মহম্মদ আতিক ওরফে জুবের।
পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে বড়দিনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিল বছর পাঁচেকের মহম্মদ আতিক ওরফে জুবের। পরিবারটি ময়দানের বিভিন্ন চত্বর ঘুরে অবশেষে ইডেন গার্ডেন্স উদ্যানে যায়। কিছুক্ষণ পরে বাড়ির সদস্যদের খেয়াল হয়, জুবের নেই। এর পরেই খোঁজ পড়ে শিশুটির। তার সন্ধানে ইডেন গার্ডেন্সের আশপাশ এবং একটি পুকুরেও তল্লাশি চালায় তার পরিবার। কিন্তু শিশুটিকে না পেয়ে পরিজনেরা থানায় যান। পরে পুলিশ ইডেন গার্ডেন্সে পৌঁছে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালিয়ে সেখানকার অন্য একটি জলাশয় থেকে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, জুবেরদের বাড়ি এস এন ব্যানার্জি রোডে। বড়দিন উপলক্ষে তার পরিবার বুধবার দুপুরে ঘুরতে গিয়েছিল। দুপুর ১টা নাগাদ জুবেরকে নিয়ে তাঁরা সকলে মিলে ইডেন গার্ডেন্সে যান। তার বাবা তনভির আলম ও মা জায়নাত বেগমও সঙ্গে ছিলেন। বড়দিনের আনন্দে মেতেছিলেন পরিবারের লোকজন। ঘণ্টাখানেক পরে জায়নাত লক্ষ করেন, ছেলে সঙ্গে নেই। এর পরে পরিবারের অন্য সদস্যেরাও জুবেরের খোঁজ করা শুরু করেন।
জায়নাত জানান, ইডেন গার্ডেন্সের ভিতরে দু’টি পুকুর রয়েছে। তিনি নিজে একটি পুকুরে নেমে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। সেই পুকুরটিতে হাঁটুজল ছিল। তবে সেখানে জায়নাত তাঁর ছেলেকে খুঁজে পাননি। এর পরেই পরিবারটি ময়দান থানায় ছোটে শিশুটির নিখোঁজের অভিযোগ দায়ের করতে।ময়দান থানার পুলিশ জানায়, পরিবারটি থানায় গিয়ে ঘটনার প্রসঙ্গে বলতেই ইডেন গার্ডেন্সে তাদের লোক পৌঁছে যান। দু’টি পুকুরের শিশুটির সন্ধানে তল্লাশি চালায় পুলিশ। যে পুকুরে জায়নাত তাঁর ছেলের খোঁজ করেন সেখানে তল্লাশি চালায় পুলিশও। কিন্তু সেখানে
কাউকে না পেয়ে দ্বিতীয় পুকুরে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। খানিক্ষণের মধ্যে পুকুর থেকে উদ্ধার হয় জুবেরের দেহ। এসএসকেএমে তাকে নিয়ে গেলে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।বৃহস্পতিবার জুবেরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছোট্ট শিশুর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ পরিবার এবং প্রতিবেশীরা। জায়নাতের অভিযোগ, ‘‘পুকুরটিতে পানা ভর্তি। তার উপরে সেটি জমির সঙ্গে প্রায় মিশে রয়েছে। ওখানে যে একটি পুকুর রয়েছে তা সহজে কেউ বুঝতে পারবেন না।’’ ইডেন গার্ডেন্সের নিরাপত্তাকর্মীদের ভূমিকা নিয়েও অভিযোগ করেছে জুবেরের পরিবার। জায়নাত জানান, বুধবার ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার জন্য জুবেরই জোরাজুরি করেছিল।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বরেই ইকো পার্কে পরিবারের নজরের বাইরে চলে গিয়ে সেখানকার একটি পুকুরে ডুবে মৃত্যু হয় একটি শিশুর। সেই ক্ষেত্রেও ইকো পার্কের ভিতরের ওই পুকুরটি শ্যাওলা ও পানায় এমন ভাবে ঢেকেছিল যে সেটির বিষয়ে কেউ ধারণা করতে পারেননি।ইডেন গার্ডেন্স দেখভাল করে রাজ্য বন দফতর।দু’টি পানায় ভর্তি পুকুর থাকা সত্ত্বেও দর্শকদের সে দিকে যাওয়া থেকে বিরত রাখার কোনও ব্যবস্থা নিরাপত্তাকর্মীরা করেননি কেন? এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেনি বন দফতর। মুখ্য বনপাল (উদ্যান) রাজু দাস বলেন, ‘‘এ পর্যন্ত ইডেন গার্ডেন্সে এমন দুর্ঘটনা ঘটেনি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা জায়গাটি ঘিরে দিয়েছি। লোকজনকে সতর্ক করতে ওখানে বোর্ড বসানো হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy