নিখোঁজ দেবদাস মণ্ডলের বাবা। সন্দেশখালির ভাঙিপাড়ায়। সোমবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় গান গেয়েছেন এবং গাইছেন বলে জানালেন শনিবারের হাঙ্গামায় নিখোঁজ ভাঙিপাড়ার দেবদাস মণ্ডলের দাদা নিমাই মণ্ডল। হাতে তাঁর লোকশিল্পীর সরকারি পরিচয়পত্র। দেবদাসের সেই নথি বাক্সবন্দি এবং সেই বাক্সের চাবিও দেবদাসের কাছে। তাঁরা কী ভাবে রাজ্য সরকারের প্রকল্পের প্রচার করেছেন, তার বর্ণনা দিয়ে ভাইকে মৃত বা জীবিত ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন নিমাই।
হাঙ্গামার ঘটনা নিয়ে ন্যাজাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই লোকশিল্পী। নিমাই জানান, নিরাপত্তার বিষয়ে বিজেপির দুই নেতার সঙ্গে কথা হয়েছে, কিন্তু তেমন কোনও আশ্বাস মেলেনি। সোমবার দুপুরে বাড়িতে দুই পুলিশ অফিসারকে সামনে পেয়ে ছেলেকে ফেরানোর আর্জি জানিয়ে কার্যত হামলার ঘটনার পুনর্নির্মাণ করলেন দেবদাসের বৃদ্ধ বাবা বাসুদেব মণ্ডল। জানালেন, শনিবার বিকেলে ঘটনার সময় কার্যত পুলিশকর্মীদের পায়ে পড়েছিলেন তিনি।
সন্দেশখালির ঘটনায় সোমবার তিনটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। নাম রয়েছে তৃণমূলের সন্দেশখালি ব্লকের সভাপতি শেখ শাজাহান, অঞ্চল সভাপতি কাদের মোল্লা-সহ বেশ কয়েক জনের। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীরা এ দিন ঘটনাস্থলের ভিডিয়ো তোলেন। অনেক ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে থাকে পুলিশ। তবে সন্দেশখালির ঘটনায় তেমন কিছু হতে দেখেননি স্থানীয় বাসিন্দারা।
দেবদাসের বাড়ির কয়েক পা দূরেই নিহত প্রদীপ মণ্ডলের বাড়ি। দুই ছেলেকে পাশে নিয়ে প্রদীপ-হত্যার সিবিআই তদন্ত দাবি করলেন তাঁর স্ত্রী পদ্মা মণ্ডল। অভিযোগ, শনিবার তো বটেই, সিপিএম জমানাতেও বামেদের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা (বর্তমানে তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা) শাজাহানের বাহিনী প্রদীপের উপরে হামলা করেছিল। এ দিন সেই হামলার কথা বলতে গিয়ে রাজ্য পুলিশের উপরে ক্ষোভ উগরে দেন প্রদীপের স্ত্রী পদ্মা। ‘‘প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সিবিআই তদন্ত দাবি করছি। আর আমার স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসির চাই,’’ দাবি পদ্মার। রাত সাড়ে ৩টেয় প্রদীপের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে বলে জানাল প্রদীপের বড় ছেলে প্রীতম। কেন সিবিআই তদন্তের দাবি? সিআইডি-র উপরে আস্থা নেই কেন, সেই প্রসঙ্গে নবম শ্রেণিতে পড়া প্রীতম বলল, ‘‘রাজ্যের পুলিশই তো দাঁড়িয়ে থেকে বাবাকে মারল। তারা কী করে তদন্ত করবে?’’ প্রদীপের মৃত্যুর ঘটনায় শাজাহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন পদ্মা। আর শাজাহান বলছেন, ‘‘মামলা যে-কেউ করতে পারেন। রাজনৈতিক স্বার্থে মামলা করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ছিল। তারাই সাক্ষ্য দেবে।’’
শনিবারের সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন সুকান্ত মণ্ডলও। তাঁর বাড়িতে এ দিন দুপুরে কেউ ছিলেন না। নিহতের মাকে অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়েছেন তাঁর ভাই। একমাত্র ছেলেই ছিল মায়ের ‘ভরসা’। ছেলের মৃত্যুর পরে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন তিনি।
রাজবাড়ি এলাকার তৃণমূলকর্মী কায়ুম মোল্লাও প্রাণ হারিয়েছেন শনিবারের গোলমালে। রবিবার রাতে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। কায়ুমের বাবা লিয়াকত আলি মোল্লার দাবি, তাঁর ছেলের অকালমৃত্যুর জন্য যারা প্রত্যক্ষ ভাবে দায়ী, তাদের কঠোর শাস্তির পাশাপাশি যারা সংঘর্ষে ইন্ধন জুগিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy