—প্রতীকী চিত্র।
বেআইনি বাড়ির সংখ্যা তিনশোরও বেশি। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ রয়েছে, ওই সব বেআইনি বাড়ি ভেঙে দিতে হবে। কিন্তু সেই নির্দেশ কত দিনে কার্যকর হবে, তা কেউ জানে না। কারণ, সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে পাল্টা মামলা হয়েছে। অন্য দিকে, ভিন্ন এক মামলায় এলাকারই একটি বেআইনি বহুতল ভেঙে দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি ভাঙতে গিয়ে স্থানীয় ভাবে বাধার মুখে পড়ে বিধাননগর পুরসভা। তার পরেই বেআইনি বাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চেয়েও পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে পুরসভা তথা পুলিশ-প্রশাসন।
বিধাননগর পুরসভা সূত্রের খবর, ৩৫ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড মিলিয়ে ৩২২টি বেআইনি বাড়ি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনম। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে আদালতের কাছে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান বাড়ির বাসিন্দারা। ইতিমধ্যে সুকান্তনগর এলাকার অন্য একটি বহুতলও বেআইনি ঘোষণা করে সেটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেটি ভাঙতে গিয়ে স্থানীয় ভাবে দু’বার প্রবল বাধার মুখে পড়েন পুরকর্মীরা। বিষয়টি আদালতকে জানায় বিধাননগর পুরসভা।
পরিস্থিতি যখন এমন, তখন আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ে একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। সোমবার পুরসভার কমিশনারের ঘরে বৈঠকে স্থির হয়েছে, মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীর নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি কমিটি তৈরি হবে। পাশাপাশি, বেআইনি নির্মাণ ভাঙার রাস্তা মসৃণ করতেই আদালতের কাছে আর্জি জানানো হবে, যাতে প্রোমোটার বাড়ির ক্রেতাদের ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হন। পুর আধিকারিকেরা জানালেন, ওই বাড়ির প্রোমোটারকে ইতিমধ্যেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, ক্রেতাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য। পুরসভাও সেই আর্জি আদালতের কাছে জানাবে। আধিকারিকদের মতে, ক্রেতাদের অন্ধকারে রেখে ফ্ল্যাট বিক্রি করেছেন প্রোমোটার। ওই সব এলাকায় নকশার অনুমোদন ছাড়াই নির্মাণ হয়ে গিয়েছে। ক্রেতারা আইনি দিক খতিয়ে দেখেননি। ফলে, আশ্রয়হীন যাতে না হতে হয়, তাই তাঁরা নির্মাণ ভাঙতে বাধা দিয়েছেন। এই অবস্থায় প্রোমোটার ক্ষতিপূরণ দিলে সে ক্ষেত্রে ক্রেতারা বাড়ি ছাড়তে আপত্তি করবেন না বলেই মনে করছে পুরসভা।
উল্লেখ্য, বিধাননগর পুর এলাকায় বেআইনি নির্মাণের জঙ্গল তৈরি হয়েছে। সল্টলেকের সংযুক্ত অঞ্চলগুলি শুধু নয়, রাজারহাটের বিস্তীর্ণ এলাকাতেও এই সমস্যা রয়েছে। অবৈধ নকশার উপরে ভিত্তি করেই অজস্র বহুতল তৈরি হয়েছে বলে দীর্ঘ দিনের অভিযোগ পুরসভার। বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে পুরসভার তরফে বিভিন্ন ব্যাঙ্ককে জানানো হয়েছে, যাতে গৃহঋণ দেওয়ার আগে পুরসভার শংসাপত্র খতিয়ে দেখে তারা। একই কথা জানানো হয়েছে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলিকেও। পুরসভার মতে, ক্রেতাদের অন্ধকারে রেখে অবৈধ কিংবা উপযুক্ত নকশা ছাড়াই ফ্ল্যাট তৈরি করে বিক্রি করেন প্রোমোটারেরা। সেই সব বাড়ির বিরুদ্ধে পুরসভা ব্যবস্থা নিতে গেলেই তখন জটিলতা তৈরি হয়।
পুর আধিকারিকেরা জানান, সুকান্তনগরের ওই বহুতল ছাড়াও যে ৩২২টি বাড়ি ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলির ক্ষেত্রেও প্রোমোটারকে ডেকে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেওয়া হয় কি না, সে দিকেই তাঁরা চেয়ে আছেন। কারণ, ক্ষতিপূরণ পেলে ক্রেতারা ওই সব বাড়ি ছেড়ে চলে যাবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy