Advertisement
E-Paper

তিন বছরেও শহরে কার্যকর হল না পুরসভার প্রস্তাবিত বিজ্ঞাপন-নীতি

পুরসভার বিজ্ঞাপন দফতরের এক আধিকারিক সম্প্রতি বলেন, ‘‘বিজ্ঞাপনের খসড়া নীতি সম্পর্কে নবান্নের একাধিক জিজ্ঞাসা রয়েছে। আমরা সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর শীঘ্রই লিখে পাঠিয়ে দেব।’’

কলকাতা পুরসভা।

কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।

মেহবুব কাদের চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:১৪
Share
Save

ঠিক তিন বছর পার হল। তবু বিজ্ঞাপন-নীতি কার্যকর হল না।

শহরের পথে বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিজ্ঞাপন-নীতি ঘোষণা হয়েছিল ২০২২ সালের মার্চে। পুরসভা সূত্রের খবর, বিজ্ঞাপন-নীতির খসড়া কলকাতা পুরসভার তরফে নবান্নে পাঠানো হয়েছে। নবান্নের তরফে পুরসভার কাছ থেকে ওই নীতি সম্পর্কে কিছু জানতে চাওয়া হয়েছে। পুরসভার বিজ্ঞাপন দফতরের এক আধিকারিক সম্প্রতি বলেন, ‘‘বিজ্ঞাপনের খসড়া নীতি সম্পর্কে নবান্নের একাধিক জিজ্ঞাসা রয়েছে। আমরা সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর শীঘ্রই লিখে পাঠিয়ে দেব।’’

বাস্তবে বিজ্ঞাপন-নীতি কবে থেকে কার্যকর হবে, সে বিষয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিমও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি। সম্প্রতি এই প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘‘পুরসভার তরফে বিজ্ঞাপন-নীতির খসড়া প্রস্তুত করে ইতিমধ্যেই নবান্নে পাঠানো হয়েছে। নবান্ন সম্মতি দিলে তা কার্যকর হবে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের যত্রতত্র হোর্ডিং, ব্যানার দৃশ্যদূষণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শহরকে হোর্ডিংয়ের গ্রাস থেকে মুক্ত করে রাস্তাঘাটের সৌন্দর্য ফেরাতে বিজ্ঞাপন-নীতির প্রস্তাব আসে বছর চারেক আগে। পুরসভা সূত্রের খবর, বিজ্ঞাপন-নীতি বাস্তবায়িত হলে শহরের কোনও উদ্যানে হোর্ডিং, বিজ্ঞাপন থাকবে না। শহরের স্থাপত্য, ঐতিহ্যবাহী ভবনের সামনের দিক কোনও ভাবেই হোর্ডিং, বিজ্ঞাপনে ঢাকা চলবে না। হোর্ডিংয়ের পরিমাপও ঠিক করা হবে। দু’টি হোর্ডিংয়ের মাঝে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখা হবে। বিপজ্জনক বা পুরনো বাড়িতে কোনও ভাবেই হোর্ডিং বসানো চলবে না। পুরসভার বিজ্ঞাপন দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘নয়া বিজ্ঞাপন-নীতিতে একাধিক নতুন নিয়ম চালু হবে। সে ক্ষেত্রে শহরের সৌন্দর্যও ফিরবে।’’

সৌন্দর্যায়নকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শহরের যত্রতত্র হোর্ডিং, ফ্লেক্স, বিজ্ঞাপনের রমরমা অব্যাহত আছেই। বর্তমান পুর বোর্ডের প্রথম বর্ষপূর্তি ছিল ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর। সে দিন মেয়র ফিরহাদ হাকিম স্বীকার করেছিলেন, ‘‘হোর্ডিং-নীতি এখনও আমরা বলবৎ করতে পারিনি। এটা আমাদের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন। এখনও মূল রাস্তায় বড় বড় হোর্ডিং রয়েছে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, কোভিডের আগে বিজ্ঞাপন বাবদ পুরসভা প্রতি বছর গড়ে ২৫-৩০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করত। কোভিডের সময়ে কর আদায় তলানিতে ঠেকেছিল। যদিও গত অর্থবর্ষে বিজ্ঞাপন বাবদ আদায়ের পরিমাণ বেড়েছে বলে জানাচ্ছেন পুর আধিকারিকেরা।

২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষে বিজ্ঞাপন বাবদ আদায় হয়েছিল ২৪ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা। ২০২৪-’২৫ অর্থবর্ষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকায়। তা সত্ত্বেও চিন্তা বাড়িয়েছে শহরের বিভিন্ন রাস্তায় বেআইনি হোর্ডিংয়ের রমরমা। উত্তরের শ্যামবাজার, বিবেকানন্দ রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ থেকে দক্ষিণের পার্ক স্ট্রিট, ক্যামাক স্ট্রিট, বালিগঞ্জ সার্কুলার রোড, পার্ক সার্কাস, ঢাকুরিয়া, গড়িয়াহাটে বেআইনি হোর্ডিং আছে। বিজ্ঞাপন দফতরের এক আধিকারিকের যুক্তি, ‘‘বেআইনি হোর্ডিং সরানো চিরন্তন প্রক্রিয়া। প্রতিনিয়ত আমাদের দফতর বেআইনি হোর্ডিং সরানোর কাজ করছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kolkata Municpal Corporation KMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}