—প্রতীকী চিত্র।
দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বিচারাধীন এক বন্দির মৃত্যু ঘিরে রহস্য তৈরি হয়েছে। শনিবার ভোরে মৃত্যু হয় ওই বন্দির। দমদম থানার পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম রাজ দত্ত (১৯)। বাগুইআটির অর্জুনপুরে মারধরকে কেন্দ্র করে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় রাজ গ্রেফতার হয়েছিলেন। রাজের মৃত্যু নিয়ে তাঁর পরিবার এ দিন জেল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেয়। এমনকি, ওই তরুণকে উপযুক্ত চিকিৎসা না করিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়। সেই সঙ্গে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তোলা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত এপ্রিলে বাগুইআটি থানার অদূরে অর্জুনপুরে একটি গোলমাল হয়। সঞ্জীব দাস ওরফে পটলা নামে এক ব্যক্তিকে সেখানে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। একাধিক অপরাধে নাম জড়িয়ে থাকার অভিযোগ উঠেছিল পটলা নামে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও ছিল। ওই ঘটনায় ১৯ জনকে গ্রেফতার করে বাগুইআটি থানার পুলিশ। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অর্জুনপুর শিবতলার বাসিন্দা রাজও।
এ দিন তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে যায় রাজের পরিবার। তারা দাবি করে, অর্জুনপুরের ঘটনায় রাজকে ফাঁসানো হয়েছে। মৃতের বাবা বিপ্লব দত্ত জানান, তাঁর ছেলে ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। কলকাতার নামী ক্লাবের জুনিয়র টিমে খেলতেন। তিনি বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময়ে রাজের রক্তবমি হয়, পেটের গোলমালও শুরু হয়েছিল। ছেলে জানিয়েছিল, বুকে, পিঠে, মাথায় ব্যথা হচ্ছে। আমরা প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করানোর আর্জি জানিয়েছিলাম।’’
পরিজনেদের দাবি, সেই আর্জি মঞ্জুর হয়েছিল। আদালত থেকে সংশোধনাগারে ফেরার আগে রাজের ফের রক্তবমি হয়। রাতে শরীর আরও খারাপ হওয়ায় তাঁকে জেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরিবারের দাবি, সময় মতো চিকিৎসা হলে রাজ বেঁচে যেতেন।
রাজদের গ্রেফতারি ও জামিন না পাওয়ার জন্য তাঁর এক আত্মীয়া দায়ী করেন পটলার স্ত্রী পিঙ্কি ও বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবরাজ চক্রবর্তীকে। ওই আত্মীয়ার কথায়, ‘‘পটলা ছিল দুষ্কৃতী। তাকে ভাল সাজানো হচ্ছে। দেবরাজ আর পিঙ্কি মিলে এত ছেলেকে ফাঁসিয়েছে। জামিন হতে দিচ্ছে না।’’
এই প্রসঙ্গে দেবরাজের বক্তব্য, ‘‘রাজের মৃত্যুর খবর দুর্ভাগ্যজনক। ওর পরিবার আমার কাছে জামিন করাতে সাহায্য চেয়েছিল। কাউকে জামিন দিতে পারে আদালত। আমি বলেছিলাম যে, আমার কিছু করার নেই।’’
রাজের অস্বাভাবিক মৃত্যুর তদন্ত শুরু করেছে দমদম থানার পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এ দিন রাজের মৃত্যু নিয়ে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ফোনে এবং হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে কোনও উত্তর মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy