সোমবার এই নিয়োগের জন্য আবেদনের (ফর্ম ফিলাপ) শেষ তারিখ। প্রতীকী ছবি।
কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল এবং মহিলা কনস্টেবল নিয়োগে হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাই কোর্ট। পরীক্ষা নেওয়া হবে শুধু বাংলা এবং নেপালিতেই, ইংরেজি ভাষায় প্রশ্নপত্র করার দাবি মানল না উচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, আঞ্চলিক ভাষা হিসাবে বাংলা এবং নেপালিতে প্রশ্ন হলে পরীক্ষায় কোনও প্রভাব পড়বে না।
চলতি বছরের ২৭ মে কলকাতা পুলিশের ১,১৪০ জন কনস্টেবল এবং ২৫৬ মহিলা কনস্টেবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পুলিশ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড। নিয়োগ-বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বাংলা এবং নেপালি, শুধুমাত্র এই দু’টি ভাষাতেই প্রশ্নপত্র হবে। সোমবার এই নিয়োগের জন্য আবেদনের (ফর্ম ফিলাপ) শেষ তারিখ। তবে এর মধ্যেই ইংরেজিকে বাদ দিয়ে শুধু এই দু’টি ভাষায় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করে ‘গার্ডেনরিচ পিস মুভমেন্ট’ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। কলকাতা হাই কোর্টের কাছে এই সংগঠন আবেদন করে, বহু পরীক্ষার্থী ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করেন। ইংরেজি বাদ দিলে এই পরীক্ষার্থীদের অসুবিধা হবে বলেও মমলাকারীরা দাবি করেন।
মামলকারী আইনজীবীর সওয়াল ছিল, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ওয়েবসাইটে বাংলা এবং ইংরেজি উভয় ভাষাতেই ‘এগিয়ে বাংলা’-র উল্লেখ রয়েছে। সরকার যেখানে এই দু’টি ভাষা ব্যবহার করছে, সেখানে পুলিশের নিয়োগের মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি চাকরিতে কেন প্রশ্নপত্রে ইংরেজি ভাষাকে বাদ দেওয়া হল? তিনি এ-ও বলেন যে, ২০১৯ সালে পুলিশের যে নিয়োগ হয়েছিল সেখানে ইংরেজি-সহ তিনটি ভাষা ছিল। ২০১৬ সালের নিয়োগের সময় পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল চারটি ভাষায়।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই নিয়োগ-বিজ্ঞপ্তিতে পরিষ্কার ভাবে বলা আছে, পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দা ছাড়া বাকি পরীক্ষার্থীদের বাংলা লিখতে, পড়তে এবং বলতে জানা আবশ্যক। তাই এই ক্ষেত্রে ইংরেজিতে প্রশ্নপত্র করা অযৌক্তিক।’’
তিনি আরও জানান, একটি সংস্থা নিয়োগের ক্ষেত্রে নিজেদের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছে। সেখানে এই মামলা কতটা গ্রহণযোগ্য তা-ও বিচার্য বিষয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারি ভাষা আইন ১৯৬১ অনুযায়ী, রাজ্যের ভাষা হিসেবে বাংলা এবং নেপালি (দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং-এ বসবাসকারী)-কে মান্যতা দেওয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু এবং গুজরাত স্থানীয় ভাষায় অনেক সরকারি চাকরির পরীক্ষা নেয়। এ রাজ্যের ক্ষেত্রেও পদ্ধতি মেনেই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বার করা হয়েছে। তা ছাড়া মামলাকারীর সঙ্গে এই নিয়োগের কোনও সম্পর্ক নেই এবং এই বিষয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলেও উল্লেখ করেন রাজ্যের এজি। এর পরই দু’পক্ষের সওয়াল শুনে বিচারপতি শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলাটি খারিজ করে দেয়। বাতিল হয় ইংরেজিতে প্রশ্ন করার আবেদন।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy