Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সাইবার থানার চাপ কমাতে আটটি ল্যাব

লালবাজারের এক পদস্থ কর্তা জানান, প্রতি মাসে গড়ে সাতশো থেকে সাড়ে সাতশো অভিযোগ সাইবার থানা এবং ব্যাঙ্ক জালিয়াত দমন শাখায় জমা পড়ছে। তার মধ্যে বেশির ভাগই ফেসবুকে মহিলাদের কুপ্রস্তাব দেওয়া বা অপমান করা এবং ছবি জালিয়াতি সংক্রান্ত ঘটনা।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

কুন্তক চট্টোপাধ্যায় ও শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৪৪
Share: Save:

কলকাতা পুলিশের এলাকা বেড়েছে। তার সঙ্গেই দিনদিন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে লালবাজারের সাইবার থানার উপর থেকে মামলার ভার কমাতে বিকেন্দ্রীকরণের পথে হাঁটতে চাইছে কলকাতা পুলিশ। লালবাজারের খবর, বিকেন্দ্রীকরণের অঙ্গ হিসেবে শহরের আটটি পুলিশ ডিভিশনে আটটি সাইবার ল্যাবরেটরি গড়ে তোলা হচ্ছে। ছোটখাটো মামলার ক্ষেত্রে থানার ওসি বা অতিরিক্ত ওসি-কেই তদন্তের ভার নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে। কারণ, তথ্যপ্রযুক্তি আইনে ইনস্পেক্টর পদের নীচের কোনও আধিকারিক তদন্তকারী অফিসার হতে পারেন না।

লালবাজারের এক পদস্থ কর্তা জানান, প্রতি মাসে গড়ে সাতশো থেকে সাড়ে সাতশো অভিযোগ সাইবার থানা এবং ব্যাঙ্ক জালিয়াত দমন শাখায় জমা পড়ছে। তার মধ্যে বেশির ভাগই ফেসবুকে মহিলাদের কুপ্রস্তাব দেওয়া বা অপমান করা এবং ছবি জালিয়াতি সংক্রান্ত ঘটনা। এ ছাড়াও রয়েছে ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) হাতিয়ে প্রতারণার মতো অভিযোগ। প্রতি মাসে এত অভিযোগ একটি থানার ঘাড়ে চলে আসায় তদন্তে দেরি হচ্ছে। কিন্তু এই তদন্তগুলির জন্য থানার আধিকারিকেরাই যথেষ্ট। ওই পুলিশকর্তা জানান, সাইবার অপরাধের তদন্তের জন্য প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো দরকার। তাই সাইবার ল্যাবরেটরি তৈরি করা হবে। থানার অফিসারদের তদন্তে প্রযুক্তিগত ভাবে সাহায্য করবেন ল্যাবে নিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকেরা। ‘‘ইতিমধ্যেই দক্ষিণ শহরতলি ও বন্দর ডিভিশনে এই ল্যাব চালু হয়েছে,’’ বলছেন ওই পুলিশকর্তা।

লালবাজারের কর্তাদের দাবি, বিকেন্দ্রীকরণের ফলে নাগরিকদেরও সুবিধা হবে। কারণ, সাইবার অপরাধ হলেই বেশির ভাগ সময়ে লালবাজারে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে হয়। বিকেন্দ্রীকরণ হলে কলকাতা পুলিশের আওতাধীন স্থানীয় থানাতেই অভিযোগ জানানো যাবে। দক্ষিণ শহরতলি ও বন্দর ডিভিশনের থানাগুলির মতো বাকি থানাও অন্যের মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজেরাই তদন্ত চালাতে পারবে।

পুলিশ জানায়, সাইবার অপরাধের ক্ষেত্রে অনেক সময়েই অভিযুক্তের পরিচয় চট করে জানা যায় না। তার ইন্টারনেট প্রোটোকল অ্যাড্রেস জানার জন্য হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুকের মতো বিভিন্ন বিদেশি সংস্থার সাহায্য লাগে। সেই কাজগুলির ক্ষেত্রে সাইবার ল্যাবের আধিকারিকেরা থানাকে সাহায্য করতে পারবেন। ইতিমধ্যেই এটিএম প্রতারণা ঠেকানোর জন্য সাইবার সেফ প্রকল্পে প্রতিটি থানায় এক জন করে অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তদন্তের জন্য। এ ক্ষেত্রে সাইবার ল্যাব ওই অফিসারদের অনেকটা সাহায্য করবে বলে দাবি গোয়েন্দাদের একাংশের।

পুলিশের এক কর্তা জানান, থানার আধিকারিকেরাও যে সাইবার অপরাধের তদন্তে পারদর্শী, তার প্রমাণ মিলেছে। সম্প্রতি টালা এলাকার এক কিশোরীর ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি নিয়ে ইনস্টাগ্রামে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল এক যুবকের বিরুদ্ধে। টালা থানার অতিরিক্ত ওসি সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি দল বিদেশি সংস্থার কাছ থেকে তথ্য জোগাড় করে মধ্যপ্রদেশের ভোপাল থেকে অভিযুক্তদের পাকড়াও করে। লালবাজারের দাবি, সাইবার অপরাধের তদন্তের পাঠ ইতিমধ্যেই আধিকারিকদের দেওয়া হয়েছে।

প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে লালবাজারের সাইবার থানা কী করবে? পুলিশের দাবি, যেমন ভাবে গুরুতর অপরাধের তদন্ত গোয়েন্দা বিভাগকে দেওয়া হয়, ঠিক সে ভাবেই যে অপরাধগুলির গুরুত্ব বেশি, সেগুলির ভার সাইবার থানাকে দেওয়া হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন ডিভিশনকে প্রয়োজনে সাহায্য ও পরামর্শ দেবে সাইবার থানা। যাতে তাঁরা দ্রুত এবং ঠিক ভাবে তদন্ত করতে পারেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Cyber Police Station Lalbazar Kolkata Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy