বেহাল: আদিগঙ্গার জলে জমে আছে আবর্জনা। ফাইল চিত্র
পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। অথচ আদিগঙ্গা সংস্কারের জন্য কোনও ‘উল্লেখযোগ্য’ পদক্ষেপই করা হয়নি। যে ভাবে আদিগঙ্গা প্রতিনিয়ত গঙ্গাকে দূষিত করে চলেছে, তা উদ্বেগজনক বলে নিজেদের পর্যবেক্ষণে জানাল জাতীয় পরিবেশ আদালত। এখানেই থামেনি আদালত। আদিগঙ্গার দূষণ কতটা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, তা বোঝাতে গিয়ে পরিবেশ আদালত মন্তব্য করেছে, ‘আদিগঙ্গা কাঁদছে’! এই মন্তব্যকে যথেষ্ট ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীদের একাংশ।
শুক্রবার জাতীয় পরিবেশ আদালতে আদিগঙ্গা সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। সেখানেই আদিগঙ্গার দূষণের প্রসঙ্গ উঠে আসে। তথ্য বলছে, মোট ৭৭টি নালা প্রতিদিন মলমূত্র-সহ অন্য বর্জ্য বহন করে মিশছে আদিগঙ্গায়। ফলে সেখানকার জলের দূষণ মাত্রাছাড়া। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেই ২০১৪ সালেই ঠিক হয়েছিল দূষণ রুখতে বিশ্বব্যাঙ্কের অর্থানুকূল্যে তিনটি নিকাশি শোধন প্লান্ট তৈরি করা হবে। পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও সেই নিকাশি প্লান্ট তৈরির জমি খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে বিতর্ক শুরু হয়েছে। উল্টে আরও দূষিত হয়ে উঠেছে আদিগঙ্গার জল।
ওই মামলায় আদালতবান্ধব হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। ইতিমধ্যেই সুভাষবাবু আদিগঙ্গা পরিদর্শন করে নিজের রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আদিগঙ্গাকে বাঁচাতে নিকাশি শোধন প্লান্ট তৈরি করতেই হবে। অথচ প্লান্ট তৈরির জমি এখনও ঠিক করা যায়নি। জমি চিহ্নিত না করেই আদিগঙ্গা সংস্কারের রিপোর্ট কলকাতা পুরসভা জমা দিয়েছে। এমন হয় নাকি!’’ তিনি আরও জানাচ্ছেন, আদিগঙ্গা বুজিয়ে বর্তমানে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। অথচ কোন সংস্থা সে রাস্তা তৈরি করছে, তা ঠিক পরিষ্কার নয়। যা শুনে জাতীয় পরিবেশ আদালত রাজ্যের মুখ্যসচিবকে ওই রাস্তা তৈরির কাজ অবিলম্বে বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। সেই সঙ্গে ১৯ নভেম্বরের মধ্যে সে সংক্রান্ত রিপোর্ট রাজ্য সরকারকে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদিগঙ্গা সংস্কার নিয়ে কলকাতা পুরসভাকেও একটি ‘প্রোগ্রেস রিপোর্ট’ জমা দিতে বলেছে আদালত।
যদিও কলকাতা পুরসভার দাবি, তিনটি নিকাশি শোধন প্লান্টের জন্য ইতিমধ্যে জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। পুরসভার আইনজীবী পৌষালি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জমি চিহ্নিত হয়েছে। তা ঘেরার কাজ চলছে।’’ আদিগঙ্গা সংস্কারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘দু’টি জমি চিহ্নিত হয়েছে। আরও একটি প্লান্ট তৈরির জন্য আমরা কলকাতা পুলিশের একটি জায়গা দেখেছি। তাদের চিঠিও দিয়েছি। আশা করছি সেটাও চূড়ান্ত হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy