বাসন্তী হাইওয়েতে মঙ্গলবার রাতে দুর্ঘটনার কবলে পড়া মোটরবাইক। ফাইল চিত্র।
লরির সঙ্গে বেপরোয়া গতির মোটরবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, কখনও আবার তীব্র গতিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা মেরে মৃত্যু ঘটেছে। এ ছাড়া বন্ধুদের নিয়ে মধ্য রাতে মোটরবাইকে চেপে ‘জয়রাইডে’ বেরিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোর ঘটনা তো আছেই। টহলদারিতে বেরিয়ে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় পুলিশকর্মীর মৃত্যুও ঘটেছে এই রাস্তায়। প্রতিটি দুর্ঘটনার পরেই প্রশ্ন ওঠে পুলিশি নজরদারি নিয়ে। নজরদারিতে ফাঁক না-থাকলে দিনের পর দিন ধরে কী ভাবে গাড়ির দৌরাত্ম্য চলে এই পথে? মঙ্গলবার রাতের মোটরবাইক দুর্ঘটনায় তিন যুবকের মৃত্যু ফের সেই প্রশ্নই তুলে ধরছে।
বাসন্তী হাইওয়ের সায়েন্স সিটি থেকে ভোজেরহাট পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার রাস্তা কলকাতা পুলিশ এলাকা। লালবাজার সূত্রের খবর, গত বছরের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের নভেম্বর পর্যন্ত ওই অংশে একাধিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। তার মধ্যে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স (কেএলসি) থানা এলাকার অধীন বাসন্তী হাইওয়ের অংশে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। কলকাতা পুলিশের খাতায় ওই সময়কালের মধ্যে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় আহত ১৫। তথ্য বলছে, মৃতদের মধ্যে কমবয়সি বাইকচালকের সংখ্যা সব থেকে বেশি। ওই সব দুর্ঘটনার তদন্তে এও জানা গিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাইকচালক এবং আরোহী, কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না। নম্বর প্লেটহীন মোটরবাইক নিয়ে ‘রেস’ করার প্রমাণও মিলেছে একাধিক বার।
মঙ্গলবার রাতের বাইক দুর্ঘটনায় তিন যুবকের মৃত্যুর তদন্তেও জানা গিয়েছে, দু’টি মোটরবাইকেই নম্বর প্লেট ছিল না। মোটরবাইক নিয়ে যুবকেরা রেস করছিলেন বলেও দাবি। প্রশ্ন উঠছে, নম্বর প্লেটহীন বেপরোয়া গতির মোটরবাইক দেখে আগেই পুলিশ কেন ব্যবস্থা নিল না? কলকাতার সঙ্গে দক্ষিণ শহরতলির যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা। বার বার দুর্ঘটনা ও মৃত্যু পথের নিরাপত্তা নিয়েই আতঙ্কিত করে তুলছে নিত্যযাত্রীদের। তাঁদেরই মতো প্রশ্ন নিত্যযাত্রী আব্দুল সামাদের, ‘‘পুলিশ বার বার বলে নজরদারি চলে। তা হলে এত অনিয়ম আর দুর্ঘটনা ঘটে কী ভাবে?’’
লালবাজারের কর্তাদের অবশ্য দাবি, দুর্ঘটনা এড়াতে বাসন্তী হাইওয়েতে একাধিক ব্যবস্থা হয়েছে। স্পিডোমিটার, ক্যামেরা এবং রাস্তার বড় অংশে আলো লাগানোও হয়েছে। গাড়ির গতি কমাতে নির্দিষ্ট দূরত্বে হাম্পের ব্যবস্থা হয়েছে। তার পরেও দুর্ঘটনায় নিয়ন্ত্রণ আসছে না কেন? এর উত্তর মিলছে না। কেএলসি থানার এক পুলিশকর্মী বলছেন, ‘‘একে সঙ্কীর্ণ রাস্তা। তার উপরে উভয় দিকে গাড়ি চলে। ফলে গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে গার্ডরেল দেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও উপায় থাকে না।’’
লালবাজারের এক পুলিশকর্তার দাবি, ‘‘নজরদারির পাশাপাশি আইন ভাঙা গাড়িকে চিহ্নিত করে মোবাইলে মেসেজ পাঠানোয় জোর দেওয়া হয়েছে। বৈধ নথি দেখাতে না পারলে গাড়ি বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। বুধবার থেকেই হেলমেটহীন চালক এবং বেপরোয়া গতির গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। দুর্ঘটনা রুখতে আর কী কী ব্যবস্থা করা যায়, তাও দেখা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy