—ফাইল চিত্র।
নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক-নিগ্রহের যে-ঘটনাকে ঘিরে সারা রাজ্যের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল, তাতে অভিযুক্তেরা জামিন পায় কী ভাবে, সেই প্রশ্ন জোরদার হচ্ছিল। এই অবস্থায় ঘটনার এক মাসের মাথায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করা হল। সোমবার শিয়ালদহ আদালতের বিচারক এই ধারা যুক্ত করার অনুমতি দেন পুলিশকে। খুনের চেষ্টার মতো গুরুতর ধারা যুক্ত হওয়ায় জামিনে বাইরে থাকা অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পুলিশের কোনও বাধা থাকল না বলে জানাচ্ছে পুলিশের একটি অংশ।
এনআরএসে দুই জুনিয়র ডাক্তারকে মারধর এবং ভাঙচুরের ঘটনায় ধৃত পাঁচ অভিযুক্ত ১ জুলাই শিয়ালদহ আদালত থেকেই জামিন পেয়েছিল। যদিও আন্দোলনকারী ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনায় ওই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযুক্তেরা জামিন পাওয়ার পরেই জুনিয়র চিকিৎসকেরা পুলিশের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তেলেন। তার পরেই লালবাজারের তরফে তদন্তকারীদের কঠোর হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
ট্যাংরার বিবিবাগান লেনের বাসিন্দা মহম্মদ শাহিদ (৮০) গত ১০ জুন রাতে এনআরএসে মারা যান। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, চিকিৎসকদের গাফিলতিতে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে প্রথমে বচসা এবং পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন রোগীর আত্মীয়স্বজন ও পড়শিরা। ক্ষিপ্ত জনতার ছোড়া ইটের ঘায়ে গুরুতর আহত হন জুনিয়র চিকিৎসক পরিবহ মুখোপাধ্যায়। বিক্ষোভকারীদের হাতে প্রহৃত হন অন্য কয়েক জন চিকিৎসক। পুলিশ ওই ঘটনায় মহম্মদ শাহনওয়াজ, মহম্মদ ইয়াকুব, শেখ আনোয়ার, আদিল হারুন এবং মহম্মদ বাদলকে গ্রেফতার করে। বাদলের বাড়ি এন্টালির কনভেন্ট লেনে। বাকিরা বিবিবাগান লেনের বাসিন্দা।
আদালত সূত্রের খবর, পুলিশ অভিযুক্তদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করলেও ১ জুলাই আদালতে নতুন কোনও তথ্য পেশ করতে পারেনি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নতুন প্রমাণ দাখিল করতে না-পারায় ধৃতদের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক।
শিয়ালদহ আদালতের সরকারি আইনজীবী অরূপ চক্রবর্তী জানান, ধৃতেরা জামিন পেলেও তদন্ত চলছিল। সেই তদন্তে হাসপাতালের চিকিৎসক-সহ বেশ কয়েক জনের জবানবন্দি নথিভুক্ত করা হয়। চিকিৎসকদের খুন করার জন্য অভিযুক্তেরা সে-দিন হাসপাতালে এসেছিল বলে অভিযোগ করেন সরকারি আইনজীবী। তার পরেই বিচারক মূল মামলার সঙ্গে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারা বা খুনের চেষ্টার ধারা যুক্ত করেন। আগে শুধু হাঙ্গামা বাধানো এবং মারধরের মতো ধারায় মামলা রুজু হয়েছিল।
এত দিন পরে খুনের চেষ্টার মতো ধারা যুক্ত করা হল কেন? প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান ছাড়াও ঘটনাস্থল থেকে সে-দিন লাঠি, বাঁশ, ইটপাথরের টুকরো উদ্ধার করা হয়েছিল। সেই সঙ্গে সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও অভিযুক্তদের মারমুখী অভিব্যক্তি দেখা গিয়েছে। যা থেকে পুলিশের দাবি, অভিযুক্তেরা খুন করার জন্যই দল বেঁধে হাসপাতালে ঢুকেছিল। তদন্তকারীরা জানান, ওই ধারা যুক্ত হওয়ায় জামিন বাতিলের আবেদন জানানোর পাশাপাশি অভিযুক্তদের ফের গ্রেফতার করা হবে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy