মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। ফাইল চিত্র।
পদে থাকাকালীন রাজ্য সরকারের সঙ্গে ঠুকঠাক বিতর্ক লেগেই ছিল। বিদায়বেলায় যেন বোমা ফাটালেন কেশরীনাথ ত্রিপাঠী।
শনিবার, সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেশরীনাথ বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোষণের রাজনীতিতেই এ রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশ নষ্ট হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও উন্নতি প্রয়োজন।’’ কেশরীনাথের এই মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক চরমে উঠেছে। এ বিষয়ে নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে তৃণমূল।
কেশরীনাথের জায়গায় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হয়েছেন জগদীপ ধনকর। আগামী ৩০ জুলাই শপথগ্রহণ করবেন তিনি। কিন্তু, তার আগে রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের টানাপড়েনের সুরটা যেন সপ্তমেই বেঁধে দিলেন কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। পিটিআইকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে কেশরীনাথ বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে। তাঁর সেই পরিকল্পনা বাস্তবে প্রয়োগ করার ক্ষমতাও আছে। তবে তিনি কখনও কখনও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। এই আবেগ তাঁকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।’’ এর পরেই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে নিশানা করে বিস্ফোরণটা ঘটিয়েছেন তিনি। কেশরীনাথ বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোষণের নীতিই এ রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। আামার মনে হয়, বৈষম্য ছাড়াই প্রত্যেক নাগরিককেই তাঁর সমান ভাবে দেখা উচিত।’’
আরও পড়ুন: ‘আর কিছু দাবি করবেন না, আমি দিয়েছি, আপনারা এ বার দিন’
তবে কি রাজ্যে কোনও বৈষম্য রয়েছে? সাক্ষাৎকারে এই প্রশ্নের জবাবেও জোরালো বিতর্ক তৈরি করেছেন কেশরীনাথ। তিনি বলেছেন, ‘‘আপাত ভাবে বৈষম্য রয়েছে। তাঁর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) মন্তব্যেই সেই বৈষম্য চোখে পড়ে।’’ রাজ্যে লোকসভা ভোটের আগে থেকেই বিজেপির বিরুদ্ধে ধর্মীয় মেরুকরণের অভিযোগ তুলছে তৃণমূল শিবির। পাল্টা, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতির অভিযোগ তুলছে বিজেপিও। শনিবার, সেই সুরই যেন শোনা গেল বিদায়ী রাজ্যপালের গলায়।
কেশরীনাথের এমন মন্তব্য নিয়ে তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় কেশরীনাথকে পাল্টা নিশানা করে বলেন, ‘‘এর আগে তিনি কখনও বলেননি, পশ্চিমবঙ্গে তোষণের রাজনীতি চলছে। পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। তা হলে এ ধরনের কথা ঠিক যাওয়ার আগে কী কারণে বললেন উনি? সন্দেহ রয়েছে। আসলে বিজেপির খাতায় পয়েন্ট বাড়াচ্ছেন কেশরীনাথ। রাজভবন যে বিজেপির পার্টি অফিসে পরিণত হয়েছে, এই বক্তব্যেই সেটা পরিষ্কার হয়ে গেল।’’
আরও পড়ুন: রাতের আঁধারে ছাত্র ভর্তি!
রাজ্যে নতুন রাজ্যপালের নাম ঘোষণার পর তা জেনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্র যে চিরাচরিত সৌজন্য রক্ষা করে রাজ্য সরকারকে আগে নতুন রাজ্যপালের নাম জানায়নি, তা নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী। সেই ক্ষোভের আঁচ পৌঁছয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছেও। এ সবের মাঝেই নতুন করে তৈরি হল বিতর্ক।
কেশরীনাথের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত নতুন নয়। ২০১৪ সালের ২৪ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসাবে নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি। তার পর থেকে গত পাঁচ বছরে একাধিক বার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন তিনি। সম্প্রতি, লোকসভা ভোটের ফল বেরনোর পর, সন্দেশখালি হত্যাকাণ্ড-সহ একাধিক ঘটনায় রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খোলেন কেশরীনাথ। শেষলগ্নেও সেই সংঘাতের আবহ বজায় রইল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy