ঐতিহাসিক: হাওড়া স্টেশন নির্মাণের আগে পোঁতা প্রথম প্রস্তরখণ্ড। নিজস্ব চিত্র
প্রায় ১৬০ বছর আগেও এই শহরে রেল প্রকল্প তৈরির আলোচনায় উঠে এসেছিল বৌবাজারের নাম। গঙ্গা নদীর পশ্চিম তীরের ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ে এবং পূর্ব দিকের ইস্টবেঙ্গল রেলওয়ের সংযোগকারী রেলপথ করতে গিয়ে বৌবাজারে স্টেশন তৈরির কথা ভেবেছিলেন রেলকর্তারা। সমীক্ষার পরে খরচের হিসাব করতে গিয়ে দেখা যায়, চার লক্ষ টাকার কাছাকাছি। খরচের বহর দেখে পিছিয়ে আসেন কর্তারা।
গঙ্গার পূর্ব আর পশ্চিম প্রান্তের ভূভাগের মধ্যে রেল সংযুক্তির ভাবনা অবশ্য তার পরেও আসে। লন্ডনের পাতাল রেলের যাত্রার কথা মাথায় রেখে ১৯২১ সালে নদীর নীচে সুড়ঙ্গ তৈরির কথা ভাবা হয়েছিল। লন্ডনের টিউব রেলের ইঞ্জিনিয়ার হার্লি হিউ ফরমাল রিম্পল হে সমীক্ষা করে জানান, প্রকল্পের আনুমানিক খরচ ৩৫ লক্ষ ২৬ হাজার ১৫৪ পাউন্ড। প্রাদেশিক সরকার ওই খরচ বহন করতে রাজি না-থাকায় ওই ভাবনাও বাস্তবে রূপ পায়নি।
রেল এবং তার ইতিহাস নিয়ে এমনই সব অভিনব তথ্য উঠে এল রবিবার সকালে ‘রেল এনথিউজ়িয়াস্ট সোসাইটি’র আহ্বানে অনুষ্ঠিত হেরিটেজ ওয়াকে। প্রাক্তন বিচারপতি সৌমিত্র পাল শৈশব থেকেই রেল নিয়ে উৎসাহী। তিনিই শোনালেন বৌবাজারে স্টেশন তৈরির সে দিনের ভাবনার কথা।
১২৫ বিঘা জমির উপরে দু’লক্ষ টাকা খরচ করে হাওড়া স্টেশন তৈরির পরিকল্পনা করতে হয়েছিল ইস্ট ইন্ডিয়ান রেল কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার জর্জ টার্নবুলকে। তাও ওই টাকার প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার খরচ হয়েছিল ছয় সাহেব পরিবারের থেকে জমি কিনতেই। জমি কেনার খরচের কারণেই হাওড়ায় স্টেশন তৈরি নিয়ে সংশয় ছিল ব্রিটিশ রেল কোম্পানির। হাওড়ায়, না কি চুঁচুড়ার কাছে স্টেশন তৈরি হবে, সেই টানাপড়েনে কেটে যায় পাঁচ বছর। কলকাতা বন্দর এবং শহরের নৈকট্য বিবেচনা করে হাওড়াই চূড়ান্ত হয়। ১৮৫৪ সালের ১১ অগস্ট হাওড়া থেকে হুগলির মধ্যে মহড়া দৌড়ের পরে ব্রিটিশ আধিকারিক যে রিপোর্ট দিয়েছিলেন, তাতেই প্রথম রেলপথের ব্যবসায়িক স্বার্থ ভেবে গঙ্গার উপরে সেতু তৈরির কথা বলা হয়। কিছু দিনের মধ্যেই হাওড়া স্টেশনে অতিরিক্ত ভিড় হওয়ায় সেতু তৈরির বিষয়টি গতি পায়।
এমনই স্মৃতি শোনা গেল রেলের ঐতিহ্য-সফরে। বিচারপতি সৌমিত্র পাল ছাড়াও শোনালেন রেল এনথিউজ়িয়াস্ট সোসাইটির কলকাতা চ্যাপ্টারের প্রধান সদস্য সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় এবং অন্যতম সদস্য সৌর মাজি। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার অতুল্য সিংহ, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ঋত্বিক শর্মা এবং রেলপ্রেমী সংগঠনের বিভিন্ন বয়সের সদস্যেরাও শামিল হয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy