অপেক্ষা: ত্রিপুরা থেকে বিশ্বকাপের খেলা দেখতে এসে টিকিটের খোঁজে কয়েক জন যুবক। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী।
২২ গজে মহারণের এক দিন আগে ইডেন চত্বর যেন এক টুকরো ভারত! মা-ছেলে এসেছেন আগরতলা থেকে, ছেলে মাধ্যমিকে ভাল ফল করায় প্রতিশ্রুতি মতো স্টেডিয়ামে বসিয়ে ম্যাচ দেখাতে। কেউ আবার মহারাষ্ট্র থেকে সোজা বিশ্বকাপের উত্তাপ নিতে চলে এসেছেন কলকাতায়। কেউ রাঁচীর বাড়িতে না বলে, অফিসের কাজের নাম করে শহরে এসে ইডেন চত্বরে ঘোরাঘুরি করছেন, যদি একটা টিকিট পাওয়া যায়, সেই আশায়।
আজ, রবিবার ইডেনে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ ঘিরে টিকিটের হাহাকার যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে ম্যাচ ঘিরে উত্তেজনার পারদ। বিরাট-রোহিতদের চাক্ষুষ করতে শনিবার সকাল থেকেই ভিড় উপচে পড়েছে ইডেন চত্বরে। শনিবার সন্ধ্যায় ইডেনে ছিল ভারতীয় দলের অনুশীলন। আর অনুশীলনে আসা দলের তারকাদের সামনে থেকে দেখতে দুপুরেই হাবড়া থেকে চলে এসেছিলেন পাপাই রায়। বিরাটের ১৮ নম্বর লেখা জার্সি পরে এ দিন
ইডেনের সামনে পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল তাঁকে। বললেন, ‘‘অনেক চেষ্টা করেও টিকিট জোগাড় করতে পারিনি। তাই ভাবলাম, ম্যাচে না হোক, তার এক দিন আগেই সামনে থেকে কোহলিকে দেখে নেব। তাই সকাল-সকাল চলে এসেছি।’’ সকাল থেকে ইডেন চত্বরে ঘোরাঘুরি করছিলেন বারুইপুরের রত্নদীপও। তিনি বললেন, ‘‘ম্যাচের টিকিট আছে। আজ রাতে বন্ধুর বাড়িতে থাকব। কিন্তু ম্যাচের উত্তেজনায় আর ঘরে থাকতে পারছি না।’’
এই বিশ্বকাপে ভারত এখনও পর্যন্ত অপরাজিত রয়েছে। তাই কলকাতায় ভারতের প্রথম ম্যাচ ঘিরে ইডেন চত্বর যে ভাবে টগবগিয়ে ফুটছে, তাতে যে কারও মনে হতে পারে যে, কিছু ক্ষণ পরেই বুঝি খেলা শুরু হতে চলেছে। ইডেন চত্বরে ভিড় সামলাতে ব্যস্ত এক পুলিশকর্মীর কথায়, ‘‘সবাই আত্মহারা হয়ে গিয়েছেন মনে হচ্ছে। আগের দিনই এই অবস্থা, খেলা শুরুর আগে যে কী করবে!’’
শুধু শহর বা শহরতলির নয়, ভিন্ রাজ্যের বাসিন্দারাও ইতিমধ্যেই খেলা দেখার জন্য কলকাতায় পা রাখতে শুরু করেছেন। আগরতলা থেকে ছেলেকে নিয়ে এসেছেন মৌসুমী চক্রবর্তী। ময়দান চত্বরে ঘুরতে ঘুরতে তিনি বললেন, ‘‘ছেলেকে কথা দিয়েছিলাম। মাধ্যমিকে ভাল রেজ়াল্ট করলে ম্যাচ দেখাব। তাই দু’জনে চলে এসেছি। সোমবারই আবার ফিরে যাব।’’ স্টেডিয়ামে বসে ম্যাচ দেখার উত্তেজনায় কার্যত টগবগ করছেন বছর আঠারোর অগ্নিভ। মহারাষ্ট্র থেকে আসা দানিশ কুমার যদিও বলছেন, ‘‘এখানে এক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে আসার পরিকল্পনা করে টিকিট কেটে নিয়েছিলাম। আমার বলতে পারেন, রথ দেখা এবং কলা বেচা— দুটোই একসঙ্গে হয়ে গেল।’’
তবে, উত্তেজনার মধ্যে টিকিটের জন্য হাহাকার চলছেই গোটা ময়দান চত্বরে। অনেককেই দেখা গেল, এখনও আজকের ম্যাচের টিকিটের খোঁজ করছেন। কেউ কেউ কয়েক গুণ বেশি টাকা দিয়ে কিনতেও প্রস্তুত। বর্ধমান থেকে টিকিটের খোঁজে ময়দানে আসা এক যুবকের কথায়, ‘‘সব জিনিসের জন্য কি আর টাকার কথা ভাবলে চলে! এই সব ম্যাচের টিকিট পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। মাঠে বসে খেলা দেখা মানেই তো সারা জীবনের স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে। একটি টিকিট কেউ দিলে, যা চাইবে দিয়ে দেব আমি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy