ফাইল চিত্র।
দূরপাল্লার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন হাওড়া থেকে শালিমার স্টেশনে সরিয়ে নেওয়া হবে আগামী কয়েক মাসেই। দক্ষিণ-পূর্ব রেল সূত্রের খবর, শালিমারে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া ট্রেনের তালিকায় রয়েছে করমণ্ডল, জ্ঞানেশ্বরী, ইস্ট কোস্ট, হাওড়া-পুরী, তিরুপতি, জগন্নাথ, ধৌলি, অমরাবতী-সহ একাধিক এক্সপ্রেস।
দক্ষিণ-পূর্ব রেল জানিয়েছে, হাওড়া স্টেশনের চাপ কমাতে শালিমারকেই ওই সব ট্রেনের প্রান্তিক স্টেশন করা হবে। এ জন্য পরিকল্পনা মতো ওই স্টেশনটিকে নতুন টার্মিনাল হিসাবে গড়ে তোলা হয়েছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনগুলি হাওড়া থেকে শালিমারে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ায় রেলের যাত্রী এবং রেলপ্রেমীদের একাংশ সমস্যার আশঙ্কা করছেন। তাঁদের অভিযোগ, শালিমার স্টেশনের সঙ্গে শহর এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলের বাস, মিনিবাসের যোগাযোগ ততটা সুগম নয়। লোকাল ট্রেন, ক্যাব এবং ট্যাক্সির যোগাযোগও ক্ষীণ। ফলে আগে ওই স্টেশনে যাতায়াতের উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করা উচিত ছিল। তা না করে তড়িঘড়ি দূরপাল্লার গুরুত্বপূর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেন সরিয়ে নিয়ে যাওয়ায় যাত্রীদের বিপত্তি বাড়াবে।
দক্ষিণের বহু ট্রেনে চিকিৎসা এবং তীর্থযাত্রায় অসুস্থ ও বয়স্ক যাত্রীরা যাতায়াত করেন। ওই যাত্রীদের বড় অংশই ফুট ওভারব্রিজ পেরোনো এবং ছোটাছুটির ঝক্কি এড়াতে প্রান্তিক স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠা পছন্দ করতেন। হাওড়ার বদলে তাঁদের শালিমার স্টেশনে যেতে হলে সমস্যায় পড়তে হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। রেলপ্রেমীদের একাংশের অভিযোগ, বটানিক্যাল গার্ডেন, হাওড়া, উলুবেড়িয়া-সহ যে সব রুটের বাস-মিনিবাস শালিমার দিয়ে চলাচল করে, তার সবগুলির ক্ষেত্রেই নামতে হয় তিন নম্বর রেলগেটের কাছে। ওই গেট থেকে আবার স্টেশনের দূরত্ব ৬০০-৭০০ মিটার। বয়স্ক এবং অসুস্থ যাত্রীদের পক্ষে সেই দূরত্ব পার করা অসুবিধাজনক। রাতে স্টেশন চত্বরে আলো কম। সন্ধ্যা নামলেই রেল ইয়ার্ড চত্বরে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা বড় মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়ায়, বলছেন তাঁরা। একটি রেলপ্রেমী সংগঠনের সদস্য রুদ্রনীল রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘তড়িঘড়ি এই সিদ্ধান্ত নিলে ভুল হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলার সমস্যার কথা না ভেবে রেল এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’
যদিও রেলকর্তারা ওই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েই ধাপে ধাপে পরিকল্পনা কার্যকর হতে চলেছে। হাওড়া স্টেশনে ট্রেনের চাপ এখনই যথেষ্ট বেশি। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো
চালু হলে হাওড়ায় যাত্রীর চাপ আরও বহু গুণ বাড়বে। তা ছাড়া বর্ষায়
হাওড়া এবং টিকিয়াপাড়া ইয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ফলে ট্রেন চলাচলে অসুবিধা হয়। অনেক ক্ষেত্রেই এ জন্য রেলযাত্রা বাতিল করতে হয়। তাঁদের দাবি, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় ভিড়ের কথা ভেবে হাওড়া থেকে ট্রেনের সংখ্যা না কমানো হলে পরিস্থিতি জটিল হবে। সে কথা ভেবেই সাঁতারাগাছি এবং শালিমার স্টেশনের পরিকাঠামো উন্নত করা হচ্ছে।
রেল কর্তৃপক্ষের আরও দাবি, স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে হাওড়া জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। বাস, মিনিবাস, ট্যাক্সি, ক্যাব-সহ যোগাযোগের বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে যে সমস্যা আছে, তা পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকেও জানানো হয়েছে বলে রেল সূত্রের খবর। বাস, মিনিবাস, ট্যাক্সি, অ্যাপ-ক্যাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা ছাড়াও জলপথে পরিবহণ নিয়েও প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা চলছে। বাবুঘাট থেকে শালিমার পর্যন্ত জলযানের মাধ্যমে যাতায়াত করার বিষয়টিও ভাবনায় রয়েছে বলে খবর। এ জন্য শালিমারে জেটি তৈরির প্রস্তাব রয়েছে।
এক রেলকর্তা বলেন, ‘‘যাত্রীদের যাতায়াতের সমস্যা কমাতে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রাখা হচ্ছে। ট্রেন চালু হলে সরকারি, বেসরকারি পরিবহণও বাড়বে বলে আশা করছি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy