রুনু পাল।
বাড়ির পাশের কুয়ো থেকে উদ্ধার হল এক মহিলার দেহ। মঙ্গলবার, হরিদেবপুর থানা এলাকারএম জি রোডে। ওই মহিলা সোমবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন বলে তাঁর পরিবারের সদস্যেরা জানিয়েছেন। এ দিন সকালে কুয়োর জলে মহিলাকে ভাসতে দেখে পরিজনেরাই থানায় খবর দেন। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠালে মৃত ঘোষণা করা হয়। মৃতার নাম রুনু পাল (৫৩)। প্রশ্ন উঠেছে, নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও কলকাতার মতো শহরে কুয়ো কী ভাবে থাকে? পুরসভা কেন ব্যবস্থা নেয় না?
মৃতার পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, বছর দুয়েক আগে রুনুর বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের দিনকয়েকের মধ্যেই তিনি নিজের পরিবারে ফিরে আসেন। তার পর থেকে তাঁর শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল না। পুলিশ সূত্রের খবর, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই মহিলা পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল।
রুনুর পরিবারের দাবি, সোমবার সকাল থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। দীর্ঘক্ষণ দেখতে না পেয়ে পরিজনেরা চার দিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। আশপাশে থাকা আত্মীয়ের বাড়িতেও খোঁজ নেওয়া হয়। কিন্তু খবর না পেয়ে সোমবার বিকেলেই হরিদেবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। মৃতের আত্মীয় রোমি পাল বলেন, ‘‘এর আগেও দু’-এক বার না বলে বেরিয়ে কখনও আত্মীয়ের বাড়িতে, কখনও এ দিক-ও দিক চলে গিয়েছিল রুনু। এমনটা হয়েছে ভেবেই আত্মীয়দের বাড়িতে খোঁজ করি। ওখানে না পেয়ে পুলিশকে জানানো হয়।’’
মঙ্গলবার সকালে কুয়ো থেকে জল তুলতে গিয়ে রুনুকে দেখতে পান পরিবারের সদস্যেরা। তাঁরাপুলিশে খবর দেন। ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় থানা, দমকল এবং বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা। দেহ উদ্ধার করে বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।পুলিশের অনুমান, কোনও ভাবে কুয়োয় পড়ে যাওয়ায় মৃত্যু হয়েছে মহিলার। ময়না-তদন্তের পরেই মৃত্যুর আসল কারণ স্পষ্ট হবে বলে জানান তদন্তকারীরা।
১৯৮০ সাল থেকে শহরে পাতকুয়োর ব্যবহার আইনত নিষিদ্ধ। তার পরেও এত বছর এই কুয়ো কী ভাবে থাকে? পুর কর্তৃপক্ষ কেন ব্যবস্থা নেন না? স্বভাবতই এই ঘটনায় উঠে আসছে এই সব প্রশ্ন। পুরসভার জল সরবরাহদফতরের এক আধিকারিকের যুক্তি, ‘‘শহরের যে সব ওয়ার্ডে কুয়ো রয়েছে, সেগুলি ১৯৮০ সালের বেশি পুরনো। পুরসভা নতুন কুয়োর অনুমোদন দিচ্ছে না।’’ আবার সংযুক্ত এলাকার একাধিক কাউন্সিলরের দাবি, ‘‘এই সব এলাকায় পানীয় জলের জোগান চাহিদার তুলনায় অনেক কম। তাই বাধ্য হয়ে পাতকুয়োর জল ব্যবহার করা হয়।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, এক সময়ে মূল কলকাতায় ওয়ার্ড ছিল ৭৫টি। সেই সময়ে পুরসভার পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহ শুরু হওয়ায়শহরে পাতকুয়োর ব্যবহার কমে গিয়েছিল। পরে যাদবপুর, বেহালা, গার্ডেনরিচ ও জোকার মতো এলাকা কলকাতা পুরসভার অন্তর্গত হলে সমস্যা বাড়ে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, বর্তমানে সংযুক্ত এলাকায় পাতকুয়োর ব্যবহার বেশি। যদিও এই মুহূর্তে কতগুলি পাতকুয়ো রয়েছে, তার হিসেব পুরসভার কাছে নেই। শহরে কোথায় কত পাতকুয়ো রয়েছে, সেই তালিকা তৈরি হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy