দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনে থিকথিকে ভিড়। বৃহস্পতিবার সকালে। নিজস্ব চিত্র।
‘দাদা, ধর্মতলা কত ভাড়া? আড়াইশোটা দেবেন!’ শুনেই চমকে উঠেছিলেন কাউন্টারে বসা কর্মী। দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে তখন গিজগিজ করছে কালো মাথা। অধিকাংশের বুকে সেফটিপিন দিয়ে ঝুলছে ‘ধর্মতলা চলো’ লেখা ব্যাজ।
তাঁদেরই এক জনের থেকে ধর্মতলা যাওয়ার ২৫০টি টিকিট কাটার কথা শুনে সাময়িক ভাবে হকচকিয়ে গেলেও, পরে সামলে নিয়ে টোকেন দিতে শুরু করেন কর্তব্যরত মেট্রোকর্মী। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শহরের দুইকালীতীর্থ, দক্ষিণেশ্বর এবং কালীঘাট মেট্রো স্টেশনে এমন ভাবেই উপচে পড়েছিল জেলা থেকে আসা তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের ভিড়। সকাল ১০টা নাগাদ দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনে দাঁড়িয়ে নিজস্বী তুলছিলেন জামালপুরের শেখ মইদুল ও সঙ্গীরা। বললেন, ‘‘একটু মন্দিরের চার পাশের বাগান ঘুরে দেখলাম।’’ শুধু ওই যুবকেরাই নন। জামালপুরের আর এক বাসিন্দা আনন্দ টুডু জানালেন, সকালে কালীঘাট ঘুরে দক্ষিণেশ্বর চলে এসেছেন। সংশয় প্রকাশ করে বললেন, ‘‘টিকিট কাটার এত বড় লাইন। দেরি হয়ে যাবে না তো?’’
ঘড়িতে তখন পৌনে ১২টা। কালীঘাট মেট্রোর দিকে এগোচ্ছিল মহিলা-পুরুষদের একটি দল।কয়েক জন বললেন, ‘‘দিদির বক্তৃতা তো শুরু হয়ে যাবে। কখন পৌঁছব?’’ শুনে দলের এক জনের সহাস্য মন্তব্য, ‘‘মিটিংয়ের জন্যই তো কলকাতায় এসেছি। একটু মন্দির ঘুরব না?’’ দক্ষিণেশ্বর ও কালীঘাট, দুইস্টেশনেই মাইকে বারংবার ঘোষণা করা হয়েছে, ‘সকলে একসঙ্গে ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করবেন না। ভিড় বেশি হলে দরজা বন্ধ করতে সমস্যা হবে।’ কিন্তু কে শোনে কার কথা! ‘দিদি’কে দেখতে যাওয়ার তাড়ায় একই রকম ভাবে হুড়োহুড়ি চলেছে।
সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৭টা থেকে দুপুর সাড়ে তিনটে পর্যন্ত দক্ষিণেশ্বর মেট্রো স্টেশনে ৬২০০ জন স্মার্ট কার্ড দিয়ে ঢুকেছেন। টোকেন দেওয়া হয়েছে ১০ হাজার। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত কালীঘাট মেট্রো স্টেশনে ১৪,১৭৫ জন যাত্রী হয়েছে। অন্য দিকে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরকর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, প্রতিদিন গড়ে সেখানে আসেন ৩০-৩৫ হাজার দর্শনার্থী। এ দিন এসেছিলেন তার প্রায় তিন গুণ।
পা ফেলার জায়গা ছিল না কালীঘাটেও। তবে, বেশির ভাগই পুজো দেওয়ার বদলে শুধু দর্শন করে চলে গিয়েছেন। মাঝে ধর্মতলাকে রেখে দু’দিকের দুই কালীক্ষেত্র ভ্রমণে বেরিয়ে এ দিন নিখোঁজও হয়েছেন অনেকে। কেউ ভুল করে নেমে পড়েছেন আগের স্টেশনে। কেউ আবার নামেননি।
এ দিন সভা ভাঙতেই স্ত্রী অঞ্জলি সাহার হাত ধরে কার্যত দৌড়চ্ছিলেন আলিপুরদুয়ারের কার্তিক সাহা। এসপ্লানেড মেট্রোর এক নম্বর গেটে ঢোকার সময়ে বললেন, ‘‘এ বার মা কালীর দর্শন করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy