প্রতীকী ছবি
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মেয়েকে নিয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ গেট দিয়ে পুজো মণ্ডপে ঢুকতে চেয়েছিলেন মা। কিন্তু অভিযোগ, সেই সুযোগ তো জোটেইনি, উল্টে জুটেছে নিরাপত্তাকর্মীর তির্যক মন্তব্য এবং খারাপ ব্যবহার। নিরাপত্তাকর্মীর বকুনি শুনে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ওই বালিকা মানসিক ভাবে রীতিমতো ভেঙে পড়ে। পরিস্থিতি এমনই হয় যে, শেষে ঠাকুর দেখার পরিকল্পনা বাতিল করে মেয়েকে ধাতস্থ করতে তাকে নিয়ে বাড়ি ফিরে যান মা। অভিযোগ, রবিবার সন্ধ্যায় নিউ আলিপুরের সুরুচি সঙ্ঘের মণ্ডপে ঢুকতে গিয়ে এমনই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন টালিগঞ্জের বাসিন্দা এক মহিলা। ঘটনার কথা তিনি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করতেই তা নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছেন নেটিজেনরা। সুমনা চক্রবর্তী নামে ওই মহিলা জানান, তিনি ওই ঘটনার কথা সোমবার সুরুচি সঙ্ঘের সমাজমাধ্যমের গ্রুপে পোস্ট করেন এবং কলকাতা পুলিশকেও মেসেজ করে জানান। সেই সঙ্গে যে নিরাপত্তাকর্মীর বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ, তাঁর ছবিও তিনি পোস্ট করেছেন।
সপ্তমীর সন্ধ্যায় কলকাতার বিভিন্ন মণ্ডপের মতো জনস্রোত নেমেছিল সুরুচি সঙ্ঘের পুজোতেও। সুমনা তাঁর পোস্টে দাবি করেছেন, তাঁর কাছে মণ্ডপে প্রবেশের ভিআইপি পাস ছিল। কিন্তু ভিআইপি গেট ছিল একটু দূরে। তখনই তিনি খেয়াল করেন, মূল প্রবেশদ্বারে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের প্রবেশাধিকারের সুযোগ থাকার পোস্টার দেওয়া রয়েছে। ভিআইপি গেট দূরে থাকায় তিনি ওই গেট দিয়ে মেয়েকে নিয়ে গিয়ে মূল প্রবেশদ্বার দিয়ে ঢুকতে চান। সুমনা নিজের পোস্টে বলছেন, ‘‘ওই প্রবেশদ্বারের এক স্বেচ্ছাসেবককে মেয়ের অটিজ়ম আছে বলায় তিনি আমাদের সেখান দিয়ে ভিতরে চলে যেতে বলেন। কিন্তু সেই সময়ে এক ব্যক্তি ছুটে এসে আমাদের আটকে দেন। কেন সেখান দিয়ে ঢুকছি, তা জানতে চেয়ে চিৎকার শুরু করেন। ওঁর চিৎকার শুনে মেয়ে ভয় পেয়ে কাঁদতে শুরু করে। আমি ওই ব্যক্তিকে বোঝানোর চেষ্টা করি যে, মেয়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। কিন্তু উনি তা মানতে চাননি, উল্টে ওই ভাবে ‘চালাকি করে’ মণ্ডপে ঢোকার চেষ্টা করছি বলে মন্তব্য করেন।’’
ঘটনার কথা শোনার পরে সুরুচি সঙ্ঘের উদ্যোক্তারা জানান, এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। তাঁরা জানান, মহিলা যদি এক বার তাঁদের ব্যাজ পরা কোনও স্বেচ্ছাসেবককেবিষয়টি জানাতেন, তবে তাঁকে ঠাকুর না দেখে ফিরতে হত না। ওই পুজোর সভাপতি কিংশুক মৈত্র বলেন, ‘‘আমার ছেলেও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন। তাই ওই মহিলার খারাপ লাগাটা আমি অনুভব করতে পারছি। আসলে ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক ধরনের নিরাপত্তা সংস্থাকে নিয়োগ করা হয়। হয়তো তাদেরই কেউ এমনটা ঘটিয়েছেন। মহিলা যদি তাঁর ছবি আমাদের সমাজমাধ্যমের পেজে পোস্ট করে থাকেন, তবে সেই ছবি-সহ বিষয়টি কমিটির সামনে আনা হবে। উনি যদি এক বার কষ্ট করে আমাদের কোনও স্বেচ্ছাসেবকের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন, তা হলে ওঁকে ফিরে যেতে হত না।’’
যদিও মহিলা জানান, ওই ঘটনার পরে তাঁর মেয়ে এতটাই বিমর্ষ হয়ে পড়ে যে, তাকে নিয়ে সেই সময়ে বাড়ি ফিরে যাওয়া ছাড়া দ্বিতীয় কোনও উপায় ছিল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy