এই পোস্টার পড়েছে হরিদেবপুর এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
দক্ষিণ কলকাতার উপকণ্ঠে পোস্টারের ছড়াছড়ি। বাসে, ট্রেনে, দেওয়ালে— সর্বত্র একই ঘোষণা। শিশু দত্তক পাওয়ার সেই টোপ দিয়েই প্রতারণার কারবার ফুলেফেঁপে উঠেছিল কিছু দিন ধরে। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে অনেক নিঃসন্তান দম্পতিই সেই ফাঁদে পা দিচ্ছিলেন। বিজ্ঞাপন চোখে পড়ায় স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়েই তদন্তে নামে হরিদেবপুর থানার পুলিশ, এবং স্ত্রী ও শ্যালিকা-সহ এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। ওই জালিয়াতেরা শিশুপিছু চার লক্ষ টাকা পর্যন্ত অনুদান হাঁকছিল বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম রঞ্জিত দাস, তার স্ত্রী মাধবী রায় ও শ্যালিকা সুপ্রিয়া। বুধবার রাতে দত্তক নেওয়ার ঘোষণা সংক্রান্ত নথি-সহ রঞ্জিতকে পুলিশ গ্রেফতার করে। কবরডাঙার মোড়ে দত্তক নেওয়ার একটি পোস্টার দেখেই পুলিশের প্রথমে সন্দেহ হয়। জনৈক সাব-ইনস্পেক্টর এ বিষয়ে ওসি-র দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তাঁর খেয়াল হয়, এ ভাবে তো দত্তক নেওয়া যায় না। তখনই পোস্টারের মোবাইল নম্বরের গতিবিধি অনুসরণ করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। জানা গিয়েছে, শিশু দত্তক পাইয়ে দেওয়ার নাম করে অনেকের কাছ থেকেই অনুদান হিসাবে টাকা নিয়েছে অভিযুক্তেরা। ‘শ্রী রামকৃষ্ণ নতুন জীবন দান সেবাশ্রম’ নামে একটি সংস্থা খুলে কারবার জমে উঠেছিল তাদের। হরিদেবপুর এলাকাতেই সংস্থাটির অফিসে দত্তক নেওয়ার অসংখ্য আবেদনপত্র পেয়েছে পুলিশ। জনৈক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘দত্তক নিতে গিয়ে কারা প্রতারিত হলেন, তার খোঁজখবর চলছে। বিজ্ঞাপনের ধরন দেখে সন্দেহ হওয়ায় স্বতঃপ্রবৃত্ত ভাবে (সুয়ো মোটো) একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।’’
তবে স্থানীয় পুলিশের বক্তব্য, দত্তক দেওয়ার জন্য একটি শিশুও হাতে ছিল না প্রতারকদের। শিশু এনে দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে তারা উধাও হয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। পুলিশি সূত্রের খবর, মূল অভিযুক্ত, ৪৬ বছরের রঞ্জিত ট্যাক্সি চালাত। পরে শরীরকে বিষক্রিয়ার প্রভাবমুক্ত করার বিচিত্র ওষুধ তৈরির কারবারও ফেঁদে বসে সে। অবশেষে দত্তক দেওয়ার নামে লোক ঠকানোর কারবারে হাত পাকিয়েছিল।
লালবাজারের কর্তারা বলছেন, যে কোনও সংস্থা ইচ্ছে মতো দত্তক দেওয়ার কাজে যুক্ত হতে পারে না। সমাজকল্যাণ দফতরের স্বীকৃত কয়েকটি হোম থেকেই নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে শিশু দত্তক নেওয়া চলে। দত্তক নেওয়ার আবেদনের জন্য নির্দিষ্ট একটি দফতরে আর্জি জানিয়ে তার পরেই শিশু দত্তক মেলে। এ ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের পোস্টারে বড় হরফে লেখা ছিল ‘সাংবিধানিক’ শব্দটি। তলায় লেখা, ‘যোগাযোগ সহযোগিতা আমরাই করব’। পুলিশের বক্তব্য, তদন্তে এখনও পর্যন্ত দত্তক দেওয়ার জন্য অনুমোদিত কোনও সংস্থার সঙ্গে তাদের যোগাযোগের প্রমাণ দিতে পারেনি অভিযুক্তেরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy