সাত মাসের শিশুকন্যাকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় অপরাধীকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে আদালত। ওই মামলার তদন্ত এবং বিচার পর্ব শেষ হয়েছে আড়াই মাসের মধ্যে। যা কলকাতা পুলিশের সাফল্য বলেই মনে করেন নগরপাল মনোজ বর্মা। ওই মামলার মতো অন্যান্য মামলাতেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আদালতে চার্জশিট জমা দিতে থানাগুলিকে নির্দেশ দিলেন তিনি। সেই কাজ যাতে ঠিক মতো হয়, তা দেখতে উপ-নগরপাল এবং থানার ওসিদের নির্দেশ দিয়েছেন নগরপাল।
এর পাশাপাশি, পকসো মামলার তদন্ত যাতে ঠিক মতো হয়, তা-ও দেখতে বলা হয়েছে যুগ্ম নগরপালদের। পকসো মামলার তদন্তে ঠিক মতো ‘রিভিউ’ যাতে হয় এবং অভিযুক্ত যাতে দ্রুত ধরা পড়ে, তা দেখার জন্য যুগ্ম নগরপাল, উপ-নগরপাল এবং সহকারী নগরপালদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শনিবার কলকাতা পুলিশের মাসিক অপরাধ দমন বৈঠকে এই সমস্ত নির্দেশ দিয়েছেন নগরপাল। এক পুলিশকর্তা জানান, এ দিনের বৈঠকে নগরপাল জানান, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে শহরে। তাঁর নির্দেশ, সেই সব ঘটনার তদন্তে নেমে দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে হবে। এবং চার্জশিট যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেওয়া হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে বাহিনীকে।
সূত্রের খবর, এলাকার দুষ্কৃতী ও গুন্ডাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার জন্য থানার ওসিদের নির্দেশ দিয়েছেন নগরপাল। এলাকার পরিচিত দুষ্কৃতী এবং গুন্ডাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। যাতে তারা ফের অপরাধ ঘটাতে না পারে। চণ্ডীতলার আইসি-র গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার কথা তুলে ধরে নগরপাল বলেন, এমন ঘটনা যাতে কলকাতা পুলিশে না ঘটে, তা দেখতে হবে।
সামনের বছর বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে মাথায় রেখে বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে থানার ওসিদের জোর দিতে বলেছেন নগরপাল। উল্লেখ্য, কসবায় এক পুরপ্রতিনিধিকে খুনের চেষ্টার ঘটনার পরে দেখা যায়, বিহার থেকে অস্ত্র নিয়ে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। আবার পর পর তিনটি ঘটনায় কলকাতা পুলিশের এসটিএফ শহরে আসা ভিন্ রাজ্যের দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করে প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
লালবাজার জানিয়েছে, এ দিনের বৈঠকে বেআইনি নির্মাণ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন নগরপাল। কয়েক দিন আগে বেনিয়াপুকুর এলাকায় একটি বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কলকাতা হাই কোর্ট বিরূপ মন্তব্য করেছিল। তাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। এ দিনের বৈঠকে পুলিশকে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করার পাশাপাশি এ বিষয়ে কঠোর হতে বলেছেন নগরপাল। উল্লেখ্য, এর আগেও নগরপাল বেআইনি নির্মাণ বন্ধে কঠোর হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন। এমনকি, শহরে পর পর বেআইনি বাড়ি হেলে পড়া নিয়েও বাহিনীকে সতর্ক করেছেন নগরপাল। অভিযোগ, তার পরেও শহরে পুলিশের একাংশ তা বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়নি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)