২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সব রাজনৈতিক দল। বাংলার তৃণমূলের সঙ্গে আদৌ কংগ্রেসের কোনও জোট হবে কি না, সেই জল্পনাও চলছে জাতীয় রাজনীতিতে। ঠিক সেই সময়েই পাহাড়ের সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব বিনয় তামাংকে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সোমবার প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে এক বিবৃতি প্রকাশ করে সে কথা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
প্রদেশ কংগ্রেসর সাধারণ সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তী ও সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নিলয় প্রামাণিক যৌথ ভাবে বিবৃতি জারি করে বিনয়কে দায়িত্ব দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। গত ২৫ নভেম্বর কালিম্পঙের টাউন হলে কংগ্রেসের কর্মসূচিতে কংগ্রেসে যোগ দেন বিনয়। তারপর থেকেই বিনয়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা চলছিল পাহাড়ের রাজনীতিতে। সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে পাহাড়ের সংগঠনে বিনয়কে ইন-চার্জ করেছেন অধীর। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে দার্জিলিং বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিজেপি প্রার্থী নীরজ তামাং জিম্বার কাছে পরাজিত হন বিনয়।
তবে বছরখানেক আগেই তৃণমূলের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছিল। তার পর থেকে তাঁকে নিয়ে নানাবিধ গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল পাহাড়ে। পঞ্চায়েত ভোটের সময়েও কখনও হামরো পার্টি, কখনও বিজেপি, আবার কখনও বিমল গুরুংয়ের দল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কাছাকাছি আসতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবে নভেম্বর মাসে সকলকে চমকে দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কংগ্রেসে যোগ দেন বিনয়।
আরও পড়ুন:
হিসাব মতো রাজনৈতিক জীবনের চতুর্থ ইনিংস চলছে বিনয়ের। এক সময় পাহাড়ে সুবাস ঘিসিংয়ের হাত ধরে জিএনএলএফ এবং পরে বিমলের সঙ্গে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা তৈরি করেছিলেন এই নেতা। পরে বছরখানেকের জন্য তৃণমূলেও নাম লিখিয়েছিলেন। কিন্তু বিনয়ের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, পাহাড়ের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভাল ছিল না। শেষে হামরো পার্টির প্রধান অজয় এডওয়ার্ড, বিমলের সঙ্গে নতুন করে নানা কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে দলের থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে ফেলেন বিনয়। তার পর গত বছর ডিসেম্বর মাসে দার্জিলিং পুরসভার অনাস্থা ভোটের পরে তৃণমূল ছাড়েন। এখন দেখার পাহাড়ে কংগ্রেসের সংগঠনকে কতটা অক্সিজেন দিতে পারেন বিনয়।
তবে তাঁর দায়িত্ব পাওয়া প্রসঙ্গে তৃণমূলের তরফে শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, ‘‘পাহাড়ের রাজনীতিতে এমন কোনও রাজনৈতিক দল নেই যার সঙ্গে বিনয় কোনও না কোনও দিন যুক্ত ছিল না। এখন কংগ্রেসের গিয়েছে, তাতে কংগ্রেস বা বিনয় কেউই খুব বেশি লাভ করতে পারবে বলে মনে হয় না।’’
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর থেকে চার বার দার্জিলিং লোকসভা জিতেছে কংগ্রেস। শেষবার ২০০৪ সালে দাওয়া নরবুলা কংগ্রেসের প্রতীকে সাংসদ হয়েছিলেন।