বাইরে বসে ওই বাড়ির বাসিন্দারা। শনিবার সন্ধ্যায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
দশ বছরের এক বালকের তৎপরতায় বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেল গোটা পরিবার।
মা-বাবা ছেলেকে ফ্ল্যাটে একা রেখে বেরিয়েছিলেন তার জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কেনাকাটা করতে। আচমকাই ফ্ল্যাটের বন্ধ একটি ঘরে আগুন লেগে যায়। দরজার তলা দিয়ে কুণ্ডলী পাকিয়ে কালো ধোঁয়া
বেরোতে দেখেই বিপদের গন্ধ পায় দশ বছরের নির্বাণ। কিন্তু ঘাবড়ে যায়নি সে। বরং আগুন যাতে অন্য ঘরে ছড়িয়ে পড়তে না পারে তার ব্যবস্থা করে। ফ্ল্যাটের বাকি দু’টি ঘর বন্ধ করে সে। তার পরে আগুন লাগার খবর মা-বাবাকে ফোন করে জানায়। এর পরে নিজে বাইরে বেরিয়ে পাশের ফ্ল্যাটেই থাকা দাদু-দিদিমাকে খবর দেয়। এর পরেই অন্য বাসিন্দারা আগুনের খবর জানতে পারেন। এক জন বাদে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন সবাই।
শনিবার সন্ধ্যায় ১১ ডোভার রোডের একটি বাড়িতে ওই অগ্নিকাণ্ড ঘটে। পুরনো একটি দোতলা বাড়িতেই ফ্ল্যাটের মতো ব্যবস্থায় বসবাস করে চারটি পরিবার। সবাই লতায়পাতায় আত্মীয়। সেই বাড়িতেই থাকে নির্বাণেরা। বালিগঞ্জ থানার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। দমকলের তিনটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করে। ছাদে আটকে পড়া এক মহিলাকেও উদ্ধার করেন দমকলকর্মীরা। প্রাথমিক তদন্তের পরে দমকলের অনুমান আগুন লেগেছিল শর্ট সার্কিট থেকে। দমকলকর্মীরা জানান, একটি লিক হওয়া গ্যাসের সিলিন্ডারও ওই বাড়িটি থেকে উদ্ধার হয়েছে। ফলত বড় দুর্ঘটনার রসদ এ দিন ওই বাড়িতে মজুত ছিল বলেই মনে করছে দমকল।
নির্বাণের বাবা-মা রথিজিৎ ও মমতা জানান, তাঁরা সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ছেলেকে ফ্ল্যাটে রেখে বেরিয়েছিলেন। ছ’টা নাগাদ নির্বাণের ফোন পান তাঁরা। নির্বাণের দাদু ঋত্বিকবাবু দমকলে খবর দেন। বাড়ির লোকজন জানান, ফ্ল্যাটে আগুন ছড়াতে পারে আঁচ করে নির্বাণ ওই মুহূর্তে বুদ্ধি করে অন্য দু’টি ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়। তার পরে দাদু-দিদাকেও তাঁদের ফ্ল্যাট থেকে বার করে আনে। তবে আগুন না ছড়ালেও কালো ধোঁয়ায় ভরে যায় বাড়িটি।
সেই ধোঁয়ার ভিতরেই আটকে পড়েন বাড়ির অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দা ডলি বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ধোঁয়া এড়িয়ে বাইরে আসতে না পেরে ছাদে উঠে যান। সেখানে প্রায় কুড়ি মিনিট মতো আটকে ছিলেন তিনি। দমকল এসে তাদের মই দিয়ে ডলিকে নামিয়ে আনার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তিনি নামতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে ডলিকে ছাদের সিঁড়ি দিয়েই দমকলকর্মীরা নীচে নামিয়ে আনেন।
শনিবার বাড়িটির সামনে গিয়ে দেখা যায় বাসিন্দারা রাস্তায় বসে রয়েছেন। তাঁরা ও দমকলের কর্মীরা স্বীকার করেছেন, যে দশ বছরের ওই বালক আগে থেকে বিপদ আঁচ করে সবাইকে সময় মতো ঘটনার খবর দেওয়ায় আগুন বড় আকার নিতে পারেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy