Advertisement
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪
Death

বারণ না শুনে ঝড়বৃষ্টিতে পথে, পুকুরে স্কুটার পড়ে মৃত দুই

বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান তানিশ স্থানীয় একটি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। এ দিন তানিশের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, তার বাবা-মা বার বার সংজ্ঞা হারাচ্ছেন।

তানিশ প্রসাদ এবং অমিত কুমার সিংহ।

তানিশ প্রসাদ এবং অমিত কুমার সিংহ। Sourced by the ABP

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০২৪ ০৭:১৮
Share: Save:

মুষলধারে বৃষ্টিপাতের সঙ্গে তখন ঘন ঘন বাজও পড়ছে। ওই পরিস্থিতিতে পরিবারের বারণ না শুনেই স্কুটার নিয়ে বাড়ির কাছে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন এক যুবক ও এক কিশোর। তার পরে আর তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারলেন না। সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ দ্রুত গতিতে চলা তাঁদের স্কুটার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সোজা পুকুরে গিয়ে পড়ে। প্রায় দু’ঘণ্টার চেষ্টায় দু’জনকে উদ্ধার করে এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম অমিতকুমার সিংহ (২২) ও তানিশ প্রসাদ (১৫)।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বেহালার বড়িশার কৈলাস ঘোষ স্ট্রিটের একটি আবাসনে বাড়ি দশম শ্রেণির পড়ুয়া তানিশের। সেখানেই পিসেমশাইয়ের বাড়িতে মাস দুয়েক আগে উত্তরপ্রদেশের বালিয়া থেকে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন অমিত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তানিশের সঙ্গে অমিত ঘোরাঘুরি করতেন। সকলের সঙ্গে সহজে মিশতে পারত তানিশ। খেলতেও খুব ভালবাসত সে। সোমবার রাতে বৃষ্টি শুরু হওয়ার পরেই অমিত তাঁর পিসেমশাইয়ের স্কুটার নিয়ে তানিশের বাড়িতে যান।

স্থানীয় সূত্রের খবর, সেই সময়ে তানিশের জেঠতুতো দিদি বাইরে ছিলেন। তাঁকে আবাসনের গেট থেকে আনতে যান অমিত। কিছু ক্ষণ পরে তানিশের দিদিকে তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেন তিনি। স্থানীয় সূত্রের খবর, সেই সময়ে তানিশ অমিতের স্কুটারে চেপে ঘুরতে বেরোয়। ঝড়বৃষ্টির কারণে দিদি তাকে যেতে নিষেধ করলেও শোনেনি সে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গোটা আবাসনে স্কুটার নিয়ে ঘুরে তাঁরা বাড়ির দিকে ফিরছিলেন। অমিত স্কুটার চালাচ্ছিলেন। সেই সময়ে বৃষ্টির বেগ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র আওয়াজে পর পর বাজ পড়ছিল। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ একটি ইউ-টার্ন নিতে গিয়ে অমিত স্কুটারের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সোজা পুকুরে গিয়ে পড়েন। পুলিশের অনুমান, বৃষ্টিতে রাস্তা ভিজে থাকার পাশাপাশি স্কুটারের গতি বেশি থাকার জেরেই দুর্ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ঘটনাস্থলের কাছে তখন অমিতের এক আত্মীয় ছিল‌। কালাস সিংহ নামে অষ্টম শ্রেণির সেই ছাত্র ঘটনাটি দেখে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে। মঙ্গলবার কালাস বলে, ‘‘স্কুটার পুকুরে পড়তে দেখে সোজা তানিশের বাড়িতে গিয়ে ওর মাকে বলি।’’ এর পরে স্থানীয় বাসিন্দারা একে একে দুর্ঘটনাস্থলে আসেন। অনেকে পুকুরে উদ্ধারের জন্য নেমেও পড়েন। কিন্তু জলের গভীরতা বেশি থাকায় কেউ কিছু করতে পারেননি। খবর পেয়ে দমকল ঘটনাস্থলে আসে। রাত ১০টা নাগাদ বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা এসে স্কুটার-সহ দু’জনকে পুকুর থেকে তোলেন। তাঁদের এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান তানিশ স্থানীয় একটি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল। এ দিন তানিশের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, তার বাবা-মা বার বার সংজ্ঞা হারাচ্ছেন। অন্য দিকে, অমিতের মা বছর দুয়েক আগে প্রয়াত হয়েছেন। তাঁরা দু’ভাই। ছেলের অকালমৃত্যুর খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে উত্তরপ্রদেশ থেকে রওনা দিয়েছেন অমিতের বাবা রাজবাহাদুর সিংহ।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Accident Behala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy