ধৃত জেরায় দাবি করেন, নিজের কেনা জায়গা ‘হাতছাড়া হওয়ার’ জন্যই কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
দুবাইয়ে গিয়ে কয়েক বছর কাজ করেছিলেন কসবাকাণ্ডে ধৃত আফরোজ় খান ওরফে গুলজ়ার! সেখানে রোজগার করা অর্থেই কলকাতার আনন্দপুরের গুলশন কলোনিতে গুদাম করবেন বলে ২০০০ বর্গফুটের জায়গা কিনেছিলেন তিনি। পুলিশি জেরায় এমনটাই দাবি করেন গুলজ়ার। তিনি জেরায় এ-ও দাবি করেন, সেই জায়গা ‘হাতছাড়া হওয়ার’ জন্যই তৃণমূল কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন। এই নিয়ে ধৃতকে আরও জেরা করতে চাইছে পুলিশ। তাঁকে ১৩ দিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
সুশান্তকে কেন খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন অভিযুক্ত গুলজ়ার, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। গ্রেফতারের পর পুলিশি জেরায় তিনি দাবি করেছেন, তাঁর ২০০০ বর্গফুটের ‘জায়গা’ দখল করে নিয়েছিলেন কাউন্সিলরের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত হায়দর নামে এক প্রোমোটার। এই নিয়ে সুশান্তকে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। সেই রাগ থেকেই সুশান্তকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন বলে দাবি অভিযুক্তের। যে জমির জন্য ঝামেলা, তা কেনার জন্য দুবাইয়ে গিয়ে অর্থ রোজগার করেছিলেন বলে দাবি বিহারের জামুইয়ের বাসিন্দা গুলজ়ারের। পুলিশ জানতে পেরেছে, তিনি দুবাই গিয়ে কয়েক বছর কাজ করেছিলেন। সেখান থেকে যে টাকা উপার্জন করেন, সেই টাকায় গুলশন কলোনিতে ২০০০ বর্গফুটের একটি জায়গা কেনেন। সেই জায়গা নিয়ে বিবাদের জেরে সুশান্তকে খুনের ছক কষেছিলেন গুলজ়ার।
গুলজ়ারের দাবি, আগেও দু’বার একই ভাবে সুশান্তকে খুনের পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। অক্টোবর মাসে শেষ বার সুশান্তকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন গুলজ়ার। পুলিশ সূত্রে খবর, সে বার ১০ লক্ষ টাকার ‘চুক্তি’ হয়েছিল। খুনের জন্য বিহার থেকে লোক আনা হয়েছিল। অস্ত্রও জোগাড় করা হয়েছিল। এ বারের মতো তখনও সুশান্তের গতিবিধি নজরে রেখেছিলেন এক জন। সেই মতো ছক কষা হয়। তবে অজ্ঞাত কারণে সে বার পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।
গুলজ়ারের দাবি, এর পর গত শুক্রবার আবার সুশান্তকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। ওই দিন সন্ধ্যায় কসবায় নিজের বাড়ির সামনে বসেছিলেন কলকাতা পুরসভার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুশান্ত। সেই সময় স্কুটারে চেপে আসেন দু’জন। তাঁদের মধ্যে এক জন স্কুটার থেকে নেমে সুশান্তকে লক্ষ্য করে পর পর দু’বার গুলি চালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু দু’বারই ব্যর্থ হন। ফের স্কুটারে চেপে পালানোর সময় যুবরাজ সিংহ নামে এক অভিযুক্তকে ধরে ফেলেন সুশান্ত এবং তাঁর সঙ্গীরা। পরের দিন সকালে এক ট্যাক্সিচালককে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর নাম আহমেদ খান। ‘শুটার’দের নিয়ে তিনি হাওড়া স্টেশন থেকে একাধিক জায়গায় গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
শনিবার এই ঘটনার অন্যতম মূলচক্রী আফরোজ় খান ওরফে গুলজ়ারকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি বিহারে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ। পুলিশি জেরায় গুলজ়ার দাবি করেছেন, জমি ‘হাতছাড়া’ হওয়ার কারণেই সুশান্তকে খুনের ছক কষেছিলেন। এই খুনের চেষ্টার নেপথ্যে আর কোনও কারণ রয়েছে কি না, খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সুশান্তের উপর কেন এত রাগ গুলজ়ারের, শুধুই জমি নিয়ে ঝামেলা, না কি অন্য কোনও আক্রোশ থেকে বার বার খুনের চেষ্টা করেছেন তিনি, সে সব প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy