পথচারীদের কথা ভেবে নতুন পরিকল্পনা। প্রতীকী ছবি
পথে নেই কোনও ট্র্যাফিক সিগন্যাল, নেই ট্র্যাফিক পুলিশও। সেইসব রাস্তায় পথচারীদের কথা ভেবে এ বার নতুন সিগন্যাল ব্যবস্থা ‘হাইব্রিড পথচারী বেকন’ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিল লালবাজার। অর্থাৎ একজন পথচারী নিজেই সিগন্যালের সুইচ টিপে লাল আলো জ্বালিয়ে, দু’দিকের গাড়ি থামিয়ে রাস্তা পেরোতে পারবেন। এবং তিনি রাস্তার অপর প্রান্তে চলে যাওয়ার পরে ওই সিগন্যাল স্বয়ংক্রিয় ভাবেই সবুজ হয়ে যাবে।
লালবাজারের এক পুলিশকর্তা জানান, ইতিমধ্যে শহরের কোথায় কোথায় ওই ‘হাইব্রিড পথচারী বেকন’ লাগানো যায়, তার সমীক্ষা শুরু হয়েছে। যেসব রাস্তায় গাড়ির গতিবেগ ৫০ কিলোমিটারের কম থাকে এবং যেখানে কোনও সিগন্যাল পোস্ট নেই, সেখানেই ওই বিশেষ সিগন্যাল বসানো যেতে পারে। মূলত যেসব রাস্তায় ট্র্যাফিক পুলিশ থাকে না, সেখানেই ওই ব্যবস্থা চালু করা হবে। প্রাথমিক ভাবে ইএম বাইপাসের একটি জায়গা এবং বাসন্তী হাইওয়ের উপরে তিনটি জায়গায় ওই সিগন্যাল ব্যবস্থা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুলিশ। তবে কোনটাই এখনও চূড়ান্ত নয় বলে লালবাজার সূত্রের খবর।
কি ভাবে কাজ করবে ওই ‘হাইব্রিড পথচারী বেকন’? লালবাজার জানাচ্ছে, ট্র্যাফিক সিগন্যাল নেই এমন জায়গাতেই বসানো হবে ওই সিগন্যাল পোস্ট। তবে ওই সিগন্যাল সবসময়ে সচল থাকবে না। কোনও পথচারী সেখান দিয়ে রাস্তা পারাপার করতে চাইলে তিনিই সুইচ টিপে সচল করবেন ওই বেকনকে। অথবা এ কাজের জন্য একজন পুলিশকর্মী সেখানে রাখা যেতে পারে। সুইচ টিপে সিগন্যাল চালু করার প্রথম কয়েক সেকেন্ড সেখানে হলুদ আলো জ্বলবে-নিভবে। তার পরে কিছুক্ষণ স্থির ভাবে জ্বলে থাকার পরে সেখানে লাল আলো জ্বলে উঠবে। সে সময়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে পথচারী রাস্তা পারাপার করতে পারবেন। তার পরে বেকনের ওই লাল আলো কিছুক্ষণ দপদপ করে আস্তে আস্তে নিজেই নিভে যাবে। তখন ফের গাড়ি স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করতে পারবে।
পুলিশ কর্তারা জানাচ্ছেন, কলকাতার রাস্তায় যে সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু আছে, তার থেকে অনেক কম খরচে ওই ‘হাইব্রিড পথচারী বেকন’ সিগন্যাল পদ্ধতি লাগানো যাবে। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে যখন পথচারীদের রাস্তা পারাপারের চাপ বেশি থাকবে, তখনই ওই সিগন্যাল কাজ করবে আর বাকি সময় তা অকেজো থাকবে। তবে যে পথে সব সময়েই প্রচুর পরিমাণে পথচারী রাস্তা পারাপার করেন, সেখানে এই সিগন্যাল পদ্ধতি অচল।
পুলিশের একটি অংশ জানিয়েছে, শহরের কয়েকটি জায়গা বাদ দিলে প্রায় সর্বত্রই সবসময়ে প্রচুর মানুষ রাস্তা পারাপার করেন। ফলে ওই গুটিকয়েক জায়গা ছাড়া এই সিগন্যাল পদ্ধতি এ শহরে অচল বলে তাঁরা মনে করছেন। তবে লালবাজার জানিয়েছে, আপাতত পরীক্ষামূলক ভাবে বাসন্তী হাইওয়ে বা বাইপাসের চারটি জায়গায় এই সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু হবে। এর পরে অবস্থা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy