বহুতলের লোহার কাঠামো ভেঙে গিয়ে বিপত্তি। তার পরে বৈদ্যুতিক লাইন সারাইয়ের কাজ চলছে। বৃহস্পতিবার, মধ্যমগ্রামে। ছবি: সুদীপ ঘোষ
রাস্তায় তখন লোকজনের ভিড়। দোকানেও প্রচুর ক্রেতা। পাশে যশোর রোডেও যানজট। এমন সময়ে হঠাৎ হুড়মুড়িয়ে রাস্তার উপরে ভেঙে পড়ল একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের লোহার কাঠামো। কেঁপে উঠল চার দিক।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আচমকা এই ঘটনায় হুড়োহুড়ি পড়ে যায় মধ্যমগ্রামের দোলতলা এলাকায়। ভূমিকম্প হয়েছে ভেবে ফাঁকা জায়গায় ছুটে যান অনেকে। কয়েক মুহূর্ত পরেই জানা যায়, ভূমিকম্প নয়, ঘটেছে দুর্ঘটনা। পাশের নির্মীয়মাণ একটি এগারোতলা বাড়িতে ঢালাইয়ের জন্য রাখা লোহার কাঠামোটি ভেঙে পড়েছে নীচে। যার জেরে জখম হয়েছেন দুই ব্যক্তি। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আটটি দোকান, তিনটি মোটরবাইক, একটি ট্যাক্সি এবং একটি রিকশা। কাঠামোটি প্রথমে বিদ্যুতের তারে পড়ে বলে ক্ষয়ক্ষতি কম হয়েছে। না হলে আরও বড়সড় অঘটন ঘটতে পারত।
এ দিন এই ঘটনার জেরে যশোর রোড এবং গঙ্গানগর রোডে আধ ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ। দমকল এবং পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশ আশ্বাস দেয়, লিখিত অভিযোগ পেলে তারা ব্যবস্থা নেবে। সন্ধ্যা পর্যন্ত অবশ্য কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা রুজু করেছে ওই আবাসন সংস্থার বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দোলতলায় যশোর রোড ও গঙ্গানগর রোডের সংযোগস্থলে রাস্তার একেবারে পাশেই এগারোতলা বাড়িটি তৈরি করছে একটি নামী নির্মাণ সংস্থা। একেবারে রাস্তা ঘেঁষে তৈরি হওয়া ওই আবাসন ঘিরে স্থানীয়দের ক্ষোভ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই। তাঁদের অভিযোগ, সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করেই বহুতলটি তৈরি করা হচ্ছে। রাস্তার ধারে অনেক দোকানপাট রয়েছে। কিন্তু নিরাপত্তার দিকে নির্মাণকারী সংস্থার কোনও নজর নেই।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই বহুতলের সিঁড়ি এবং একটি অংশের ঢালাইয়ের জন্য লোহার রডের কাঠামোটি তৈরি হয়েছিল। দু’-এক দিনের মধ্যেই ঢালাই করার কথা ছিল। তার আগেই বেলা ১২টা নাগাদ কাঠামোটি মূল ভবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আছড়ে পড়ে।
নির্মীয়মাণ ওই আবাসনের গা ঘেঁষে রাস্তার ধারেই রয়েছে বেশ কয়েকটি খাবার, মনোহারি এবং লটারির দোকান। কাঠামোটি ভেঙে পড়ায় আটটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জখম হন দুই পথচারী। দমকল এসে কাঠামোটি সরাতে আধ ঘণ্টা পেরিয়ে যায়। সেই সময়ে দু’টি রাস্তার তিন দিকে যানজট তৈরি হয়। তার ফলে দুর্ভোগে পড়েন বহু যাত্রী। যান চলাচল স্বাভাবিক হতে এক ঘণ্টা লেগে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy