—প্রতীকী ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে শহর সুস্পষ্ট হকার নীতি তৈরিতে পদক্ষেপ করেছে কলকাতা পুরসভা। তার পরেই কলকাতা শহরের খালপাড়ের দখলদারদের নিয়ে পদক্ষেপ করতে চায় তারা। পুরসভা সূত্রে খবর, সম্প্রতি এই সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নিকাশি বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ। সেই বৈঠকে শহরের খালগুলি পরিষ্কার করার বিষয়ে আলোচনা হয়। সে ক্ষেত্রে কী কী সমস্যা তৈরি হচ্ছে, তা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয় ওই বৈঠকে। এ ক্ষেত্রে আধিকারিকেরা তারককে জানিয়েছেন, খালপাড় জবরদখল হয়ে থাকায় খালের পলি পরিষ্কার করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। কারণ, খাল থেকে পলি তুলে তা রাখা হয় খালের পাড়ে। কিন্তু বহু ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, খালের পাড়ে অবৈধ ভাবে ঝুপড়ি-সহ ঘরবাড়ি তৈরি করে থাকতে শুরু করে দিয়েছেন অনেকে। আবার অনেক জায়গায় খালপাড় জুড়ে বসে গিয়েছে অজস্র দোকানপাট। এমতাবস্থায় খালের সংস্কার করতে গেলে পুরসভাকে সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।
বৈঠকের পর ড্রোন উড়িয়ে কলকাতা পুরসভার এলাকার বেশ কিছু খালপাড় পরিদর্শন করেছেন মেয়র পরিষদ তারক ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডিজি শান্তনু ঘোষ। পুরসভা সূত্রের খবর, বৈঠক ও খালপাড় পরিদর্শনের পর এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নীতি তৈরি নিয়ে মত প্রকাশ করেন মেয়র পারিষদ ( নিকাশি)। কারণ, বর্ষায় জমা জল শহরের খালগুলি দিয়েই বেরিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু অতিরিক্ত পলি জমে থাকায় খালগুলি দিয়ে জল নিকাশিতে সময় লাগছে। ফলে বহু ক্ষেত্রে খাল থেকে উপচে পড়ে স্থানীয় এলাকায় নোংরা জল জমে থাকছে দীর্ঘ ক্ষণ। বেহালা, কসবা, গড়ফা, বেলেঘাটা-সহ কলকাতার একাধিক খালপাড়ের চিত্র এমনটাই। খালগুলির সংস্কার না হওয়ার ফলেই এই পরিস্থিতি বলে অভিযোগ। তাই হকার নীতির মতো এ বার খালপাড়ের দখলদারদের পুনর্বাসন নিয়ে একটি সুস্পষ্ট নীতি তৈরি করতে রাজ্যের কাছে আবেদন করবেন বলে স্থির করেছেন তারক।
কলকাতা পুরসভার নিকাশি বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘কলকাতা শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিমে থাকা খালপাড় দখল করে বাড়ি, ঝুপড়ি, এমনকি দোকানপাট পর্যন্ত তৈরি হয়ে গিয়েছে। এই কারণে অনেক জায়গাতেই আমরা খাল সংস্কারের কাজ করতে পারছি না। আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে রাজ্যের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে বলে ঠিক হয়েছে। দখলদার তুলে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে খালপাড় মুক্ত করতেই হবে। হকার নীতির মতো খালপাড়ের বাসিন্দাদের নিয়েও নীতি নির্ধারণ করলে কলকাতাবাসী ও প্রশাসন, উভয়েরই সুবিধা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘খালের পলি নিয়মিত তোলা দরকার। এ ক্ষেত্রে খালপাড়ে বসবাস শুরু হয়ে যাওয়ায় সেই কাজে বিস্তর সমস্যা হচ্ছে। পলি তোলা না হলে পাম্পিং স্টেশনের ক্ষমতাও বৃদ্ধি করা যাবে না।’’ প্রসঙ্গত, হকার নিয়ে কলকাতা পুরসভার নিয়মনীতি থাকলেও, খালপাড়ের জমি জবরদখল হয়ে যাওয়া তা উদ্ধার ও পুনর্বাসন নিয়ে কোনও সুস্পষ্ট নীতি নেই। তাই এ ক্ষেত্রে নীতি নির্ধারণ জরুরি বলেই মনে করছেন পুরসভার শীর্ষ আধিকারিকেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy