Advertisement
E-Paper

Drug Addiction: কালীপুজোয় জমজমাট সস্তা নেশার কারবার

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

নীলোৎপল বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২১ ০৭:০৩
Share
Save

বাগবাজার ঘাটের কাছে রবীন্দ্র সরণির উপরে পেয়ারা নিয়ে বসেন দুই মহিলা। খালি পা, উস্কোখুস্কো চুল। পরনের ময়লা পোশাক দেখে মনে হয়, খুব আর্থিক কষ্টে ওঁরা। একটু দাঁড়ালেই অবশ্য বদলাতে শুরু করে চিত্রটা। বোঝা যায়, পেয়ারা বিক্রি অছিলা। আদতে অন্য ব্যবসার টান!

একের পর এক এমন লোক সেই পেয়ারার ঝুড়ির সামনে এসে দাঁড়াচ্ছেন, যাঁদের পেয়ারা নিয়ে কোনও উৎসাহই নেই। টাকার বিনিময়ে তাঁদের হাতে নানা রঙের প্যাকেট ধরাচ্ছেন ওই দুই মহিলা। প্যাকেটে কী আছে? এক মহিলা বললেন, ‘‘তোমার কী দরকার? আগে তো কখনও দেখিনি। চেনা লোক ছাড়া ওই জিনিস দেওয়া বারণ।’’ তাঁদের ‘চেনা লোকের’ সূত্র ধরেই জানা গেল, পেয়ারাওয়ালা মারফত ছোট ছোট প্যাকেটে হাতে হাতে পৌঁছে যাচ্ছে গাঁজা! সারা বছর এর চাহিদা থাকলেও কালীপুজোর মরসুমে এমন লুকোচুরির ব্যবসায় ব্যস্ততা থাকে তুঙ্গে।

গোটা শহর জুড়ে এই মুহূর্তে এমনই রমরমা নেশার কারবার চলছে বলে অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে নিমতলা শ্মশানের কাছের এক চাওয়ালা তো আসল ব্যবসাই ভুলেছেন। তাঁর দোকানে নেশার সামগ্রীর বিক্রিই বেশি। বিকল্প ব্যবসায় বেশি মন দিচ্ছেন লেক রোড বিবেকানন্দ পার্কের কাছের ফুচকাওয়ালা। যখন-তখন নেশার সামগ্রী মিলছে হাইল্যান্ড পার্কের কাছের আইসক্রিম বিক্রেতা বা যাদবপুর এইট-বি বাসস্ট্যান্ডের কাছের চাওয়ালার কাছে। কিন্তু পুলিশ ও মাদক তদন্তে যুক্ত সংস্থার অধিকাংশের দাবি, মুম্বইয়ে মাদক-কাণ্ডে শাহরুখ-পুত্রের গ্রেফতারির পর থেকেই সমাজের উচ্চবিত্তদের মধ্যে মাদকের রমরমা আটকাতে তাঁরা বেশি সক্রিয়। রীতিমতো কুরিয়র সংস্থা ধরে ধরে প্রযুক্তি ব্যবহার করে ক্রিস্টাল মেথ, এলএসডি, হাশিশ, কোকেন, হেরোইন, নাইট্রোসাম, স্প্যাজ়মোপ্রক্সিভন, সেকোবারবিটালের মতো মাদকের খোঁজে নজরদারি চালানো হচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, উচ্চবিত্তদের উপরে বাড়তি নজরদারির ফাঁক গলেই কি নেশার রমরমা চলছে নীচের তলায়?

বাগমারি সেতুর ঠিক নীচের ফাঁকা জায়গায় পৌঁছে সেই আশঙ্কাই সত্যি হল। দেখা গেল, মোমবাতি জ্বেলে গোল হয়ে বসেছেন কয়েক জন। সামনেই পড়ে একাধিক প্লাস্টিক, এলএসডি-র ব্লট পেপার। কেউ মোমবাতির আগুনে প্লাস্টিক সেঁকছেন, কেউ ব্লট পেপার ছিঁড়ে জিভের নীচে রাখছেন। পাশেই আবার আঠার পাউচে জিভ ঘষছে কমবয়সি কয়েক জন। এখানে কী হচ্ছে? প্রশ্ন করায় স্থানীয় এক ব্যক্তি বললেন, ‘‘এখানে এ সব আসর রোজ বসে। পুলিশ মাঝেমধ্যে এলেও কিছু করতে পারে না।’’ গঙ্গার ঘাটে এক জায়গায় আবার গোল হয়ে বসা কয়েক জনের মাঝখানে রাখা কেরোসিনের পাত্র। দূরে কয়েক জন পেট্রল ভর্তি এক লিটারের বোতল নিয়ে বসে আছেন। হাতে হাতে ঘুরছে সেই নেশার ঘ্রাণ। পার্ক স্ট্রিট মেট্রো স্টেশনের পিছন দিকে ময়দানে দিনের আলোয় দেখা গেল, মাটিতে পড়ে দুই যুবক। পাশে একাধিক ব্যবহৃত সিরিঞ্জ। দূরে বসা এক জন বললেন, ‘‘সন্ধ্যার আগে উঠবে বলে মনে হয় না।’’

কলকাতা পুলিশের মাদক বিরোধী শাখার এক পদস্থ কর্তা বলছেন, ‘‘গরিবের এই সব নেশা নিয়ে সে ভাবে কোনও মহলই মাথা ঘামায় না। এঁরা সাধারণত এ সবেই অভ্যস্ত হয়ে যান। ফলে গঙ্গার ঘাট থেকে বা রাস্তা থেকে কাউকে ধরে নিয়ে গেলেও আবারও এমনটা করেন। সাজা দেওয়া হলেও এই কাজ থেকে বিরত রাখা যায় না।’’

drug addiction LSD Marijuana cocaine

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।