১৬ ফেব্রুয়ারি দিনটা ২১ বছরের রূপকথা রুদ্রের জন্য আর পাঁচটা দিনের থেকে বেশ অন্য রকম ছিল। বসন্তের শুরুতে এই দিনেই শহরের বুকে আইসিসিআর-এর বেঙ্গল গ্যালারির অন্দরে দরজা খোলে তাঁর প্রথম একক প্রদর্শনী। ১৬ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি, তিন দিনের জন্য সেই প্রদর্শনী দেখতে ছুটে এসেছিলেন শহরের নানা প্রান্তের মানুষ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিড় জমিয়েছিলেন ছবির সমঝদাররা। অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথি হিসাবে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা। পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন নামজাদা গায়ক শ্রীকান্ত আচার্য, অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অভিনেতা-কাহিনিকার পদ্মনাভ দাশগুপ্ত এবং আলোকচিত্রী প্রতাপ দাসগুপ্ত।
১৬ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার, বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ শুরু হয় এই নতুন পথচলা। পাঁচ বছর বয়সে যে রূপকথা মায়ের ক্যামেরা হাতে তুলে নিয়ে বিষ্ণুপুরে মন্দিরের ছবি লেন্সবন্দি করেছিলেন, নানা ঘরানার মিশেলে তাঁরই তোলা প্রায় ১৩৫টি চোখ ধাঁধানো ছবি নিয়ে হল প্রদর্শনীর উদ্বোধন।
প্রদর্শনীর সূচনা করে সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা বলেন, “এই রকম উদ্যোগ খুবই দরকারি। সমাজে এই রকম সুন্দর সৃষ্টির হাত ধরে আরও বেশি করে নবীন প্রজন্ম এগিয়ে আসুক। তারাও যোগ দিক অন্য ধারার ভাবনায়, এটাই চাই।”
রূপকথাকে আশীর্বাদে ভরিয়ে গায়ক শ্রীকান্ত আচার্য বলেন, “ওকে আমি ছোটবেলা থেকে চিনি, ছোট থেকেই নানা ধরনের সৃষ্টির দিকে ওর ঝোঁক খুব। আমি সাধুবাদ জানাই রূপকথার অভিভাবকদেরও। তাঁরা ওর পছন্দের জায়গাটি চিনে আরও উৎসাহ দিয়েছেন তাকে। আমি অন্যান্য ছোট ছেলেমেয়ে ও নবীন শিল্পী সত্ত্বাদের অভিভাবকদের কাছে আর্জি জানাব মোবাইল ফোনের বদলে তাদের হাতে ক্যামেরা তুলে দিন।”
পোর্ট্রেট থেকে ল্যান্ডস্কেপ, কিংবা ফ্যাশন শ্যুট, মানবিক ভাবাবেগ, সব রকমের ছবি নিয়েই রূপকথার এই প্রদর্শনী। অতিথিদের চোখে ধরা পড়ছিল অন্য ধাঁচের ছবির গল্পগুলি। কোনও ছবির পিছনে রয়েছে কোনও বিশেষ বার্তা, কোনও ছবি আবার শুধুই নান্দনিক কারণে প্রকাশিত।
প্রদর্শনী ঘুরে দেখে মুগ্ধ জনপ্রিয় অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায় উঠে এল স্মৃতিচারণের আভাস। বললেন, “একটা সময়ে আমার নিজেরও ক্যামেরার প্রতি অন্য রকম টান ছিল। পেশাগত কারণে ক্যামেরার অবস্থান, আলো এবং আরও নানা কারুকাজের প্রতি ওয়াকিবহাল থাকতেই হয়। আর যখন দেখি পাশেই মাত্র ২১ বছর বয়সে একটি মেয়ে নিজের একক প্রদর্শনী করার মতো এত বড় পদক্ষেপ নিয়েছে, এবং নিজের সুন্দর কাজগুলি সবার সামনে তুলে ধরছে, খুব ভাল লাগে।”
অভিনেতা-কাহিনিকার পদ্মনাভ দাশগুপ্তর মতে, “এতটুকু বয়সে এত সুন্দর দেখার চোখ এবং এত নিপুণ হাতে তোলা ছবির সম্ভার সত্যিই অবাক করে। আমি নিজেও ঘুরে দেখেছি সবটা আর আশ্চর্য হয়েছি ওর প্রতিভা দেখে।”
তিন দিনের এই কর্মকাণ্ডে রূপকথার ভূমিকাও ছিল দেখার মতো। নিজের মতো করে সকলকে নানা ছবির গল্প বুঝিয়ে দিয়েছেন। আবার তাঁর সমবয়সী বা আরও ছোটদের ছবি তোলায় এগিয়ে আসতে সাহসও জুগিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy