হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাকেন্দ্রে সোমবার রাতে তালা দিয়ে গিয়েছিলেন নিরাপত্তারক্ষী। মঙ্গলবার সকালে চেম্বার খুলে তিনি দেখতে পান, ভিতরে এক কোণে খালি গায়ে চুপ করে বসে রয়েছেন এক যুবক! মঙ্গলবার, বি বা দী বাগ এলাকার ঘটনা। খবর পেয়ে হেয়ার স্ট্রিট
থানার পুলিশ এসে তাঁকে থানায় নিয়ে যায়। তদন্তে জানা যায়, নেশার বশে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন তিনি। ঘণ্টাচারেক জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাঁকে তাঁর বাবার হাতে তুলে দিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবক পেশায় ইনস্ট্রুমেন্টেশন ইঞ্জিনিয়ার, বাড়ি বিশাখাপত্তনমে। তিনি নিয়মিত নেশা করেন। বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতে দিনকয়েক আগে তিনি কলকাতায় আসেন। তাঁর বাবা এক জন অবসরপ্রাপ্ত রেল কর্মী। বাঁকুড়ার একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ার সূত্রে ওই যুবকের এ রাজ্যে একাধিক বন্ধু রয়েছে। ওই যুবকের কথায়, ‘‘বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করতেই প্রথমে ডায়মন্ড হারবারে এসেছিলাম।’’ তার পরে তিনি কোথায় ছিলেন, সে প্রশ্নের মাঝেই তিনি জ্ঞান হারান। তদন্তকারীরা জানান, দিন দুয়েক আগে মধ্য কলকাতার একটি অতিথিশালায় ওঠেন ওই যুবক। সোমবার অতিথিশালার কর্মীরা তাঁর অদ্ভুত আচরণ দেখে বাড়িতে ফোন করলে তাঁর বাবা তড়িঘড়ি কলকাতায় আসেন।
মঙ্গলবার থানার বাইরে ওই যুবকের বাবা বলেন, ‘‘বখাটে বন্ধুদের খপ্পরে পড়ে ছেলেটা ভুল পথে যাচ্ছে। সঠিক পথ দেখাতে আপ্রাণ চেষ্টা করছি।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার অতিথিশালা থেকে বেরিয়ে মধ্য কলকাতার বিভিন্ন এলাকা দিয়ে হেঁটে শেষে বি বা দী বাগ এলাকায় যান ওই যুবক। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ওই হোমিওপ্যাথি চেম্বারে কোনও ভাবে ঢুকে পড়েন। নিরাপত্তারক্ষীও ভাল করে না দেখেই তালা ঝুলিয়ে দেন। ফলে রাতভর সেখানেই রয়ে যান যুবক। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ তালা খুললে দেখা যায়, ওই যুবক ভিতরে বসে রয়েছেন।
ওই চেম্বারের চিকিৎসক সুবলশঙ্কর রায় পুলিশকে জানিয়েছেন, চেম্বারের সব কিছু অক্ষত রয়েছে। এ দিন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই যুবকের ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। তাঁর বাবা বলেন, ‘‘নেশা ছেড়ে মূল স্রোতে ফিরতে পুলিশ আধিকারিকেরা ছেলেকে অনেক বুঝিয়েছেন। ওর সঙ্গে ছবিও তুলেছেন।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)