Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Commission for Protection of Child Rights

১ ঘণ্টার চেয়ারপার্সন ‘নিষিদ্ধপল্লি’র প্রিয়া, শিশু-অধিকারের দিশা দেখাতে ভিন্ন উদ্যোগ

প্রিয়ার ফেসবুক লাইভে উঠে এসেছে নিষিদ্ধপল্লিতে শিশুদের যাপনের এক চিত্র। সেই সব শিশুর জীবনের মোড় ঘোরাতে প্রিয়ার পরামর্শ শুনেছে কমিশন

প্রিয়া মণ্ডল।

প্রিয়া মণ্ডল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২০ ১৮:১৪
Share: Save:

অন্ধকার থেকে আলোর পথের দিশা দেখাল নিষিদ্ধপল্লির এক কিশোরী। আজ, বৃহস্পতিবার কয়েক ঘণ্টার জন্য শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব নেয় বছর ১৭-র প্রিয়া মণ্ডল। নিষিদ্ধপল্লির ‘যন্ত্রণাময়’ জীবনের ঘেরাটোপ থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের হাত ধরে ডানা মেলতে শুরু করেছে প্রিয়ার স্বপ্ন। এ দিন চেয়ারপার্সনের পদে আসীন হয়ে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপরে গুরুত্ব দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করে প্রিয়া। তারা যাতে পেট ভরে খেতে পায় এবং পড়াশোনার করতে পারে, সে বিষয়ে আরও উদ্যোগী হওয়া উচিত বলে মনে করছে একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীটি। এ দিন কমিশনের দৈনন্দিন কাজকর্ম খতিয়ে দেখার পাশাপাশি ফাইলে সইও করে প্রিয়া।

আনন্দবাজার ডিজিটালকে প্রিয়া বলেছে, “ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের সুরক্ষা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। শুধু রাস্তাতে নয়, বাড়িতেও সুরক্ষার বিষয়টি দেখতে হবে। সকালের পাশাপাশি রাত ১০টার সময়েও যেন নির্ভয়ে চলাফেরা করে পারে তারা।” প্রিয়ার অনুযোগ, ‘‘প্রোটেকশন অব চাইল্ড রাইটস অ্যাক্ট (পকসো)-এ মামলা হলে, পুলিশের একাংশ শিশুদের কথা বিশ্বাস করতে চায় না। এটা ঠিক নয়। সে দিকেও নজর দিতে হবে প্রশাসনকে।’’

বৃহস্পতিবার যখন প্রিয়া শিশুদের অধিকার নিয়ে তার মতামত জানাচ্ছে, তার কথা মন দিয়ে শুনছিলেন ‘শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগ’-এর স্থায়ী চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী। তিনি প্রিয়াকে উত্তরীয় পরিয়ে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। অনন্যা বলেন, “প্রিয়া তার মতামত আমাদের জানিয়েছে। শিশুদের জন্য সে কী করতে চায়, আলোচনার মাধ্যমে তুলে ধরেছে। শিশুদের অধিকার রক্ষা করতে ওর মতো আমাদের সকলেই এগিয়ে আসতে হবে।”

আরও পড়ুন: জল্পনা রেখে শুভেন্দু বললেন, দল তাড়ায়নি, তিনিও ছাড়েননি

আরও পড়ুন: আমেরিকা-ভারত প্রতিরক্ষা সম্পর্ক ছিন্ন করতে উদ্যত চিন, দাবি নথিতে

প্রসঙ্গত, শিশুদের অধিকার নিয়ে যেমন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে আদি মহাকালী পাঠশালার ছাত্রী প্রিয়া, তেমন ছবি তুলতে ভালবাসে সে। সঙ্গে ক্যারাটে প্রশিক্ষণও নিচ্ছে। ইতিমধ্যে ‘পার্পল বেল্ট’-এর অধিকারী সে। প্রিয়ার কথায়, “শিশুদের জন্য আরও অনেক কাজ বাকি। আমি বেশ কয়েক বছর ধরে ‘হামারি মুসকান’ সেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। ছবি আঁকতে ভালবাসি। আমার ইচ্ছা ওয়াইল্ড লাইফ ফোটোগ্রাফার হওয়ার। শিশুদের খাবারের যেমন প্রয়োজন রয়েছে, তেমনই তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দিতে হবে। কারণ মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক না থাকলে তারা পড়াশোনাও ভাল করে করতে পারবে না।”

প্রিয়ার ফেসবুক লাইভে বৃহস্পতিবার উঠে এসেছে নিষিদ্ধপল্লিতে শিশুদের যাপনের এক চিত্র। সেই সব শিশুর জীবনের মোড় ঘোরাতে প্রিয়ার পরামর্শ শুনেছে কমিশন। শিশু অধিকার রক্ষা নিয়ে কাজ করেন, এমন এক ব্যক্তি বলছিলেন, ‘‘শিশু অধিকার নিয়ে নানা ধরনের কাজকর্ম হয়, তবে এমন উদ্যোগ সচরাচর নজরে আসে না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE