E-Paper

অ্যাডিনোর হানা ফুসফুসে, ৩৭ দিন ধরে একমোয় ছাত্রী

এক্স-রে করে দেখা যায়, মারাত্মক সংক্রমণ ছড়িয়েছে গোটা ফুসফুস জুড়ে। তার পর থেকে টানা ৩৭ দিন ধরে একমো সাপোর্টে থেকে বাঁচার লড়াই চালাচ্ছে ওই অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।

A Photograph representing a child suffering from fever

অ্যাডিনোভাইরাসের আক্রমণেই এমন সঙ্কটজনক অবস্থা হওয়ার আশঙ্কা সব চেয়ে বেশি। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৩ ০৫:৫৫
Share
Save

খুবই হালকা সর্দি, কাশি ছিল। তবে, জ্বর একেবারেই ছিল না। সেই অবস্থাতেই স্কুলে হাম-রুবেলার প্রতিষেধক নিয়েছিল অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীটি। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, ওই রাত থেকেই তার প্রবল জ্বর আসে। সঙ্গে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। এক্স-রে করে দেখা যায়, মারাত্মক সংক্রমণ ছড়িয়েছে গোটা ফুসফুস জুড়ে। তার পর থেকে টানা ৩৭ দিন ধরে একমো সাপোর্টে থেকে বাঁচার লড়াই চালাচ্ছে ওই ছাত্রী। এমন অবস্থার নেপথ্যে প্রতিষেধক দায়ী কি না, তা নিয়েই এখন সংশয়ে ওই কিশোরীর পরিবার।

বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে স্বাস্থ্য ভবনও। রবিবার বিষয়টি স্বাস্থ্যকর্তাদের নজরে আসে। পরে স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম বলেন, ‘‘প্রতিষেধক পরবর্তী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খতিয়ে দেখার জন্য যে দল রয়েছে, তারা এই বিষয়টিও পরীক্ষা করে দেখবে।’’ যদিও চিকিৎসকদের মত, বাগুইআটির বাসিন্দা ১৫ বছরের সুদেষ্ণা বসুর ফুসফুস প্রায় ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়ার নেপথ্যে প্রতিষেধকের ভূমিকা নেই। বরং তাঁরা জানাচ্ছেন, অ্যাডিনোভাইরাসের আক্রমণেই এমন সঙ্কটজনক অবস্থা হওয়ার আশঙ্কা সব চেয়ে বেশি। মুকুন্দপুরের যে বেসরকারি হাসপাতালে একমো (এক্সট্রা-কর্পোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজ়েনেশন) ব্যবস্থায় সুদেষ্ণা চিকিৎসাধীন রয়েছে, সেখানকার চিকিৎসকদীপাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এমআর ভ্যাকসিনের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে হয় না। ভর্তির পরে নিউমোনিয়ার কারণ খুঁজতে গিয়ে অ্যাডিনোভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। তাতেই অবস্থা এতটা সঙ্কটজনক হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।”

সল্টলেকের একটি স্কুলে পাঠরতা সুদেষ্ণা গত ১৯ জানুয়ারি হাম-রুবেলার প্রতিষেধক নিয়েছে। তার বাবা সুকান্ত জানাচ্ছেন, ওই রাতেই তীব্র জ্বর আসে মেয়ের। প্রবল কাশি ও শ্বাসকষ্টও হতে থাকে। ২১ জানুয়ারি এক্স-রে করতেই দেখা যায়, সুদেষ্ণার ফুসফুস মারাত্মক ভাবে সংক্রমিত হয়েছে। তখন বাগুইআটির একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ২৫ জানুয়ারি গভীর রাতে মেডিকা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সুদেষ্ণাকে। তার পর থেকেই কৃত্রিম ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার জন্য একমো ব্যবস্থায় রাখা হয়েছে তাকে। পরিজনেরা জানাচ্ছেন, একই দিনে প্রতিষেধক নিয়েছিল সুদেষ্ণার বোনও। দিন সাতেক পরে ষষ্ঠ শ্রেণির ওই পড়ুয়াও জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হয়। পরীক্ষায় দেখা যায়, সে-ও অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত। তবে ওই কিশোরী এখন সুস্থ।সুদেষ্ণার বাবা, পেশায় বিমা সংস্থার এজেন্ট সুকান্তর কথায়, ‘‘এমআর প্রতিষেধকের জন্যই এমন হয়েছে, তা নিশ্চিত ভাবে বলছি না। কিন্তু সেটা নেওয়ার পরেই দুই মেয়ে অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হল। তাই সংশয় হচ্ছে। যদিও ওই প্রতিষেধক নেওয়ারও দরকার ছিল।” তিনি আরও বলেন, “প্রায় ৪৫ লক্ষ টাকা বিল হয়ে গিয়েছে। অতিকষ্টে ১৮ লক্ষ জোগাড় করেছি।’’ চিকিৎসকদের একাংশের মতে, হাম-রুবেলার প্রতিষেধক নেওয়ার পরে অসুস্থ হওয়ার বিষয়টি কাকতালীয়। সুদেষ্ণা ও তার বোন আগে থেকেই অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। প্রতিষেধক নেওয়ার পরে সেই সংক্রমণের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছে সুদেষ্ণা। রাইলস টিউবে খাচ্ছে। ইশারায় মনের ভাব ব্যক্ত করছে। এখনও ২০শতাংশ মতো একমো-নির্ভরতা রয়েছে তার। কবে সে পুরোপুরি তা থেকে বেরোতে পারবে, সেই অপেক্ষায় পরিজনেরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Adenovirus Respiratory Problem

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।