জাতীয় পরিবেশ আদালত। —ফাইল চিত্র।
বাগজোলা ও কেষ্টপুর খালের দূষণ দেখে ২০১৭ সালে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছিল জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চ। খালের দূষণ নিয়ন্ত্রণে একাধিক নির্দেশ দেওয়ার পরে শেষ পর্যন্ত সেই মামলার নিষ্পত্তি হয় ২০২২ সালের মে মাসে। খালের দূষণ নিয়ন্ত্রণের কাজ ঠিক মতো হচ্ছে কি না, সে ব্যাপারে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে তদারকির দায়িত্ব দিয়েছিল আদালত। সেই সঙ্গে ‘অ্যাকশন টেক্ন রিপোর্ট’ দাখিল করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। সেই রিপোর্ট রাজ্যের তরফে জমাও দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি বলছে, তার পরেও ওই দুই খালের অবস্থার বিন্দুমাত্র পরিবর্তন হয়নি। পরিবেশ আদালতের নির্দেশের পরেও খালের দূষণ একই ভাবে হয়ে চলেছে। তারই পরিপ্রক্ষিতে ফের পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চে মামলা দায়ের হয়েছে। যার প্রথম শুনানি ছিল বৃহস্পতিবার।
মামলার আবেদনে জানানো হয়েছে, খালের মধ্যে যত্রতত্র আবর্জনা, ময়লা ছুড়ে ফেলা
চলছেই। শুধু খালের মধ্যেই নয়, তার দু’পাড়েও জঞ্জাল স্তূপীকৃত হয়ে রয়েছে। বিভিন্ন নিকাশি নালার মাধ্যমে তরল বর্জ্য গিয়ে সরাসরি মিশছে ওই খালে। অস্থায়ী শৌচাগারও গড়ে উঠেছে দু’টি খালেরই পাড়ে। সেই সঙ্গে দখলদারির চেনা উৎপাত তো রয়েছেই। তবে শুধু ছোটখাটো নিকাশি নালা নয়, বড় নিকাশি পাইপলাইনের মাধ্যমেও অপরিশোধিত তরল বর্জ্য খালে গিয়ে পড়ছে। যার ফলে খালের জলের রংই বদলে গিয়েছে। পরিবেশ আদালতের নির্দেশের পরেও কী ভাবে খালের এই দুরবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে, তা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
তথ্য বলছে, বাগজোলা ও কেষ্টপুর খালের দৈর্ঘ্য যথাক্রমে ৩৮ ও ৩৪ কিলোমিটার। এর আগের বার মামলার ক্ষেত্রে জানা গিয়েছিল, বাগজোলা খালে ২১৬টি এবং কেষ্টপুরে ৫৭টি নালা গিয়ে পড়েছে। যার মাধ্যমে কলকাতা, বিধাননগর, দক্ষিণ দমদম, উত্তর দমদম পুরসভার একাংশ ছাড়াও পানিহাটি, বরাহনগর, কামারহাটি, এনকেডিএ-সহ একাধিক পুর এলাকার তরল বর্জ্য খালের জলের দূষণ বাড়িয়ে তুলছে ক্রমাগত। অবশ্য শুধু তরল বর্জ্যই নয়, কঠিন বর্জ্যের জেরেও সমান ভাবে দূষিত ওই দুই খাল। এই দুরবস্থা দেখেই প্রায় ছ’বছর আগে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছিল খাস পরিবেশ আদালতই। সে বার পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তকে আদালতবান্ধব হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছিল।
ঘটনাচক্রে, সুভাষ দত্তই বর্তমান মামলার আবেদনকারী। তিনি জানাচ্ছেন, দূষণকারী এবং দূষণের উৎস চিহ্নিতকরণের জন্য পরিবেশ আদালত সিসি ক্যামেরা বসানোর নির্দেশ দিয়েছিল। সেই সঙ্গে একটি টাস্ক ফোর্সও তৈরি করতে বলেছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণের রূপরেখা তৈরির জন্য। ‘‘কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, এর কোনওটিই করা হয়নি। করা হলে পরিবেশ আদালতের নির্দেশের পরেও খালের এই দুরবস্থা থাকতে পারে না।’’— আক্ষেপ তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy