প্রতীকী ছবি।
নিখোঁজ স্ত্রীকে খুঁজতে কলকাতায় এসে সেই স্ত্রীর বিরুদ্ধেই প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করে ফিরতে হল এক ব্যক্তিকে। গত মঙ্গলবার বড়তলা থানায় অভিযোগ দায়ের করে তিনি বলেন, ‘‘ঘর সারাব বলে আমি আর আমার স্ত্রী ৮৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। সেই টাকা নিয়েই ও চলে এসেছে। এখন টাকা ফেরত চেয়ে বাড়িতে লোক আসছে। ও আর ফিরতে চায় না বলেছে। পুলিশও বলেছে, জোর করে ফেরানো যাবে না। পুলিশ অন্তত টাকাটা ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করুক।’’ পুলিশ জানিয়েছে, প্রাপ্তবয়স্ক কেউ চাইলে বাড়িতে না-ও ফিরতে পারেন। কিন্তু মহিলাকে টাকাটা ফিরিয়ে দিতে হবে। মহিলা তাতে রাজি হয়েছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরের দু’নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি অভিযোগকারী ও তাঁর স্ত্রীর। তাঁদের একমাত্র কন্যা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। অভিযোগকারীর দাবি, মে মাসে ভোটের ফল ঘোষণার পরের দিন কাজ থেকে ফিরে তিনি দেখেন, স্ত্রী বাড়িতে নেই। খোঁজাখুঁজির পরে শ্বশুরবাড়িতে যান তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘স্ত্রীকে ওর বাপের বাড়িতেও না পেয়ে থানায় যাই। ওকে খুঁজে পাওয়ার আশা এক রকম ছেড়েই দিয়েছিলাম। সোমবার এক যুবক পাড়ায় গিয়ে দেখা করে বলে, তোমার স্ত্রী কোথায় জানি। চলো নিয়ে যাচ্ছি।’’
অভিযোগকারীর দাবি, ওই যুবক তাঁকে শোভাবাজার এলাকার যৌনপল্লিতে নিয়ে যান। তিনি বলেন, ‘‘তখনও জানতাম না, ওটা যৌনপল্লি। ছেলেটি বাড়িটা দেখিয়ে দিয়ে বলল, স্ত্রীকে নিয়ে এসো। আমি রাস্তায় অপেক্ষা করছি। স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ওকে ফিরে যেতে বললাম। ও না করে দিল। উল্টে ওখানকার লোকজন আর মেয়েরা মারধর করল আমাকে।’’ মারের চোটে কাহিল ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে বড়তলা থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে সেখানেই রাত কাটান তিনি। পুলিশকে অভিযোগকারী জানিয়েছেন, রাস্তায় ওই যুবক নিজেকে অ্যাম্বুল্যান্স চালক বলে পরিচয় দিয়ে বলেছিলেন, তিনি নাকি মেদিনীপুরে এক রোগীকে ছেড়ে ফেরার পথে হাইওয়েতে ওই মহিলাকে দেখেছিলেন। নাম-ঠিকানা কিছু বলতে না পারায় ওই যুবক মহিলাকে কলকাতায় নিয়ে আসেন।
পুলিশ অভিযোগ পেয়ে ওই মহিলাকে যৌনপল্লি থেকে থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তিনি জানান, ঋণ নিয়ে সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছিল না। তাই টাকাগুলো নিয়ে কোথাও চলে যাবেন ভেবে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন তিনি। নিজেকে অ্যাম্বুল্যান্স চালক দাবি করা ওই যুবক কাজ দেওয়ার নাম করে তাঁকে যৌনপল্লিতে নিয়ে যান বলে অভিযোগ মহিলার। এক পুলিশকর্মী বলেন, ‘‘স্বামীর সঙ্গে ফিরে যেতে বললেই বলছেন, এলাকায় মুখ দেখাতে পারবেন না। স্বামীও নিয়ে গিয়ে মারধর করতে পারেন। বাড়ি না ফিরলেও মহিলা টাকা দিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন।’’ সূত্র মারফত পুলিশ এ-ও জেনেছে, যৌনপল্লিতে মহিলাকে তুলে দেওয়া বাবদ টাকা না পেয়েই ওই যুবক ফের মেদিনীপুরে গিয়ে তাঁর স্বামীকে বিষয়টি জানিয়ে দেন। পুলিশ ওই যুবকের খোঁজ শুরু করেছে।
মেদিনীপুর থেকে ফোনে অভিযোগকারী বললেন, ‘‘আমি রঙের দোকানে ছোটখাটো কাজ করি। স্ত্রী লোকের বাড়িতে কাজ করত। কোনও মতে মেয়েটাকে পড়াশোনা করাচ্ছিলাম। টাকাটা দ্রুত ফিরিয়ে দিতে না পারলে আমরা বাবা-মেয়ে এখানে থাকতে পারব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy