মাটিতে আছাড় খেয়ে ধীরে ধীরে নিথর হয়ে গেল দেহটি। প্রতীকী ছবি।
আকাশে তখন পেটকাটি-চাঁদিয়ালের লড়াই। ব্যস্ত বাজার এলাকার আশপাশ থেকে মাঝেমধ্যেই ভেসে আসছে ‘ভো-কাট্টা’ ধ্বনি। অনেকেই আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখছিলেন ঘুড়ির লড়াই। আচমকাই চোখে পড়ল, কালো রঙের হাতকাটা টি-শার্ট আর ডেনিমের প্যান্ট পরা এক যুবক তেতলার ছাদ থেকে নীচে পড়ে যাচ্ছেন। মাটিতে আছাড় খেয়ে ধীরে ধীরে নিথর হয়ে গেল তাঁর দেহটি।
শনিবার বিশ্বকর্মা পুজোর বিকেলে এই দৃশ্য দেখে আঁতকে ওঠেন সিঁথি থানা এলাকার ফুলবাগানের গুপ্ত মোটর মার্কেটের সামনে দাঁড়ানো লোকজন। নিজেদের সামলে নিয়ে তাঁদের মধ্যেই কয়েক জন ওই যুবককে নিয়ে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছোটেন। কিন্তু বাঁচানো যায়নি তাঁকে।
পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম সাগর যাদব (২৪)। তিনি ব্যারাকপুরের সদর বাজারে থাকতেন। সেখানে বিএসএফের ক্যান্টিনে জিনিসপত্র সরবরাহের ব্যবসা রয়েছে তাঁর। ঘুড়ি ওড়াতে গিয়েই ছাদ থেকে পড়ে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। এ দিন সাগর ফুলবাগান এলাকায় তাঁর এক বন্ধুর মাসির বাড়িতে এসেছিলেন। বন্ধুদের সঙ্গেই ঘুড়ি ওড়াতে উঠেছিলেন গুপ্ত মার্কেটের তেতলার ছাদে। সেখানেই ছাদের দু’ফুট পাঁচিল টপকে পড়ে যান তিনি। ঘটনার পরে পুলিশ গিয়ে ওই ছাদ থেকে ঘুড়ি, লাটাই ছাড়াও কয়েকটি মদের বোতল এবং চানাচুরের প্যাকেট আটক করে নিয়ে গিয়েছে বলে স্থানীয়েরা জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মোটরবাজারে এ দিন বিশ্বকর্মা পুজো হয়েছিল। অনেকেই বিকেলে ঘুড়ি ওড়াচ্ছিলেন। লোকজন আকাশের দিকে তাকিয়ে ঘুড়ি ওড়ানো দেখছিলেন। এমন সময়ে ওই ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখেন তাঁরা। চোখের সামনেই তেতলার ছাদ থেকে নীচে পড়ে যাচ্ছেন সাগর।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, বাজারের ছাদে মত্ত অবস্থাতেই ঘুড়ি ওড়ানো হচ্ছিল। যে কারণে সেখান থেকে মদের বোতল ও চানাচুরের প্যাকেট পাওয়া গিয়েছে। তবে সাগর মত্ত ছিলেন কি না, তা ময়না তদন্তের পরেই বোঝা যাবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। সাগরের আত্মীয়েরা জানিয়েছেন, এ দিন সকালেই বন্ধুর আত্মীয়ার বাড়িতে এসেছিলেন তিনি। সেখানেই সবাই মিলে ঘুড়ি ওড়ানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। তাঁরা জানতে পেরেছেন, বাজারের ছাদের দরজা বন্ধ ছিল। তা সত্ত্বেও সাগরেরা লোহার গেট টপকে ছাদে উঠেছিলেন।
মোটর মার্কেটের সভাপতি পরমেশকুমার গুপ্ত জানান, ঘটনার খবর পেয়েই তাঁদের কয়েক জন বাইরে বেরিয়ে দেখেন, ওই যুবক নিথর অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। দুর্ঘটনার খবর পুলিশকে জানানো হয়। পরমেশ বলেন, ‘‘পুজোর দিনে সবাই নিজের মতো করে আনন্দ করছিলেন। তার মধ্যেই এই দুর্ঘটনা ঘটে গেল। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই ছেলেটি মারা যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy