মেদিনীপুরে ছাত্র ধর্মঘটে শামিল হওয়া ছাত্রীদের থানায় তুলে এনে অত্যাচার করার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। ওই মামলায় এ বার আইপিএস আধিকারিক মুরলী ধরকে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার হাই কোর্টে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের নির্দেশ, সংশ্লিষ্ট থানার সিসিটিভি এবং ভিডিয়ো ফুটেজ খতিয়ে দেখে আদালতে রিপোর্ট দিতে হবে ওই আধিকারিককে। আগামী ২৬ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
মেদিনীপুরের ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ চেয়ে হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন মেদিনীপুর কলেজের কয়েক জন পড়ুয়া। মামলাকারীদের আইনজীবীর আবেদন, তাঁদের কাছে প্রমাণ হিসাবে সমস্ত ভিডিয়ো ফুটেজ রয়েছে। এক পুলিশকর্মী হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন বলে অভিযোগ। তাই অবিলম্বে এফআইআর দায়ের করে দ্রুত পদক্ষেপ করা হোক, এই মর্মে আর্জি জানিয়েছিলেন মামলাকারীরা। সব শুনে বিচারপতি ঘোষের পর্যবেক্ষণ, প্রথমে বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। ওসির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা যেতেই পারে। কিন্তু প্রথমে অনুসন্ধান না করে এফআইআর দায়ের হলে রাজ্যের সব ওসি সমস্যায় পড়বেন। এর পরেই মুরলীকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়। রিপোর্টের ভিত্তিতে এফআইআইরের বিষয়টি ভেবে দেখা হবে বলে জানিয়েছে উচ্চ আদালত।
আরও পড়ুন:
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ি ছাত্রকে পিষে দিয়েছে— এই অভিযোগ তুলে গত সোমবার রাজ্যের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল ছাত্র সংগঠন এসএফআই। অভিযোগ, এই ধর্মঘটের সমর্থনে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে পৌঁছতেই কয়েক জন প্রাক্তন পড়ুয়াকে জোরজবরদস্তি থানায় তুলে নিয়ে যায় মেদিনীপুর মহিলা থানার পুলিশ। এই পড়ুয়ারা এসইউসিআই-এর ছাত্র সংগঠন ডিএসও-র সদস্য। অভিযোগ, থানার ওসি ওই পড়ুয়াদের মোমবাতি দিয়ে ছেঁকা দেন। বেল্ট দিয়ে মারার পাশাপাশি ‘মেরে পুঁতে দেওয়ার’ও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। গত বুধবার সাংবাদিক সম্মেলন করে পড়ুয়ারা এই অভিযোগ তোলার পর দিনই হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মামলাকারী সুচরিতা দাস এবং সুস্মিতা সোরেন। অভিযুক্ত পুলিশদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আর্জি জানানো হয়। মামলা দায়ের করার অনুমতি দেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
প্রসঙ্গত, এর আগে কাকদ্বীপে জোড়া খুনের ঘটনার তদন্তভারও আইপিএস দময়ন্তী সেনের বদলে মুরলীকেই দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। ২০১৮ সালের মে মাসে কাকদ্বীপে সিপিএম কর্মী দেবপ্রসাদ দাস এবং তাঁর স্ত্রী উষারানি দাসের অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়। অভিযোগ, ঘরে আগুন লাগিয়ে ওই দম্পতিকে পুড়িয়ে খুন করা হয়। সেই ঘটনায় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চ। আইপিএস অফিসার দময়ন্তী সেনের নেতৃত্বে চার জনের দল ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করে। সম্প্রতি অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দময়ন্তী তদন্ত থেকে অব্যাহতি নিলে তদন্তভার যায় মুরলীর হাতে। এ বার হাই কোর্টের নির্দেশে দ্বিতীয় মামলার তদন্তভার পেলেন মুরলী।