Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Mysterious Death

বড়বাজার থেকে উদ্ধার রক্তাক্ত যুবকের মৃত্যু, কারণ নিয়ে ধন্দ

আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি শচীনের বন্ধু সোনু সিংহ। প্রাথমিক তদন্তেপুলিশের অনুমান, মদের আসরে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে।

A Photograph of Sachin Roy who is dead

মৃত শচীন রায়ের (বাঁ দিকে)। তাঁর পরিজন এবং স্থানীয়দের জমায়েত বড়বাজার থানার সামনে (ডান দিকে)। রবিবার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৩ ০৫:২৭
Share: Save:

বাড়ি ফিরতে দেরি হবে বলে স্ত্রীকে ফোনে জানিয়েছিলেন যুবক। ঘণ্টা দুয়েক পরেও বাড়ি না ফেরায় বার বার ফোন করতে থাকেন স্ত্রী। কোনও উত্তর না পেয়ে বাড়ির বাকিদের জানান তিনি। এর পরে খোঁজাখুঁজি শুরু হতেই বড়বাজারের নেতাজি সুভাষ রোড সংলগ্ন গলি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় যুবকের পড়ে থাকার সংবাদ আসে। রাতেই হাসপাতালে গিয়ে পরিজনেরা জানতে পারেন, মৃত্যু হয়েছে ওই যুবকের। বড়বাজার থানা এলাকায় শনিবার রাতের এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম শচীন রায় (৩২)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি শচীনের বন্ধু সোনু সিংহ। প্রাথমিক তদন্তেপুলিশের অনুমান, মদের আসরে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের ফলেই এই ঘটনা ঘটেছে। তবে সেখানে মারধর, না কি হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে যুবকের মৃত্যু হয়েছে— তা তদন্ত করে দেখছেপুলিশ। ইতিমধ্যেই কয়েক জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয়েছে।

তদন্তকারীরা জানান, হাওড়া ময়দান সংলগ্ন কালীকুণ্ডু লেনের বাসিন্দা শচীনের স্ট্র্যান্ড রোডে কুরিয়র সার্ভিসের ব্যবসা চালাতেন। তাঁর বাড়িতে রয়েছেন বাবা-মা, স্ত্রী ও দুই সন্তান। আহত সোনু বড়বাজার এলাকাতেই কাজ করতেন। প্রতিদিন রাত করে বাড়ি ফিরতেন শচীন। শনিবার রাতে স্ট্র্যান্ড রোড সংলগ্ন গলি থেকে শচীনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বড়বাজার থানার পুলিশ। কিছুটা দূরেই রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন সোনু। তাঁর মাথা, মুখ-সহ শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। দু’জনকে উদ্ধার করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে শচীনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। শচীনের পরিবারের তরফে বড়বাজার থানায় খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে নারাজ লালবাজার।

অভিযোগ, নেতাজি সুভাষ রোড সংলগ্ন জেসপ বিল্ডিংয়ের পাশে প্রায়ই মদের আসর বসে। মাঝেমধ্যেই সেখানে বাইরে থেকে যুবকেরা আসতেন বলে দাবি স্থানীয়দের। বাসিন্দাদের সঙ্গে এ নিয়ে আগেও একাধিক বার বচসা হয়েছে অভিযুক্তদের। এমনকি বড়বাজার থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছিল বলেও তাঁদের দাবি। ওই এলাকার কাছ থেকেই দুই যুবককে উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জেনেছে, ঘটনার রাতেও নেতাজি সুভাষ রোড সংলগ্ন এলাকায় মদের আসর বসেছিল। সেখানেই সোনু-সহ আরও কয়েক জনকে নিয়ে গিয়েছিলেন শচীন।

সেই আসর চলাকালীন অন্য গোষ্ঠীর কয়েক জনের সঙ্গে বিবাদ শুরু হয় বলে দাবি। বিবাদ চলাকালীন যুবকদের বেধড়ক মারধর করা হয় বলে মনে করছে পুলিশ। তবে গোটা বিষয়টিতে নিশ্চিত হতেইতিমধ্যেই এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা শুরু করেছে পুলিশ। কথা বলা হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও।

এ দিকে, মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ওই যুবককে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। শচীনের বাবা সুশীলকুমার রায়ের অভিযোগ, ‘‘হাসপাতালে গিয়ে আমরা দেখি, ছেলের মুখ দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। খুন করা হয়েছে ছেলেটাকে।’’ একই অভিযোগ শচীনের স্ত্রী প্রিয়াঙ্কারও। তদন্তকারী এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সব দিক খোলা রেখেই তদন্ত করা হচ্ছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলে যুবকের মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Mysterious death police investigation Bara Bazar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE