Advertisement
০৬ অক্টোবর ২০২৪
Crime Against Women

‘ধর্ষণের’ জেরে অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী, ধৃত অভিযুক্ত

বারাসতের পকসো আদালতের সরকারি আইনজীবী গৌতম সরকার জানান, অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৫৬
Share: Save:

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক-পড়ুয়াকে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় প্রতিবাদের আঁচ স্তিমিত হয়নি এখনও। এরই মধ্যে এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে নিউ টাউনের একটি এলাকায়। আরও অভিযোগ, ওই কিশোরীকে ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য করেছিল অভিযুক্ত। গত অগস্টে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে বলে জানা গিয়েছে। তার পরেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে বছর পনেরোর মেয়েটি। শুক্রবার সে কথা জানাজানি হতেই ধুন্ধুমার বেধে যায় ওই এলাকায়। নির্যাতিতার পরিজনদের দাবি, মেয়েটির কিছু শারীরিক সমস্যা হওয়ায় তার ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছিল। শুক্রবার রাতে রিপোর্ট পেয়ে জানা যায়, সে অন্তঃসত্ত্বা। তখনই ধর্ষণের ঘটনার কথা জানায় মেয়েটি। সেই রাতেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়। এর পরে গভীর রাতে নিউ টাউন থানার পুলিশ সঞ্জয়
হালদার নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা করা করেছে। এই ঘটনায় অভিযুক্তকে আড়াল করার চেষ্টার অভিযোগে স্থানীয় এক তৃণমূল নেতার অনুগামীদের উপরে চড়াও হন এলাকার বাসিন্দারা। পরে পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

বারাসতের পকসো আদালতের সরকারি আইনজীবী গৌতম সরকার জানান, অভিযুক্তকে জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। পুলিশ সূত্রের খবর, নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দি নেওয়া হবে এবং তাকে ‘চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি’ (সিডব্লিউসি)-র সামনে হাজির করানো হবে। পুলিশ জানায়, ওই কিশোরীর পাড়াতেই থাকত সঞ্জয়। গত অগস্টে মেয়েটি এক দিন বাড়িতে একাই ছিল। অভিযোগ, সেই সুযোগে ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে সঞ্জয়। এমনকি, নির্যাতিতাকে মুখ বন্ধ রাখতে বারকয়েক হুমকিও দেয় সে। মেয়েটির পরিবার জানাচ্ছে, সঞ্জয় হুমকি দেওয়ায় এত দিন ভয়েই কাউকে কিছু জানায়নি সে। যদিও ওই ঘটনার জেরে তার আচরণ ও ব্যবহারে অনেক পরিবর্তন এসেছিল। নির্যাতিতার এক আত্মীয় জানান, মেয়েটির বাবা টোটো চালান, মা পরিচারিকার কাজ করেন। মেয়ে রোজই দেরি করে ঘুম থেকে ওঠে। তার পরে স্কুলে যায়। তাই বেরোনোর সময়ে অভিভাবকেরা দরজায় তালা দিতেন না। প্রসঙ্গত, ওই কিশোরী আগামী বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে।

এক আত্মীয়ের কথায়, ‘‘দরজা খোলা পেয়ে সঞ্জয় ঘরে ঢুকে আমাদের মেয়েকে ধর্ষণ করে। কাউকে কিছু জানালে ওর মুখে অ্যাসিড ছোড়ার ভয় দেখায়, খুনের হুমকি দেয়। মেয়ে শুরুতে আমাদের কিছু বলেনি। কিন্তু মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল। শারীরিক কিছু সমস্যা হওয়ায় ওকে দিনকয়েক আগে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। শুক্রবার ইউএসজি রিপোর্ট থেকে জানা যায়, মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা। তখনই কান্নায় ভেঙে পড়ে ও সব কথা জানায়। আমরা পুলিশে অভিযোগ করি।’’ স্থানীয়েরা জানান, শুক্রবার রাতে ঘটনার কথা জানাজানি হতেই সঞ্জয় পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশ তাকে এলাকার মোড়ে ধরে ফেলে। এ নিয়ে ওই রাতে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। সঞ্জয়ের বাড়িতে ভাঙচুর চলে। তার মোটরবাইকটিও ভাঙচুর করেন ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সুশান্ত সর্দার নামে এলাকার এক তৃণমূল নেতা ও তাঁর অনুগামীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে সঞ্জয়ের বাড়ি ভাঙচুর ঠেকানোর চেষ্টা করেন।
তাতে সঞ্জয়কে আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে, এমন অভিযোগ তুলে ওই
নেতা ও তাঁর অনুগামীদের উপরে চড়াও হন এলাকার বাসিন্দারা। বিক্ষোভ দেখানো হয় পুলিশকে ঘিরেও। পরে অবশ্য পুলিশি হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। সুশান্তের যদিও দাবি, ‘‘আমরা কাউকে আড়াল করতে যাইনি। গোলমাল হচ্ছে শুনে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম লোকজনকে শান্ত করতে। অভিযুক্তকে আমাদের ক্লাবের পক্ষ থেকেই পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

New Town
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE