—প্রতীকী চিত্র।
বছরখানেক আগে পর্যন্ত তৃণমূলের মিছিল বা সভায় গেলেও ইদানীং যাচ্ছিলেন না তিনি। লোকসভা ভোটের আগেও বার বার ডাকা হয়েছিল। তিনি এড়িয়ে যান। অভিযোগ, ভোট মিটতেই পাড়ার তৃণমূলের ‘দাদা’রা এ নিয়ে নানা কটূক্তি করছিল এবং হুমকি দিচ্ছিল। প্রতিবাদ করায় প্রকাশ্য রাস্তায় তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে যৌন হেনস্থার পাশাপাশি ওই ব্যক্তিকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল খোদ পুরপ্রতিনিধির অনুগামীদের বিরুদ্ধে। সোমবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে লেক থানা এলাকার গোবিন্দপুর কলোনিতে। রাস্তায় ফেলে মারতে মারতে ওই ব্যক্তির স্ত্রীর শাড়ি পর্যন্ত খুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানিয়েছে, গোবিন্দপুর রেল কলোনিতে সপরিবার থাকেন ওই ব্যক্তি। বাড়িতে স্ত্রী ছাড়াও বছর আঠারোর মেয়ে ও ১২ বছরের ছেলে রয়েছে তাঁর। ওই পাড়ায় বাজারের কাছে একটি কাপড়ের দোকান চালান তিনি। স্ত্রী অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। ওই ব্যক্তির দাবি, তিনি বছর দুয়েক আগে কলকাতা পুরসভার ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধির ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে মিলে সিন্ডিকেটের কাজ করতেন। কিন্তু বছরখানেক আগে সেই কাজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে কাপড়ের দোকান দেন। ওই ব্যক্তি জানান, দোকান, ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় দলের মিটিং-মিছিলে যেতে পারতেন না তিনি। তাঁর দাবি, লোকসভা ভোটের আগে তাঁকে একাধিক বার মিটিং-মিছিলে যেতে বলা হয়। কিন্তু তিনি যাননি। সেই কারণে ভোট মিটতেই তাঁকে নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। ভোটের ফল বেরোনোর পরে তাঁর দোকান তুলে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে ‘দেখে নেওয়া’ হবে বলেও পুরপ্রতিনিধির ঘনিষ্ঠেরা হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। এমনকি, তিনি রাস্তায় বেরোলেই নানা ভাবে কটূক্তি করা হত বলে ওই ব্যক্তির দাবি।
এ দিন বিকেলে কাজে বেরিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। অভিযোগ, পাড়ার মোড়ে তাঁকে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি কটূক্তিও করে পুরপ্রতিনিধির অনুগামীরা। মহিলা প্রতিবাদ করলে তাঁর উপরে অভিযুক্তেরা চড়াও হয়। রাস্তায় ফেলে মারধরের পাশাপাশি মহিলাকে যৌন হেনস্থাও করা হয় বলে তাঁর দাবি। তাঁর শাড়িও খুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। চিৎকার-চেঁচামেচিতে মহিলার স্বামী ও মেয়ে ঘটনাস্থলে দৌড়ে এলে তাঁদেরও ঘিরে ধরে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি, এ দিন সন্ধ্যায় ওই ব্যক্তির দোকান ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি তাঁর। মারধরে আহত ওই পরিবারের সদস্যদের উদ্ধার করে স্থানীয়েরাই এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যান। ওই ব্যক্তির কথায়, ‘‘আমি কোনও দল করি না। শুধু মিছিলে না যাওয়ার জেরে কাউন্সিলরের লোকজন হামলা চালায়। আমার স্ত্রী, মেয়েকেও ওরা ছাড়েনি। এমনকি, ভোটের ফল ঘোষণার পরে আমার ছেলেকে খুন করবে বলেও হুমকি দিয়েছে।’’
যদিও ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি মৌসুমী দাস গোটা ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। এমনকি, অভিযুক্তেরা তাঁর অনুগামী নয় বলেও তাঁর দাবি। তিনি বলেন, ‘‘কটূক্তি নিয়ে ওই ঝামেলা বলে শুনেছি। তেমন বড় কিছু ঘটেছে বলে জানা নেই। পুলিশকে বলেছি, খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিতে।’’
ভোটের ফল ঘোষণার আগেই শহরে একের পর এক এমন ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সোমবার রাতে অভিযোগ জানাতে লেক থানায় যান আক্রান্ত ব্যক্তি। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘কী নিয়ে গন্ডগোল খতিয়ে দেখছি। গোটা পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy