলাকালীন দু’দিন অসুস্থ হয়ে পড়েছিল মেয়েটি।

হাসপাতালে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে সুস্মিতাকে। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে সুস্মিতাকে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২২ ০৬:০৬
Share: Save:

পরীক্ষা চলাকালীন দু’দিন অসুস্থ হয়ে পড়েছিল মেয়েটি। এতটাই যে, তাকে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছিল। কিন্তু একটু সুস্থ হতেই হাসপাতাল থেকে সোজা পরীক্ষা কেন্দ্রে হাজির হয় ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সুস্মিতা মণ্ডল। ফিরে এসে পুরো পরীক্ষা দিয়েছে সে। তার এই শারীরিক সমস্যার কথা মাথায় রেখে স্থানীয় থানা থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, স্কুলের দোরগোড়ায় তার জন্য রাখা থাকবে পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্স।

বার বার অসুস্থ হয়েও বছর সতেরোর সুস্মিতা যে ভাবে মনের জোরে পরীক্ষা দিচ্ছে, তাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন পুলিশকর্মী থেকে স্কুলের শিক্ষক— সকলেই। বোনের মনের জোর দেখে অবাক সুস্মিতার দিদি বিশাখাও।

নিউ টাউনের হাটগাছা হরিদাস বিদ্যাপীঠের ছাত্রী সুস্মিতার মাধ্যমিক পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছে কলকাতার লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকার বামনঘাটা হাইস্কুলে। ওই থানার ওসি প্রশান্ত ভৌমিক জানান, এ দিন পরীক্ষা শুরুর কিছু পরেই বামনঘাটা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তাঁকে ফোন করে জানান, তাঁদের এক পরীক্ষার্থী ইতিহাস পরীক্ষা দিতে দিতে সংজ্ঞাহীন হয়ে গিয়েছে। কলকাতা পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে দ্রুত স্কুলে হাজির হন ওসি। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলে পৌঁছে দেখি, সুস্মিতা নামের সেই ছাত্রীই আট মার্চের ইংরেজি পরীক্ষাতেও অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। দ্রুত তাকে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। স্যালাইন শুরু হওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যে ধাতস্থ হতেই সুস্মিতা জানায়, সে পরীক্ষা দেবে। আমাদের অনুরোধ করে ওকে স্কুলে নিয়ে যেতে। ফের অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে ওকে স্কুলে পৌঁছে দিই। বাকি পরীক্ষা স্কুলে বসেই দেয়।’’

সুস্মিতার দিদি বিশাখা বলেন, ‘‘বোন পরীক্ষার সপ্তাহ দুয়েক আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরোতে থাকে। খিঁচুনি উঠে অজ্ঞান হয়ে যায়। ওকে আর জি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।’’ সুস্মিতা আদৌ পরীক্ষা দিতে পারবে কি না, সেটাই তখন অনিশ্চিত বলে ভেবেছিলেন তাঁরা। কারণ ডাক্তারেরাও অতিরিক্ত চাপ নিতে নিষেধ করেন সুস্মিতাকে। কিন্তু তার সেই এক জেদ। পরীক্ষা দেবেই। ওই জেদ থেকেই পরীক্ষায় বসেছে মেয়েটি। তবে দু’টি পরীক্ষায় সে অসুস্থ হয়ে পড়ায় স্থানীয় লেদার কমপ্লেক্স থানা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বাকি পরীক্ষার দিনগুলিতে স্কুলের সামনেই পুলিশের অ্যাম্বুল্যান্স রাখা থাকবে। সুস্মিতা ফের অসুস্থ হলে যাতে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যায়। প্রশান্তবাবু বলেন, ‘‘মেয়েটি প্রায় পর পর দু’দিন অসুস্থ হল। স্যালাইন দিয়ে যে ভাবে স্কুলে ফিরে পরীক্ষা দিচ্ছে, তাতে ওর মনের জোরকে কুর্নিশ না জানিয়ে পারছি না।’’

এ সব কিছু অবশ্য মাথায় নিতে চাইছে না সুস্মিতা। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা সে দেবেই, ফোনে এমনই জানাল ওই পরীক্ষার্থী। তার কথায়, ‘‘অসুস্থ হয়ে পড়ার পরেও মনে হয়েছে, পরীক্ষাটা দিতেই হবে। তাই হাসপাতাল থেকে স্কুলে ফিরে এলাম।’’ তবে ইতিহাস পরীক্ষা তেমন ভাল হয়নি, জানাচ্ছে সে। সুস্মিতা বলে, ‘‘করোনায় ভাল ভাবে পড়াশোনা হয়নি। সে ভাবে অনলাইন ক্লাস করতে পারিনি। ফলে ভাল প্রস্তুতি নেই, তার মধ্যে অসুস্থও হচ্ছি। তবু সব ক’টা পরীক্ষা শেষ করতেই হবে। না হলে এক বছর পিছিয়ে পড়ব যে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy