উদ্যোগ: নিজেদের তৈরি সার শনিবার গাছে দিচ্ছেন বহুতলের বাসিন্দারা। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
নিজেদের আবাসনে আনাজের খোসা এবং ব্যবহৃত পুজোর ফুল থেকে কেঁচোর মাধ্যমে জৈব সার তৈরির প্রকল্প কয়েক মাস আগে হাতে নিয়েছিলেন বাসিন্দারা। শনিবার চক গড়িয়ায় বাঘা যতীন রেল স্টেশনের কাছে বাইপাসের ধারে ওই বহুতলের আবাসিকেরা সেই জৈব সার নিজেদের আবাসনের উদ্যানে প্রথম বার ব্যবহার করলেন। আবাসনের বাগানে আটটি গাছ পোঁতার পরে তাতে দেওয়া হল ওই জৈব সার।
ঘটনার পরে জৈব এবং অজৈব বর্জ্য পৃথক করে এ ভাবে ‘কেঁচো-সার’ (ভার্মি কম্পোস্ট) তৈরি করতে শহরের অন্য আবাসনগুলি কী ভূমিকা নিচ্ছে তা নিয়েও কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
এ দিন ওই আবাসনে উপস্থিত কলকাতা পুরসভার জঞ্জাল দফতরের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘শহরের আবাসনে এই ধরনের দৃষ্টান্ত বিরল। তবে প্রতিটি আবাসনের আবাসিকেরা যদি উদ্যোগী হন, তা হলে জঞ্জাল অপসারণের ক্ষেত্রে অনেক সুবিধা হবে। এই পদ্ধতিতে তৈরি জৈব সার ফলনের পক্ষেও ভাল।’’ তিনি জানান, শহরের ২৭টি ওয়ার্ডেও বর্জ্যের পৃথকীকরণ করার কাজ দ্রুত শুরু হচ্ছে। পরে শহরের সমস্ত ওয়ার্ডেই ওই প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হবে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় বর্জ্য থেকে সাধারণ জৈব সার তৈরির প্লান্টও বসানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।
ওই বহুতলের আবাসিকেরা জানান, তাঁরা প্রতিদিনই বিভিন্ন ফ্ল্যাট থেকে আনাজের খোসা এবং পুজোর ফুল সংগ্রহ করে আবাসন চত্বরের এক জায়গায় জড়ো করে রাখেন। সেখানে একটি বিশেষ প্রজাতির কেঁচো ছাড়া হয়েছে। সেখানেই কেঁচোর মাধ্যমে জৈব সার তৈরি করা হচ্ছে। এই সার পরিবেশবান্ধব এবং তাতে কোনও রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় না। কার্বন ফুট-প্রিন্ট নেই বললেই চলে। কয়েক জন বাসিন্দার আন্তরিক প্রচেষ্টায় এই প্রকল্প সফল হয়েছে বলে তাঁদের দাবি।
‘ভার্মি কম্পোস্ট’ বা কেঁচোসার কী?
জীববিদ্যার শিক্ষক তথা গবেষক প্রসেনজিৎ দাঁ বলেন, ‘‘কেঁচোর মাধ্যমেই জৈব পচনশীল বর্জ্য থেকে এই সার তৈরি হয়। গ্রামাঞ্চলে ‘ভার্মি কম্পোস্টিং’-এর রেওয়াজ রয়েছে। পচনশীল জৈব পদার্থ খাওয়ায় কেঁচো থেকে প্রাপ্ত বর্জ্যকেই আমরা সার বলি। পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে এই সারে নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাশিয়ামের পরিমাণও ভাল থাকে।’’
ইতিমধ্যে শহরে অনেক বড় আবাসনই এই ব্যাপারে উৎসাহ দেখিয়েছে। প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডে একটি মল এবং আবাসনের তরফে ভূপিন্দর সিংহ বলেন, ‘‘ভার্মি কমপোস্টিং’ এর পরিকল্পনা করা হয়েছে। আবাসন এবং শপিং মলের কোথায় এই প্রক্রিয়াকরণ করা সম্ভব তার জন্য চত্বরের ভিতরেই জায়গা খোঁজা হচ্ছে।’’ নিউ টাউনে বহুতলগুলির আবাসিকদের একটি ফোরামের সদস্য সমীর গুপ্ত বলেন, ‘‘আমরা এই ব্যাপারে শুনেছি। এই ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে আবাসিকদের অবশ্যই অনুরোধ করব।’’ সল্টলেকের জিডি ব্লকের আবাসিকদের এক কর্মকর্তা কুমারশঙ্কর সাধু বলেন, ‘‘এই ধরনের প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়িত করার জন্য চেষ্টা করা হবে। যাঁরাই এই প্রকল্প করে থাকুন তা প্রশংসনীয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy