পুকুর ভরাটের তদন্ত করতে গিয়েও এ বার স্থানীয়দের হাতে আক্রান্ত হলেন এক পুর আধিকারিক। বুধবার, রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার নবপল্লির ডাক্তারবাগান এলাকায়। এর আগে মেটিয়াবুরুজেও স্থানীয়দের হাতে ঘেরাও হয়েছিলেন এক পুর আধিকারিক।
এ দিন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসার রবীন্দ্রনাথ রায় ও গড়িয়া পুরসভা অফিসের ইঞ্জিনিয়ার শুভাশিস বসু যখন ছ’বিঘা পুকুরটির ছবি তুলছিলেন, তখন কয়েক জন তাঁদের উপরে হামলা চালান বলে অভিযোগ। রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লব দাসের নির্দেশমতো পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি পাপিয়া হালদারের সামনেই হামলা হয়। থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’’ চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘কয়েক জন হামলাকারীর নামে পুলিশে অভিযোগ করা হয়েছে।’’ পাপিয়া অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
একই ভাবে মেটিয়াবুরুজ, গার্ডেনরিচেও পুকুর ভরাট রুখতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ছেন পুরকর্মীরা। পুরসভা সূত্রের খবর, মেটিয়াবুরুজে পুর সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে সম্প্রতি ঘেরাও করেন স্থানীয়েরা। তাই এ বার পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে ওই এলাকায় জলাশয় মাপজোক করতে যাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াটার রিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ।
পুরসভা সূত্রের খবর, মেয়রের নির্দেশে উপগ্রহ চিত্রের সাহায্যে জলাশয় চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে। ২০০৪ সালের এবং বর্তমানের উপগ্রহ চিত্র মিলিয়ে দেখা হচ্ছে, শহরের কোথায় ক’টি জলাশয় ভরাট করা হয়েছে। পুরসভার ১-১০০ নম্বর ওয়ার্ডে মাপজোকের কাজ করছে বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি দফতর। ১০১-১৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে এই কাজ করছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়।
মেটিয়াবুরুজে একাধিক পুকুর ভরাট হয়েছে বলে জানান মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পুরসভা দাবি, পুকুর বাঁচানোর পথে অন্তরায় গার্ডেনরিচ, মেটিয়াবুরুজ এলাকা। সেখানে বাধা পাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া, গবেষকেরা। তাই পুলিশের সাহায্য নিচ্ছে পুরসভা। মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘‘শহরের সমস্ত জলাশয় মাপজোকের কাজ চলছে। পুকুর ভরাটের বিরুদ্ধে পুরসভা কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। সব পুকুর নথিভুক্ত থাকবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)