দাবি-পথ: থালা-চামচ হাতে মিছিল চাকরিপ্রার্থীদের। বুধবার, ধর্মতলায়। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
চাকরিতে নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথেই থাকবেন তাঁরা। বুধবার সরকারি চাকরিপ্রার্থীদের ১০টি সংগঠনের মহাসম্মেলনে এমনটাই সকলে জানিয়ে দিলেন। তবে, এই সম্মেলন ও মিছিলের জেরে এ দিন ফের যানজটে ভুগল শহর।
চাকরিপ্রার্থীদের মিছিলের কারণে এ দিন কার্যত থমকে যায় কলেজ স্ট্রিট, শিয়ালদহ, ধর্মতলা এবং হাওড়া সেতু দিয়ে মধ্য কলকাতায় যাতায়াতের একাধিক রাস্তা। যদিও লালবাজারের তরফে দাবি করা হয়েছে, মিছিলের জেরে কিছুটা যানজট হলেও দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের এক কর্তার মন্তব্য, ‘‘যানজট তেমন কিছু হয়নি। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।’’
এ দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ সরকারি চাকরিপ্রার্থীদের ১০টি সংগঠনের মিছিল শুরু হয়। একটি মিছিল কলেজ স্কোয়ার থেকে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ধরে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের দিকে যায়। সেখানেই ছিল সভাস্থল। আর একটি মিছিল আসে হাওড়া সেতু থেকে স্ট্র্যান্ড রোড হয়ে। অন্য একটি মিছিল শিয়ালদহ স্টেশনের দিক থেকে এসে এস এন ব্যানার্জি রোড ধরে সভাস্থলের দিকে যায়। সেই সভাস্থল থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে দ্রুত নিয়োগের দাবি ওঠে।
চাকরিপ্রার্থীদের কেউ সেজেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কেউ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। রাজা রামমোহন রায় এবং শ্রীরামকৃষ্ণ সেজেও মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন অনেকে। মমতা সেজে আসা, ২০১৪ সালের টেট পাশ এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তা মনে করিয়ে দিতে চাই।’’ হাওড়া স্টেশন থেকে হেঁটে সভাস্থলে পৌঁছে রাজ্য সরকারের গ্রুপ-ডি চাকরিপ্রার্থী, দৃষ্টিহীন বৃহস্পতি মাহাতো বলেন, ‘‘করুণা নয়, হকের চাকরি চাইছি।’’ তিন দিন আগে বাবাকে হারানো চাকরিপ্রার্থী শান্তনু মণ্ডল বাবার ছবি নিয়ে মিছিলে যোগ দেন। নার্সিংয়ের চাকরিপ্রার্থী অদিতি মুখোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘‘২৪০০ জন যোগ্য প্রার্থীর নিয়োগ এখনও বাকি। তা সম্পূর্ণ না করে নতুন করে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হল কেন?’’
এ দিকে, মিছিলের জেরে এ দিন বেলা ১২টা থেকেই কলেজ স্ট্রিটে যান চলাচল বন্ধ করে দিতে হয়। গাড়ির চাপ বাড়ে মহাত্মা গান্ধী রোড এবং আমহার্স্ট স্ট্রিটের সংযোগস্থলে। বৌবাজার থেকে বি বি গাঙ্গুলি রোডেও গাড়ির লাইন পড়ে যায়। এক সময়ে মিছিল বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটে পৌঁছলে সেই রাস্তাও বন্ধ করতে হয়। শিয়ালদহ স্টেশনের দিক থেকে মিছিল এস এন ব্যানার্জি রোড ধরলে সেখানেও গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ডোরিনা ক্রসিংও।
সে সময়ে রাস্তায় ঘুরে দেখা যায়, শেক্সপিয়র সরণি, এ জে সি বসু রোডের একাংশ এবং শরৎ বসু রোডেও গাড়ির গতি থমকে গিয়েছে। ট্যাক্সি থেকে নেমে হাঁটতে থাকা এক যুবক বললেন, ‘‘এই যানজট তেমন গায়ে লাগছে না। কারণ, চাকরির দাবিতে হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলি যখন কথায় কথায় মিছিল ডাকে, তখন বিরক্ত লাগে।’’
গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল হাওড়া সেতু থেকে স্ট্র্যান্ড রোড যাওয়ার রাস্তাতেও। এর মধ্যে একাধিক স্কুলের ছুটি হওয়ায় সমস্যা বাড়ে। পুলিশের এক কর্তা যদিও জানান, বাড়তি ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী মোতায়েন করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy